পৃপৃথিবী যখন দূরপাল্লায় হাঁটছে, ঠিক তখন একটি ঘরে বন্ধি থেকে, শুধু আবেগের হাওয়ায়, একটু ক্লান্তি নিয়ে প্রশান্তি খোঁজার চেষ্টায়, আমি বেঁচে আছি।
আস্সালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহে ওয়াবারাকাতুহ।
দেখেছো কান্ড!...কি সাঙ্ঘাতিক!
পৃপৃথিবী যখন দূরপাল্লায় হাঁটছে, ঠিক তখন একটি ঘরে বন্ধি থেকে, শুধু আবেগের হাওয়ায়, একটু ক্লান্তি নিয়ে প্রশান্তি খোঁজার চেষ্টায়, আমি বেঁচে আছি। লুকিয়ে লুকিয়ে বুক ফাঁটা আর্তনাদ ঘরের চার দেওয়ালে বারে বারে আছড়ে পড়ছে!
একদিন!
বিস্ফোরিত চোখে আরো রে রে করে তেড়ে আসে মা -----আজ তোরই একদিন কি আমার একদিন! মারের চোটে তোকে আমি ঘর থেকে বের করে দিবো। আজ তুই দেখ, তোকে ঘর ছাড়া করেই ছাড়বো!!
মায়ের হাত থেকে বাঁচাতে দাদু আগলে নিলো। -----ঠিক আছে, মারলে কি সমস্যার সমাধান হবে?...ওকে বুঝিয়ে বলো, ঠিক বুঝবে।
কতো বঝাবো ওকে আমি আর? রোজ স্কুল থেকে কমপ্লেইন, আজ এর হাত মুচকে দিলো, কাল কাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিলো, এই তো সেদিন স্কুল থেকে স্যাররা বললেন আপনার ছেলেটা খুব ব্রিলিয়ান্ট, ওকে আমরা স্টুডেন্ট হিসেবে হারাতে চাই না; অন্য কেউ হলে হয়তো টিসি দিয়ে দিতাম এতো দিনে। উফফ !!আমি আর পারছি না। এর থেকে ভালো হবে যদি ওকে কোথাও বের করে দেই, তাহলে দুষ্টুমিটা আরো বেশি করে করতে পারবে।।। কী হলো বৌমা, বাদ দাও?
তারপরও-------------- ঘুম থেকে জেগে ওঠে আমাকেসহ ঘরে বাইরে সব জায়গায় জ্বালানো ছাড়া আর কী করবে আপনার নাতি! এবার দেখবেন মা, হয় ও থাকবে ঘরে, না হয় আমি !
দাদু বলতে লাগলো, তাতে কি ওঁর জালানো কমবে বৌমা!?
মা তাহলে আর কী!!... দিন আস্কারা....
এই ভাবেই দাদুকে বলেছিলো, গত হয়ে যাওয়া সেদিন।
এগুলো কি মায়ের ? নাকি ভালোবাসা?
এরই ধারাবাহিকতায়
একদিন দাদুমনি ঘুম পাড়িয়ে দেয়ার সময়, স্মৃতি গল্প বলছিলো আমার কান্না থামানোর জন্য ---- (সেই দিন আম্মু আমাকে বেশ মেরেছিলো)।
গল্পটা
একটা বাবুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না বেশ কিছুক্ষণ। বাড়ির প্রায় সব ঘর খোঁজার পর খাটের তলা, আলনার ফাঁক, বক্স জানালার আড়াল... সব জায়গায় খুঁজেও পাওয়া গেলো না--- শুরু হয়ে গেলো মায়ের কান্না।।।।। তখন হঠাৎ খিলখিল হাসি শুনে ঘরের দিকে তাকিয়ে দেখে পা দোলাচ্ছে ওখানে বসে।
বাবার ডাক শুনেই মা দৌড়োতে দৌড়তে আসে। জিজ্ঞেস করতেই বাবুটা আলতো করে মুখে চুমু খেয়ে বাবুটা বলছিলো- ওর আজ খুব ইচ্ছে করেছিলো উঁচুতে উঠে সব কিছু দেখতে;।। আর সেই জন্যই আলনার খাঁজে খাঁজে পা রেখে উপরে উঠে পড়েছে।
দাদু আমাকে আরও বললো--- দেখেছো কান্ড!!...কি সাঙ্ঘাতিক?
বাবুটা বলল---- হুম আসলেই তো--- কি সাংঘাতিক!!!
দাদু বলল---- দুষ্ট বাবুটা কে জানো? সেটা তুমি।।
মিস ইউ দাদু.......
..............................................
স্মৃতি মধুর দিন গুলো এখন শুধুই স্বপ্ন.......
একদিন একটা বাবু বেড়াতে গিয়েছিলো, সেখানে খুব মজা করে এসেছে, অগত্যা খুব ব্যথা পেয়েছে। তবে বুঝে উঠতে পারেনি। তার মা তাকে জিজ্ঞেস করলে, অনেক ভেবেও বলতে পারে না কোথাও ব্যথা বা চোট লেগেছে কিনা!!
মায়ের মন বলে কথা!! কেমন যেনো কু-গান গাইছে!!..
দুইদিন ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করেনি।।।। পরে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়।।।। ওখান থেকে এসে সর্বোপরি বকাঝকা না করে রুমে ঘুম পাড়িয়ে দেয়।।।। বাবুটা খুব লিকলিকে। এর পর পরই ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়ে।।। উঠে দাঁড়াতে পারতো না।।।। পাশের বিল্ডিং এর লেডিস ডাক্তার গেস্ট এসেছিলো গল্প গুজব করতে, এসে বাবুটাকে দেখলো এবং নিজের আইডিয়া থেকে বলল ভালো করে চেকআপ করানোর জন্য অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।।। আবারো মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লেও বোধহয় ওরা এমন হতবাক হতো না! অনেক কষ্টে , কাঁপা কাঁপা স্বরে জিজ্ঞেস করে,
----তাহলে আমি আর বাঁচবো না কিভাবে কি করতে হবে বলুন!!??
ভদ্রমহিলা বললেন আল্লাহ না চাইলে, বড় কিছু হবে না। তবে এর মধ্যে জলদি আশার বাণী শুনতে চাইলে অবশ্যই ভালো ডাক্তার দেখানো জরুরি। ওপরওলাতে ভরসা আর বিশ্বাস রাখুন এবং নিজেদের রাখুন মনের জোর। ভুলে যাবেন না এই মনের জোরটা কিন্তু সাংঘাতিক সংক্রামক, যা আপনার আস্তে আস্তে ঘরের সকলের মধ্যে ইনজেক্ট করবে। আরো অনেক কিছু ভালো ভালো এডভাইস দিতে লাগলো।
ওনার কথা শুনে, ডাক্তারের কাছে আবার নিয়ে গেলো এবং নতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ঔষধ চলতে লাগলো। কেউ ভাবেনি, সে দিনে দিনে অসুস্থ হয়ে পড়বে।
বাড়ি ফিরে বাবুর মায়ের সেকি কান্না বিধস্ত হয়ে ভেঙে পড়ছিলো বারবার।
বলা শুরু করলো -----এ কার নজর লেগে গেলো , আমাদের সংসারে!!??...এ আমারই নজর...আমি বারে বারে বলতাম ওকে ঘর থেকে বের করে দিবো অথবা ঘরে রেখে নড়তে চড়তে দেবো না....এমন করে আমার মুখের কথা কী করে লেগে গেলো? এইসবই কাঁদছে আর বলছে। আরো বলছে মায়ের অভিশাপ কি কোন অভিশাপ? ওর মধ্যেও যে দোয়া ও ভালোবাসা লুকিয়ে থাকে। বুক ফাঁটা আর্তনাদ ঘরের চার দেওয়ালে বারে বারে আছড়ে পড়তে লাগলো! ঘরের বাকিরা সুযোগ দিতো-- কাঁদুক, একটু কেঁদে যদি একটু হাল্কা হতে পারে,হোক।
এগুলোই মায়ের ভালোবাসা ।।
এতো কথা যাকে নিয়ে ,যার সামনে, সেই বাবুটা এই আমি !
ঘটে যাওয়া ঘটে যাওয়া এরকম হাজারো গল্প রয়েছে মনে।
এখন আমি শুধু প্রবাসে, যেমন চলছিলো, সবই তেমনই চলছে না। খালি চোখে ঘুম নেই কোনো রাতে। সবাই ঘুমিয়ে পড়লেও আমি আজ এই বন্ধি জীবনে, ঘুমোতে পারি না। অতীত স্মৃতি নিয়ে মাঝেমাঝেই বড়োসড়ো অন্তরে কড়া নাড়ে!
একটু কিছু হলেই যে মা ভেঙে পড়তো,
আজ তার অন্তরে কি বইছে সেটা আল্লাহই জানে?
কী জানি কখন আবার দেখতে পাবো আমার মাকে? মিস ইউ মা।।।।।
লিখতে গেলে অনেক কিছুই লেখা যাবে।।
ধন্যবাদ প্রিয় মেন্টর শিক্ষক জনাব ইকবাল বাহার স্যার আপনাকে, এতো সুন্দর করে শিক্ষণীয় সেরা অন্তরে দাগ কাটা প্ল্যাটফর্ম আমাদের উপহার দেয়ার জন্য।
অধিকাংশই সদস্য আমরা এখন বড় করে, নরমাল, সাবলীল গল্প লেখা শিখে গেছি। এখন দিনে দিনে আরও আমরা পরিণত হয়ে উঠছি। এরই ধারাবাহিকতায় নিজের বাস্তব জীবনের ঘটে যাওয়া স্মৃতি লেখার ভিতর, লেখার কিছুটা ভিন্নতা আনার চেষ্টা করছি। যা অন্যদের অনুপ্রেরণা দিবে আশা
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- 217
Date:- 07/05/2020
মোহাম্মদ ইফতেখার আলম মজুমদার
কান্ট্রি এম্বাসেডর
ব্যবসা চট্টগ্রাম
রেজিস্ট্রেশন নাম্বার 1378
জেদ্দা সৌদি আরবিয়া
রক্তের গ্রুপ এ পজেটিভ
জেলা ফেনী