আজ আমি এমন একটা লোকের জীবনের গল্প বলবো যার জীবনে কোন সফলতা নেই।
আস্সালামু আলাইকুম
ওয়া রহমাতুল্লাহ্
শুকরিয়া আদায় করছি সৃষ্টি কর্তার নিকট, দুনিয়া জুড়ে মহামারী করোনা ভাইরাস থেকে আমাদেকে এখনো সুস্থ্য ও নিরাপদে রেখেছেন আলহামদুলিল্লাহ।
আশা করছি সম্মানিত প্রিয় ভাই ও বোনেরা আপনারা সকলে যার যার অবস্থানে আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন ও নিরাপদে আছেন আলহামদুলিল্লাহ।
আমি শ্রদ্ধার সাথে স্বরন করছি আমাদের প্রিয় মেন্টর প্রিয় স্যার জনাব Iqbal Bahar Zahid স্যারে কে যার অনুপ্রেরণায় নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি। এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার লক্ষে কাজ করে যাচ্ছি। আমি স্যারের প্রতি অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। যার প্রচেষ্টায় আমারা একটি প্লাটফর্ম পেয়েছি যার নাম
"নিজের বলার মতো একটা গল্প"
আমি মনে করি, প্রতিটি মানুষের জীবনে
"নিজের বলার মতো একটা গল্প" থাকা প্রয়োজন। সেটা হতে পারে সফলতার গল্প,, হতে পারে ব্যর্থতার গল্প, মানুষের জীবনে সব সময়ই যে সফলতার গল্প শুনবো তা কিন্তু নয়, সবাই সফলতার লক্ষেই কাজ শুরু করেন। কিন্তু কয়জনই বা জীবনে সফল হতে পারেন।
আজ আমি এমন একটা লোকের জীবনের গল্প বলবো যার জীবনে কোন সফলতা নেই। ব্যর্থতায় জর্জরিত।
তিনি ছিলেন বদমেজাজি একজন মানুষ, ছোট বেলা থেকে তার লেখা পড়ার ব্রেইন অনেক ভালো ছিলো, ক্লাসে কখনো ফাকি দিতেন না। ক্লাসের পড়া সব সময় শিখে যেতেন। ক্লাসের নাম্বার ওয়ান স্টোডেন্ট ছিলেন। যাকে বলে ফ্রাস্ট বয়।
এক চান্সে এস এস সি, পাশ করে ইন্টারমিডিয়েট ভর্তি হয়েছেন সেখানে ও ভালো রেজাল্ট করেছেন। এইচ এস সিতে পাশ করার পর সে ডিপ্লোমা ইন্জিনিয়ারিং পড়তেন। কুমিল্লা ম্যাচে থেকে সে পড়া শোনা চালিয়ে যেতেন।
তবে তিনি বাড়িতে বদমেজাজি হলে ও যেখানে থেকে লেখা পড়া করতে সেখানে অত্যান্ত ভদ্র প্রকৃতির ছিলেন । সবায় অনেক ভালো জানতেন। সে যেখানে থাকতেন তার পাশে একটা মসজিদ ছিলো। লেখা পড়ার পাশা পাশি তিনি মসজিদে গিয়ে নামাজ পরতেন ৫ ওয়াক্ত। এমনি করে লেখা পড়া কন্টিনিউস চলতে থাকে। মাঝে মাঝে টাকা পয়সার প্রয়োজন হলে বাড়িতে আসতেন। তার এই বদমেজাজের কারনে এলাকার সবাই তাকে ভয় পেতেন। আর এমনিতেই ভালো একটা অবস্থানে লেখা পড়া করছেন তখনকার সময় আমদের এলাকায় ডিপ্লোমা ইন্জিনিয়ারিং পড়ার মত কারো সামর্থ্য ও ছিলো না, এবং পড়ার মত এমন কেউ ছিলো না। সময়টা ছিলো আজ থেকে ৩২/৩৩ বছর আগের কথা।
লেখা পড়া অবস্থায় তিনি ম্যাচের পাশে যেই মসজিদে নামাজ পড়তেন, সেই মসজিদে অনেক ভদ্রলোকই নামাজ আদায় করতেন। তাদের মধ্যে একজন ভদ্রলোক তাকে সব সময় ফলো করতেন। তাকে অনেক পছন্দ করতেন, তার কথা বার্তা চলাফেরার স্টাইল, লেখা পড়া সবদিক দিয়ে সেই ভদ্রলেকের মন জিতে নিয়ে ছিলেন। যখন ডিপ্লোমা ইন্জিনিয়ারিং পাশ করলেন তখন অনেক চাকরির ওফার পেয়েছেন। তখন ঘুষ খেতে হবে বিদায় কোন সরকারি চাকরিতে জয়েন্ট করেনি। একটা সময় সেই ভদ্র লোক ছেলেকে চাকরি দিয়ে মেয়ে বিয়ের দেওয়ার জন্য প্রস্তাব দেন । সেই ভদ্রলোক ছিলেন অটাল সম্পদশালী অনেক ভালো একজন মানুষ ছিলেন , কিন্তু ছেলেটা সে বিয়েতে রাজি ছিলেন না। তার পর সেই ভদ্রলোক এবং ছেলে ফেমিলির সবাই বুঝিয়ে একটা সময় রাজি করালেন।
সবাই দেখা দেখির পর এক পর্যায় বিয়ে হলো। এক সপ্তাহ ও যায়নি নতুন একটা সমস্যা দেখা দিলো, মেয়ের কথা বলতে সময় নাকে লাগতো, সেই সমস্যার কারনে ছেলেটা মেয়েটিকে নিয়ে সংসার করবেন। অনেকেই বুঝিয়েছেন কোন মতেই রাজি ছিলো না। এমনি করে ৫/৬ মাস কেটে যায় কোন ছেলের কাছ থেকে কোন রেন্সপন্স পাওয়া যায়নি । পরে বাধ্য হয়ে মেয়ের বাবা ছেলের বাড়িতে গিয়ে ছেলের দুইটা হাত ধরে বললো,
দেখ বাবা তুমি আমার মেয়েটাকে তালাক দিও না। আমি বেচে থাকতে তোমাকে নিজ হাতে একটা সুন্দরী মেয়ে চেয়ে বিয়ে করিয়ে দিয়ে যাবো । তার পর ও তুমি আমার মেয়েটাকে তালাক দিও না।
কে শুনে কার কথা, কারো কথায় সে কান দেয়নি। মা বাবা ভাই বোন বন্ধুদের কারো কথা সে কোন মূল্যায়ন করেনি। সে তার সিদ্ধান্ত টাকে অটুট রাখে। পরবর্তীতে উভয় পক্ষের গার্ডিয়ান পর্যায় বসে একটা মিমাংসা হলো। ছেলের পক্ষকে একটা জরীমানা করা হলো এবং দুজনের মধ্যে সেপারেশন হয়ে গেলো।
সেই সময়টা ছিলো অনেক কষ্টের ও বেদনার, মেয়েটার বাবা অনেক কান্না করেছিলো তবুই তার মন এতোটুকু নরম হয়নি।
সেই থেকে তার জীবনের কালো অধ্যায় শুরু হলো। বাড়িতে কারো সাথে ভালো করে কথা বলতেন না। সব সময় চড়া মেজাজ দেখাতেন সবার সাথে। মুখে কখনো হাসি ছিলো না। মা, বাবাকে যতেষ্ট সম্মান করতো না বড় ভাই ভাবীদেরকে অসম্মান করে কথা বলতো। পরে একজায়গায় বিয়ে করে মেয়েটা ক্লাস সেবেন পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে কি না সন্দেহ আছে। মেয়েটা ভাষা ব্যবহার তেমন একটা ভালো ছিলো না। ছেলেটার জীবনে অর্জন বলতে কিছু নেই।
সে ছিলো ৬ ভাইয়ের মধ্যে ১ ভাই বড় ভাইদের বিদেশের উপার্জনের টাকা নিজের ফান্ডে জমা করেছে সেই টাকা দিয়ে এখন পর্যন্ত টিকে আছেন।
বর্তমানে তার ৪ ছেলে দুই মেয়ে। বড় ছেলে বিদেশে থাকে, মেয়ের বিয়ে দিয়েছে। মেজু ছেলে লেখা পড়া করে। আর ৪ জন ছোট লেখা পড়া করে।
পরবর্তীতে তার জীবনে সে কোন চাকরি করেনি।
বর্তমান ছেলেটার অবস্থা খুবই করুন। মানুসিক রুগীর মতো এলাকয় তার কোন মূল্য নেই। তার সাথে কেউ মিশে না। সে তার মত করে চলা ফেরা করে। সব সময় নিজের বুঝ ১৬ আনা থেকে ৩২ আনা বেশি বুঝে। পরের বেলা বুঝে না এটা হচ্ছে তার বর্তমান সভাব। বিজনেস করে নিজের জায়গা জমি সব হাড়িয়ে এখন টপনশন হতাশা যুক্ত অবস্থা ঘরের এক কোনায় পরে থাকে।
এই হলো আজের গল্প। দয়া করে বলবেন তার ভুল গুলো কি ছিলো ? এই গল্প থেকে আপনি কি শিখতে পারলেন।
এবং তার খারাপ দিকগুলো কি ছিলো বিস্তারিত কমেন্টে জানাবেন
এতোক্ষণ কষ্ট করে এই গল্পটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, আপনারদের সকলের সুস্বাস্থ্যে ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। ভালো থাকবেন সব সময় বিধাতার নিকট সেই কামনায় আজকের মত
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- 211
Date:- 01/05/2020
আমি মাহবুব হাছান
"নিজের বলার মত একটা গল্প" গ্রুপের কোর ভলান্টিয়ার
রেমিট্যান্স যুদ্ধা সৌদি আরব প্রবাসী
জেলা - কুমিল্লা
ব্লাড গ্রুপ - ০+
ব্যাচ নাম্বার - (২য়)
রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার - ২৪৪০