দেশ বিদেশের বেকার সমস্যা ও ছোট্ট সমাধান
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ , কৃতজ্ঞতা সেই মহান সত্বার যার হাতে সবার প্রান।
আশা করছি কোন না কোন ভাবে সবাই ভালো থাকার চেষ্টা করছেন।
ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রিয় স্যার ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার কে।
যে কোন দেশের বেকার সমস্যা ঐদেশের জন্য একটি বড় অর্থনৈতিক বাধা, এবং বর্তমান বাংলাদেশর অবস্থাও তাই। এই সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই সমস্যা যেমন দেশে প্রভাব ফেলছে তেমনি প্রবাসেও। প্রবাসে বেশিরভাগ শ্রমিক আসে খালি হাতে, খালি হাত বলতে বুঝাতে চাচ্ছি কোন কাজ বা ভাষা শিখে আসে না। আর সেই জন্যে ভালো কোন কাজও পায় না। আর দেশেত কাজই করে নাই কখনো।
দেশের ব্যপারে বলতে গেলে যারা দিন আনে দিন খায় ওরা যেভাবে হোক চলে যাচ্ছে। সমস্যাটা হচ্ছে দু যায়গায় এক যারা শিক্ষিত বেকার, দুই যারা বিদেশগামি বেকার। বিদেশগামি বেকার যারা তারা বেশিরভাগ হাইস্কুল থেকেই লেখাপড়া ছেড়ে দেয় তারপর ৪/৫ বছর দেশেই ঘুরেফিরে আর বাপ ভাইয়ের টাকা নস্ট করে।
আর যারা শিক্ষিত বেকার তারা পাশের পর পাশ দিয়ে এমন পর্যায় যায়, না পারে ছোট কিছু করতে না পায় ভালো চাকরি। এখন আমাদের দেশ হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশ প্রতিবছর এত এত পাশ দেয়া যুবকদের কোথায় চাকরি দিবে সরকার? এখন এদের কাছে রাস্তা দুটি -
এক দেশে নিজের উদ্বোগে কিছু একটা করা, নিজের পায়ে দাড়ানোর চেস্টা করা।
দুই বিদেশে পারি দেয়া।
এই সমস্যা সমাধানে যুগে যুগে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে বিশিষ্ট জনেরা। আজ আমি আমার কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা ও আমার ছোট্ট গবেষণা থেকে কিছু বলবো।
একটা দেশের অর্থনীতি নির্ভর করে ঐ দেশের জনশক্তির উপর, আর যদি ঐ জনশক্তি কাজে না আসে তবে তা হয়ে উঠে একটা বড় Burden (বোঝা).
আমি আমার সিমিত জ্ঞান দিয়ে যতটুকু বুজি তা তুলে ধরলাম।
আমাদের প্রতিটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২ টা জিনিষ বাধ্যতামুলক করা হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম দেশ তথা বিদেশে কিছু একটা করে খেতে পারবে বলে আমার দৃর বিশ্বাস।
১/ কারিগিরি শিক্ষা :- একটা দেশের জনগণ যত বেশি কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত সেই দেশের শ্রমশক্তি ততবেশি সাবলম্বি ( দেশে ও বিদেশে)। আমার প্রবাস জীবন ১৫ বছর হতে চলল, আমি আমার এই ছোট্ট কর্ম জীবনে যা দেখলাম তা থেকে বলছি। আমাদের দেশের যত শ্রমিক আসে ওরা না জানে কোন কাজ না জানে ভাষা, অন্যথায় পার্শবর্তি দেশ ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ফিলিপাইন এই সব গুলো দেশের জনগন আমাদের দেশের জনগন থেকে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত এবং ভাষা( ইংরেজি) ও ভালো জানে। ফলে কি হয় আমরা যেহেতু কোন কাজ বা ভাষা জানি না আমরা হয়ে যাই ওদের লেভার, নাহয় ক্লিনার খুব কম আছে যারা একটু ভিন্ন But মুষ্টিমেয় জনগনের এই হাল, এটাই বাস্তব।
এইত গেল বিদেশের কথা।
এখন একটু দেশের কথা বলি, বর্তমান বিশ্বের অর্থনীতির প্রথম স্তরে আছে চিন। চিনের পন্য এমন কোন ঘরে নাই এমনটি মনে হয় খোঁজে পাওয়া যাবে না সারা পৃথিবীতে। আজকের এই চিন এমনি এমনিই এই অবস্থাতে এসে দাঁড়ায় নাই। এর জন্য ওরা কি করেছিল জানেন। আজ থেকে ২/৩ দশক আগে চিনের সরকার ১০ বছরের জন্য সকল পাঠ্যগত শিক্ষা বন্ধ করে দিয়েছিল, আর এই ১০ বছর ১০টি নতুন প্রজন্ম কে দিয়েছিল কারিগরি শিক্ষা আর এই জন্যই আজ চিনের প্রতিটা ঘর একেকটা কারখানা। আমার মনে হয় আমাদের দেশের জন্য এমন একটা উদ্ব্যোগ নেওয়া সময়ের দাবি। তা নাহলে লাভ নাই এই Golden A+ দিয়ে। কারন পাশ করার পর বলবে I am golden A+।
২/ ইংরেজি ভাষা শিক্ষা, ( ইংরেজিতে কথা বলার যোগ্যতা)।
আমাদের দেশে যে ভাবে ইংরেজি পড়ানো হয় ঐভাবে ৩২ বছর লেখা পড়া করলেও ইংরেজিতে নিজের পরিচয় দেয়া সম্ভব হয় না। গত পরশু ৩ জন বাংলাদেশি ছেলের ইন্টার্ভিউ নিলাম দেশ থেকে BA পাশ করে এসেছে, নিজের পরিচয় টা দিতে পারল না ইংরেজিতে। কারন আমরা স্পিকিং থেকে বেশি গুরুত্ব দেই গ্রামার কে, কত রকম ফরমুলা যে মেন্টেন্ট করতে হয় একটা বাক্য বলতে গেলে। পক্ষান্তরে অন্য দেশের লোকেরা অনর্গল ইংরেজি বলতেছে কোন গ্রামারের বালাই নাই। দিব্বি চলে যাচ্ছে তাদের আমাদের চলে না। System বদলাতে হবে ইংরেজিতে ছাত্রছাত্রীদের কথা বলা বাধ্যতামূলক করতে হবে Class One থেকে।এতো গ্রামারের বোঝা না দিয়ে সহজ করে শিখাতে হবে। তানাহলে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলা খুব কঠিন হয়ে দাড়াবে আমাদের ছেলেমেয়েদের।
এই দুটু বিষয় কে হাইস্কুল লেভেল থেকে বাধ্যতামুলক করলে বেকার সমস্যা দুর ত হবেই পাশাপাশি জনশক্তি একটা স্কেলে চলে আসবে। বর্তমান বিশ্ব চায় ট্রেডের লোক, যে কোন কম্পানি চায় Technical manpower, আর এই ক্ষেত্রটাতে আমরা খুবি দুর্বল তাই অন্য দেশ গুলো এই শ্রমবাজারটা দখল করে আছে আর আমরা হয়ে আছি লেভার না হয় ক্লিনার। সরকার কে এই বিষয়ে ভাবার জন্য অনুরুধ করছি, পাশাপাশি সচেতন সকল মানুষ গুলোকে এই ব্যাপারে এক্টু পদক্ষেপ নিতে এগিয়ে আসার অনুরোধ করছি। যেমন আমাদের সবার শ্রদ্ধাভাজন প্রিয় স্যার এগিয়ে এসেছেন, নিজের অক্লান্ত চেস্টায় গড়ে তুলেছেন এমন একটি প্লাটফর্ম যেখান থেকে লাখো তরুণ তরুণী খুঁজে পাচ্ছেন নিজের লক্ষ্য উদ্দেশ্য। শুধু মাত্র সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে। স্যালুট প্রিয় স্যার কে।
শেষ করছি সবার সার্বিক সুস্থতা ও কল্যাণ কামনা করে। আল্লাহ যেন সবাইকে ভালো রাখেন সুস্থ রাখেন, যারা খাবারের সংকটে আছেন আল্লাহ যেন ওদের কে খাবারের ব্যবস্থা করে দেন, যারা কোয়ারেন্টেইন বা হস্পিটালে অসুস্থ আছেন আল্লাহ যেন ওদের কে ভালো করে আবার সাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দেন, যারা আমাদের ছেড়ে ইতিমধ্যে চলে গেছেন আল্লাহ যেন উনাদের মাফ করে দেন ও পরিবারের উত্তম ব্যবস্থা করে দেন। আমিন সুম্মা আমিন।
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- 212
Date:- 02/05/2020
ধন্যবাদান্তে,
এম এম মাহবুবুল হাসান
কমিউনিটি ভলান্টিয়ার
নবম ব্যাচ
রেজি.নং: 12487