আমি কচ্ছপের গতিতে ধীরে ধীরে নিজের লক্ষে পৌছাতে চাই।
আপনারা সকলে অবগত আছেন, আমি মাহবুব হাছান সৌদি আরব জেদ্দা প্রবাসী। দীর্ঘ ১৯ বছর যাবত প্রবাসে কর্মরত আছি। আলহামদুলিল্লাহ,
আমি আমার কিছু কথা সেয়ার করছি।
মা, বাবার প্রথম সন্তান আমি , আপনারা সকলেই জানেন মা, বাবার প্রথম সন্তান অনেক আদরের হয়। আমি সেই সৌভাগ্যবান একজন ।
আসলে ছোট বেলা থেকেই দেখে আসছি, সবায় না, আমার আসে পাশে কিছু কিছু বাবার বড় ছেলেরা । কিন্তু তারা তাদের দায়িত্ব পরিপূর্ণ ভাবে পালন করেননি। বা করতে পারেনি। হয়ত চেষ্টা করেছেন হয়ত চেষ্টা করেননি। সবাই নিজের জীবন নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন।
আমার মা,বাবা সহ ৭ সদস্যের এই ছোট সংসারে সব দায়িত্ব আমার মাথার উপর অটোমেটিক চলে আসে। সেই দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করতে গিয়ে অনেক বার হুছোট খেয়েছি। বিজনেস করতে গিয়ে অনেক বার লস করেছি। গাড়ি কিনে লস করেছি। হতাশা আকঁরে ধরেছিলো তবে থেমে যাইনি, প্রতিবারই উঠে দাড়ানোর চেষ্টা করেছি। কাউকে বুঝতে দেইনি।
সকল সংকট নিজে নিজে অভারকাম করার চেষ্টা করেছি কারো সহযোগিতা ছাড়াই।
তবে ১৯ বছরের প্রবাসী জীবনে আমার সংসারে আমি একা উপার্জনকারী । ছোট ছোট ভাই বোনদেরকে লেখা পড়া করানো, থেকে শুরু করে বিয়ে সাধি দেওয়া ভাইকে বিদেশে নিয়ে আসা সংসার পরিচালনা করার জন্য সব অর্থ আমাকে বহন করতে হতো তার পর অবশিষ্ট টাকা থাকলে ভবিষ্যতের জন্য কিছু করা। তার মাঝে ও আমার আত্মীয় স্বজনের ছোট ছোট অনেক চাহিদা পূরুন করেছি। বিনিময়ে কখনো কিছু চাইনি। নিজের মন থেকে করেছি তাদেরকে খুশি করার জন্য।
নিজের বলার মতো একটা গল্প গ্রুপের সাথে যুক্ত হওয়ার পর, আমাদের প্রিয় মেন্টর Iqbal Bahar স্যারের অনুপ্রেরণা নিয়ে ২টি গরু দিয়ে শুরু করেছিলাম এগ্রো ফার্ম, সেটা একবছর পরিচালনা করেছিলেন আমার বাবা। দুইটি গরু থেকে বাছুর সহ ৪ টি হয়েছিল মাশাআল্লাহ, কিন্তু হঠৎ বাবা অসুস্থ্য হয়ে যাওয়ার ফলে খামার পরিচালনার করার মত কোন লোক না থাকায়, আমাকে বাধ্য হয়ে গরু গুলো ঐ অবস্থায় বিক্রি করতে হয়েছিলো। ১৫/২০ পর বাবা সুস্থ হলেন আলহামদুলিল্লাহ। বাবাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হলো। ডাক্তার বলেছিলেন সম্পূর্ন রেষ্টে থাকার জন্য। সেই জন্য আর কোন কাজ করতে দেইনি
পরবর্তীতে আমার খামারের জন্য আমার জায়গার সাথে আরো ৪ শতক জায়গা ক্রয় করে নতুন উদ্যামে আমার খামরের জন্য বাউন্ডারি করে আসলাম গত বছর। জায়গাটা প্রস্তুত করার জন্য সেখানে মাটি ভরাট করার বাকী আছে। আশা করছি ধীরে ধীরে সব হয়ে যাবে। দেশে গিয়ে শুরু করবো আশা করছি আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
তবে আমি- 4G - 5G -স্পিরিটে চলতে চাই না। আমি কচ্ছপের গতিতে ধীরে ধীরে নিজের লক্ষে পৌছাতে চাই। যদি ও একটু সময় বেশি লাগবে তাতে আমার কোন তারাহুরো নেই।
এই মহামারী করোনা ভাইরাসে যখন সবাই হতাশা, আতঙ্ক নিয়ে বিরাজমান আছেন , আমি ও তার বাহিরে নই। তার মাঝে ও নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য আমি বদ্ধ পরিকর।
"স্যার সব সময় বলেন নিজের সাথে কথা বলতে"
আমি সব সময়ই নিজের সাথে কথা বলি, প্রতি নিয়ত ভাবি কি ভাবে কি করা যায়। তারই দ্বারাবাহিকতায় আমাদের বাড়ির পাশে আমাদের নিজস্ব জায়গায় পুকুরের উপর একটি মুদি দোকান দেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নেই।
আমার উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা, পুকুরে মধ্যে মাছ চাষ, চলছে, তার উপরে মুদি দোকান করছি। ভবিষ্যতে পুকুরের উপর মাসা করে ১০০/২০০ হাস চাষ।
আমার ভাবনা ছিলো মানুষের পেটে যখন ক্ষুধা লাগে তখন সে না খেয়ে থাকতে পারবে না। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য সংসারের দৈনন্দিন খরচ মানুষের লাগবেই।
আর বাজারের রেইটে যদি পন্যটা ঘর থেকে বাহির হয়েই হাতের নাগালে পায়। তাহলে সে সময় নষ্ট করে, বার্তি ৫-১০ টাকা গাড়ি ভাড়া দিয়ে বাজারে যাবে না। সে আমার দোকান থেকে কিনে খাবে। ইনশাআল্লাহ।
সবায় আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি যেন একজন সফল উদ্যোক্তা হতে পারি।
এতো কষ্ট করে আমার লেখাটা পড়ার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ, আপনাদের সুস্বাস্থ্য ও নিরাপদ জীবন কামনা করছি । ভালো থাকবেন সব সময় সেই কামনায় আজকের মতো বিদায় নিচ্ছি আল্লাহ হাফেজ।
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- 213
Date:- 03/05/2020
আমি মাহবুব হাছান
"নিজের বলার মত একটা গল্প" গ্রুপের একজন কোর ভলান্টিয়ার
রেমিট্যান্স যুদ্ধা সৌদি আরব প্রবাসী
জেলা - কুমিল্লা
ব্লাড গ্রুপ - ০+
ব্যাচ নাম্বার - (২য়)
রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার - ২৪৪০