জীবনকে পাল্টাতে ধ্যর্য ধারন করে লেগে থাকার কোন বিকল্প নেই।
ভালোবাসি, আমি কাজ করতে অসম্ভব ভালবাসি।
ভালবাসার জন্য আমি আমর একটি লক্ষ স্থির করতে পেরেছি। যখন লক্ষ টিক হয়ে গেছে তখন আমার ভেতরে কাজ করা শুরু করলো কিভাবে আমি কাজটি করতে পারবো কিভাবে আমি কাজ শিখবো।
আমাদের পরিবারের অবস্থা তখন খুব একটা ভাল না আমি টিওশনি করে সংসারে যতটুকু সাহায্য করা যায় করতাম। বাবা সবে মাত্র সুস্থ হয়েছেন ( বাবা অসুস্থ ছিলেন প্রায় ২ বছর)। মার সাথে কতা বললাম আমি গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখবো। শুরু করলাম ঘাটাঘাটি, জানলাম কিভাবে কি করতে হবে। মা সহায়তা করলেন ধার করে টাকা দিলেন ভর্তি হলাম একটি আইটি তে গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখবো বলে। আমার পরিচিত একজনের রেফারেন্সে কিছু টাকা ডিসকাউন্ট পেলাম এবং অর্ধেক টাকা জমা করলাম। শুরু হলো নতুন যাত্রা
আমি মাত্র ১০০০০ টাকা প্যাকেজ এর একটি কম্পিউটার কিনি সাথে ১২০০ টাকা দিয়ে tp link এর একটি wifi receiver কিনলাম কারন আমার নেট ছিলো না। আমার বাসার সামনে এক কাকার বাসায় wifi ছিলো তার wifi কানেক্টেড করে নেট চালাতাম। রিসিবার চালের উপর রেখে কানেক্টর দিয়ে পিসি পর্যন্ত নিয়ে আসতাম।
ক্লাস শুরু করলাম যে ভাইয়া কাজ শিখাতো তিনি ভালো ছিলেন, যত্ন নিয়ে কাজ শিখিয়েছেন। আমি আইটি থেকে বেসিক শিখলাম। দেখতে দেখতে ক্লাস সমাপ্ত হয়ে গেলো। আমি হয়ে গেলাম "একজন ফ্রিলান্সার"।
খুব আনন্দ হলো আমি টাকা ইনকাম করবো পরিবারকে সাহায্য করবো খুব আনন্দ।
কিন্তু মার্কেট প্লেসে যখন পা রাখলাম তখন মনে হলো সাগরে নেমে গেছি কিন্তু সাতরাতে পারছি না কারন আমি সাতরাতে শিখেছি কিন্তু কিভাবে দীর্ঘ সময় সাতরাতে হয় জানা না।টেকনিক শিখিনি
প্রায় ছয় মাস চলে গেলো কয়েকটা কনটেস্টের চুড়ান্ত পর্যায়ে গেলেও রেজাল্ট পেলাম না। হতাশার মাঝে you tube এর মাধ্যমে খুজে পেলাম "Iqbal Bahar Zahid"
স্যার এর একটি ভিডিও। তার কথা গুলো শুনলাম ভালো লগলো মনে হলো শরীরে শিহরনের সৃস্টি হলো আমি নিচের লিংকে প্রিয়ে গ্রুপে জয়েন করলাম। তারপর থেকে স্যার এর প্রত্যেকটা পোস্ট ফলো করতে থাকলাম। মনে সাহস নিয়ে লেগে থাকার মানসিক প্রস্তুতি নিলাম আমাকে পারতে হবে, আমি পারবো চেস্টা চলতে থাকলো। এর মাঝে ঢাকায় সম্মেলনে যোগদান করলাম। দেখলাম জানলাম শিখলাম। আমি স্থির করে নিলাম আমাকে কাজ করতেই হবে, এর মাধ্যমে আামাকে কিছু করতে হবে।
তার কিছু দিন পর চলে গেলাম ঢাকায় আমার ভগ্নিপতির বাসায় সেখানে গিয়ে কাজ শুরু করলাম কয়েকদিনের মাথায় রেজাল্ট পেলাম। আমি পেরেছি কি যে আনন্দ সেদিন আমি এক দিনে দুটো কনটেস্ট উইন হলাম। দীর্ঘ একবছর দুই মাস পর আমি উইন হলাম। তার পর চলতে থাকে নানা রকম চড়াই উতরায় এর মধ্য দিয়ে। ওখানে আমি কয়েকজন এক্সপার্টদের সাথে পরিচিত হলাম কিছু টেকনিক শিখলাম আমাকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করলো। ওখানে প্রায় একবছর তিনমাস ছিলাম পরে ময়মনসিংহে চলে আসি ( দুলাভাই ট্রান্সফার হয়ে যায় ময়মনসিংহে)।
আমি ময়মনসিংহে আাসার পর আমি নতুন কম্পিউটার কিনতে চাই কিস্তিতে কিন্তু যাদের কাছ থেকে কিস্তি নিবো তারা আমকে জিগ্যেস করলেন আমি কিস্তি টাকা পরিশোধ করতে পারবো তো। এই কথা শুনে আমার সাহস হয়নি কিস্তিতে কম্পিউটার কিনার। এই কথা আমি আমার ময়মনসিংহের "নিজের বলার মতো একটি গল্প গ্রুপরে সদস্যের সাথে শেয়ার করি। সে ভাই আমাকে বলে আমি টাকা দিবো আপনি কিনেন টাকা কিস্তিতে ফেরত দিয়েন বাড়তি কোনো টাকা দিতে হবে না। আমি তার কাছে সারা জীবন কৃতজ্ঞ থাকবো সে আমাকে পরদিন টাকা দিলো আমি কম্পিউটার কিনলাম নতুন। আমি তার বিশ্বাসের মর্জাদা রাখতে পেরেছি।। আল্লাহ তাআলা আমাকে সহায়তা করেছেন। আমি গর্বিত, আমি ধন্য আমি এমন একটি পরিবারে থাকি যেখানে চোখ বন্ধ করে একে অপরকে বিশ্বাস করতে পারি। আমি কৃতজ্ঞতা জানায় জনাব Iqbal Bahar Zahid স্যারকে যিনি আমাকে সাহস দিয়েছেন, লেগে থাকার মানসিকতা সৃষ্টি করেছেন আমার ভেতরে। আমি আল্লাহতাআলার কাছে শুকরিয়া জানায় সেই দিন আমাকে স্যার এর কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
আমি এখন সাগরে দীর্ঘ সময় টিকে থাকতে শিখেছি।জীবনকে পাল্টাতে ধ্যর্য ধারন করে লেগে থাকার কোন বিকল্প নেই। ধন্যবাদ সকলকে।
"আসুন ঘরে থাকি এবং প্রতিবেশির খোজ রাখি"
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- 210
Date:- 30/04/2020
নাহিন হাসান শুভ
২য় ব্যাচ
রেজি নং-২১১
ময়মনসিংহ
০১৯৫৩৪১৩০৫০