মেয়েরা চাইলে ইসলাম মতো চলে, পর্দা মেইনটেইন করেও সব করতে পারে।
মেয়েরা চাইলে ইসলাম মতো চলে, পর্দা মেইনটেইন করেও সব করতে পারে।
আমার জীবনের শুরুর দিকটি আজ তুলে ধরেছি।অনেকেই উপকৃত হতে পারেন।
আমি ১৯৯৩ সনেই সহীশুদ্ধ কোরআন পড়া শিখেছি পরে ক্বারীয়ানা পাস ও করেছি।
পর্দাও আমি ক্লাস নাইন থেকেই করি,তখন বোরখার এমন প্রচলন ছিল না,মেয়োরা বোরখা পড়তনা বললেই হয়।আমার মায়ের মত খাঁটি পর্দানশীল কিছু মহিলা বোরখা পড়ত শুধু।
আর আমি মাথায় মিলিনারী পরতাম আর বড় বড় উরনা পড়তাম।
তখন থেকেই আমি টিভি দেখতাম না।সম্পুর্ন ইসলাম মত চলার এই চেষ্টা করতাম।
কলেজ জীবনের প্রথমদিন থেকে বোরখা পড়া শুরু করলাম।আর সবসময় মুখ ঢেকেই বোরখা পরতাম।কোথাও কখনও বাইরে মুখ খুলিনি।
পরে ময়মনসিংহ অনার্স এ ভর্তি হলাম অর্থনীতিতে। এত এত প্রাইভেট পড়তাম । কলেজে ক্লাস করতাম।৪ ঘন্টা করে পরীক্ষা দিতাম কোনদিন মুখ খুলিনি।
৭ বৎসর ময়মনসিংহ থাকছি কোনদিন এক মুহুর্তের জন্য মুখ খুলিনি।
মাস্টার্স এর শেষের দিকে আমি কনসিভ করি,তখন আমি ভীষন অসুস্থ হয়ে পড়ি।
ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে ২০ দিন থাকা লাগে।
একলামসিয়া হয়ে গেছিল,তাছাড়া ৩৮ কেজি ওজন ছিলাম তখন আমি।
শারিরীক ভাবেও অনেক দুর্বল ছিলাম, কয়েক ব্যাগ রক্ত দেওয়া লাগে।
তারপর থেকেই আমার টুকিটাকি শারীরিক প্রবলেম লেগেই থাকত, আর আমি মুখ বন্ধ করে আগের মত দীর্ঘ সময় থাকতে পারতাম না।
তখন ২০০৪ সালে আমি কিন্ডারগার্টেন এ জব নেই। তো বাচ্চারা খালি মুখ দেখতে চাইত।
আর আমার ও অনেকটা সময় মুখ ডেকে রাখলে কস্ট হতো। তাই শুধু স্কুলে গিয়ে মুখ খোলে ফেলতাম আর সমস্ত জায়গায় মুখ ডেকেই চলাফেরা করেছি।
তারপর কলেজেও এখন গিয়ে মুখ খুলি আর বাইরে সমস্ত জায়গায় মুখ ডেকেই চলি।
যাক আমি ২০০৪ সাল পর্যন্ত পুরোপুরিই ইসলামিক ভাবেই চলছি।
কিন্তু এর পর আমার পারিবারিক কিছু সমস্যা দেখা দেয় যার ফলে আমি কর্মের দিকে ঝুঁকে পরি।
কিছুটা আমল কমে যায় তখন।বাস্তব পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে।আমি যে লেভেলের ছিলাম তাতে আমার এখন অনেক বড় আলেমা হওয়ার কথা ছিল।
বাট আমি বাস্তবতার জন্য সে লাইনে ওভাবে থাকতে পারিনি।জব কাজ এগুলাতে আমি ডুকে পড়ি।কিন্তু আমি আমার সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি ধর্মের দিকেই দেই আমার দ্বারা যতটুকু সম্বভ হয়।
আমার আব্বার একটা মহিলা মাদ্রাসা আছে অনেক বড়,আবাসিকেই ৩০০ মত ছাত্রী থাকে আর অনাবাসীক তো অনেক।
সেটার পরিচালনায় আমি আছি,আর ও কয়জন পুরুষ আছে বাট আমাকেই বেশী দায়িত্ব পালন করতে হয়।
কারন পুরুষ তো মাদ্রাসার ভিতরে যেতে পারে না,আমি তো সবসময় ভিতরে গিয়ে পরিদর্শন করে সেই রিপোর্ট মোতাবেক বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা হয়।
আমি মাদ্রাসায় ইংরেজি ক্লাস ও নেই আমার সময় সুযোগ মত।এক কথায় সর্বক্ষন সমস্ত পরিস্থিতিতে আমাকে হাজির থাকতে হয় মাদ্রাসায়।সুখের দিনেও দুঃখের দিনেও।
আর এদিকে মাস্তুরাতে গেছি বরকে নিয়ে।এখন সে সময় দিতে পারে না তাই আমি এখন যেতে পারছি না,বড় ছেলেও সময় পায় না নিয়ে যাবে।
তারপরও চেষ্টা করছি আল্লাহর রাস্তায় যাওয়ার।
আর এদিকে আমার বাসায় মাস্তুরাত জামাত উঠেছে অনেকবার,কাকরাইল থেকে সাপ্তাহিক তালিমের পয়েন্ট ও দিসিল বাট আমার ব্যস্ততার কারনে আমার পাশে র বাসায় দিসি।
কিন্তু পরিচালনায় আমি আছি।সেখানে প্রতি শুক্রবার বয়ান করতে হয়।
আর যেখানেই জামাত আসে সেখানেই সময় লাগাই।
আর যত জায়গায় যাই সবাই আমার বয়ান শুনতে চায়,সবাই চায় আমি জব ছেড়ে পুরোপুরি ওই লাইনে চলে যাই।
তারা বলে আমার মেধা অনেক ওই দিকে গেলে আমি দ্বীনের পথে অনেক ভাল কিছু করতে পারব।
যাক আমার বাস্তব পরিস্থিতিতে সেটা পারছি না, তবে লেগে আছে বড় বড় আলেমাদের সাথে আর যতটুকু সম্ভব পালন করছি।
এগুলা নিয়া আমার অনেক সপ্ন আছে দেখি কতদুর আল্লাহ পুরন করে।
আর হালাল ভাবে থেকে কিছু করার নেশা আমার প্রচুর।
আমি কাজ ছাড়া থাকতে পারি না।
কিছু না কিছু করাই লাগে,মাথায় কিছু না কিছু ঘুরতেই থাকে আমি কি করব বলেন???
আমি চলেছি আমার গন্তব্যের দিকে দেখি খোদাতায়ালা কতদুর আমায় নিয়ে যায়।
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- 207
Date:- 27/04/2020
জুলেখা খাতুন সুমা
ডিস্ট্রিক্ট এম্বাসেডর
গফরগাঁও ময়মনসিংহ
৬ষ্ঠ ব্যাচ
রেজি নং ৩৪৩