কুড়িগ্রাম জেলা জুন মাসের মিটাপ
কুড়িগ্রাম জেলার মিটআপনামা
আমি কখনো কথা গুছিয়ে লিখতে বা বলতে পারিনা। বিশেষ করে যখন খুব খুশি বা আনন্দের অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে চাই তখন কথাগুলো এলোমেলোভাবে হুড়মুড় করে বেরিয়ে আসে। গতকাল ১১/০৬/২০২১ ইং রোজ শুক্রবার নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন কুড়িগ্রাম জেলা টিমের মাসিক অফলাইন মিটআপ ছিল। বেশ কয়েকদিন থেকে এই মিটআপের বিষয়ে পরিকল্পনা ও আলোচনা চলছিল। আমাদের কুড়িগ্রাম জেলা টিমের অফলাইন মিটআপ বিষয়ে এটা ছিল সবচেয়ে উৎসাহপূর্ণ। কারণ আমরা কোথায় অফলাইন মিটআপ আয়োজন করব তা নিয়েও ভোট হয়েছিল। আমরা সদরের যেকোনো জায়গায় মিটআপ আয়োজন করতে পারতাম। কিন্তু এতে শুধু পরিচিত উদ্যোক্তাদের নিয়ে মিটিং হতো। কিন্তু আমরা চেয়েছিলাম পরিচিত উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি উদ্যোক্তা হতে আগ্রহী ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছাতে। উদ্যোক্তাদের ডাকবো না আমরা তাদের কাছে যাব। একই সাথে প্রজেক্ট পরিদর্শন করব। আমরা সীদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের কুড়িগ্রাম জেলার অফলাইন মিটআপে প্রজেক্ট পরিদর্শন থাকবে। এতে আগ্রহী উদ্যোক্তা নতুন কোন আইডিয়া পাবে, পাশাপাশি আমরা যার প্রজেক্টে যাব সে উৎসাহিত হবে।
মিট আপের পূর্বনির্ধারিত সময় ছিল সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত।
স্থানঃ ক্রিয়েশন (মামুন ভাইয়ের) কেঁচো খামার, হাজীর মোড়, রায়গঞ্জ, নাগেশ্বরী।
এই মিটআপে অংশগ্রহণ করার জন্য দূরদূরান্ত থেকে অনেকের আসতে হয়েছে, এমনকি রৌমারী উপজেলা থেকে দুই আড়াই ঘন্টার নৌপথে জার্নি করে মিটআপের আগের দিন তিশা আপু এসেছেন। অনেকে ছোট বাচ্চাকে নিয়ে সুদূর চিলমারী উপজেলা থেকে এসেছেন। সকাল দশটায় মিট আপ স্থলে পৌঁছাতে হবে, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক সকাল 9 টায় বৃষ্টি শুরু হয়। অনেকে বাসা থেকে বের হতেই পারে নি, শুধু মিট আপে অংশগ্রহণ করার জন্য বৃষ্টি একটু কমলে চিলমারী থেকে তানিয়া এবং বুশরা আপু অটোতে রওনা দেন। কুড়িগ্রামে এসে শাহিনুল ভাই এবং তিশা আপুর সাথে তাদের দেখা হয়। কুড়িগ্রাম সদর থেকে রমজান ভাই তাদের সাথে যোগ দেন, এমনকি নাগেশ্বরী পর্যন্ত আসার পরে বিশেষ কারণে তাকে আবার ব্যাক করতে হয়। সাইদুল বেরুবাড়ী থেকে আগত শাপলা আপুকে নিয়ে রায়গঞ্জ পৌঁছায়। সেখানে আগে থেকে রাশিদুল ভাই এবং জাহিদ ভাই ছিলেন। আমি নাগেশ্বরী উপজেলা যুব কর্মকর্তা মনজুর আলম স্যার এবং উদ্যোক্তা হতে আগ্রহী পারুল ও তামান্না আম্বিয়াকে সাথে নিয়ে তাদের সাথে যুক্ত হই। কুড়িগ্রাম সদর থেকে আসেন নিম্মী আপু এবং রাজারহাট উপজেলা থেকে লিওন ভাই, নাগেশ্বরী উপজেলা থেকে নুরুন্নবী ভাই, লুৎফর রহমান ভাইসহ আমরা তরুণ উদ্যোক্তা মামুনের প্রজেক্টে দুপুরে এসে পৌঁছাই। দুপুর আড়াইটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত মিট আপ অনুষ্ঠিত হয়। আমরা উদ্যোক্তাদের গল্প শুনি, নিজের বলার মত গল্প ফাউন্ডেশন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানি, প্রজেক্ট ভিজিট করে (মামুনের ক্রিয়েশন ভার্মি কম্পোস্ট খামার) দুপুরের খাবার বিকেলে খেয়ে নিজেদের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আমাদের মাঝে উপস্থিত হতে পারেনি সফি সরকার ভাই, মাহবুব রুবেল ভাই, নিজামুদ্দিন, আলমগীর ভাইসহ অনেকে। তবে তাদের উৎসাহ, উদ্দীপনা ও অফুরন্ত ভালোবাসা ছিল আমাদের জন্য। কেউ কেউ জেলা মেসেঞ্জার গ্রুপে আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং আফসোস করেছেন আসতে না পারার জন্য। যাই হোক, মিট আপ শেষে বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে কারো কারো রাত ১০ টা বাজে। এরকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্তেও সকলে উদ্দীপনার সাথে মিট আপ সম্পন্ন করে। এই উদ্যমী লোকগুলো একসাথে যদি কাজ করি ইনশাআল্লাহ একদিন কুড়িগ্রাম জেলা দারিদ্র্য ও বেকারমুক্ত হবে।
এতক্ষণ ধৈর্য ধরে পড়ার জন্য সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ