জ্রপাতে আমার বাবা মৃত্যুবরণ করার পরে হতাশায় ছিলাম তখন ফাউন্ডেশন আমাকে পথ দেখিয়েছে।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম 




আমার বড় ভাই দের প্রতি তাদের নিঃস্বার্থ ভালোবাসায় আজকে আমি এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি।




হঠাৎ পরিবারে নেমে আসলো এক কালবৈশাখীর ঝড়





আমি জন্মের পর আমার বাবাকে ইনকাম করতে দেখিনি। আমার ভাইয়ারা ইনকাম করতো।

আমার বাবা কে হারিয়ে যখন আমরা দিশেহারা ঠিক তখনই আমার চাচারা আমাদের ভাইদের মন-মানসিকতা নষ্ট করার জন্য বিভিন্ন বাহানা খোঁজে।
তাদের উদ্দেশ্যে ছিল আমার দাদার সম্পত্তি যেন আমরা বিক্রি করে দেই তাদের কাছে তারা ভালো চলবে আমরা যেন খারাপ চলি কিন্তু সেটা সাকসেসফুল হয়নি । মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের ভাইদের বুঝদান করার তৌফিক দিয়েছিলেন। তারা মনকে শক্ত করে। আমরা ছোট ভাই ছিলাম ৩ জন, দুইটা ছোট বোন ছিলো তাদের মুখে খাদ্য দেওয়ার জন্য আরো কঠোর পরিশ্রম করতে থাকে।


কিন্তু আমার ভাইয়েরা মানুষের কথাটা শুনে নাই
তারা আমাকে বলে ফেল করছো তাতে কি হয়েছে আবার পরীক্ষা দিবা ।
আমরা তো পাশে আছি এই কথা শুনে আমি আমার মানসিক শক্তি ফিরে পাই।
২০১১ সালের জানুয়ারি মাসের ১৫ তারিখ আমার প্রতিষ্ঠান থেকে খবর আসে যারা এক বিষর ফেল করেছে তারা নাইনে উঠতে পারবে।
খবরটা শুনে আমি জীবনের সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিলাম। পরে নাইনে ভর্তি হই। মনে মনে জিদ করেছিলাম জীবনে যতদিন লেখাপড়া করব ফেল করব না।
২০১৩ সালে মোটামুটি রেজাল্ট করে এস এস সি পাস করি।
পাশ করার পর ভাইয়েরা জিজ্ঞেস করেছিল কোথায় ভর্তি হব।

তাদের কাছে বললাম টাঙ্গাইল কোন একটা কলেজে এবং ক্রিকেট খেলার ক্লাবে ভর্তি হব।
তারা আমাকে ভর্তি করে দিল।
কিন্তু কলেজ আর একসাথে প্র্যাকটিস করা সম্ভব হলো না। পরে ভাইয়ের সাথে পরামর্শ করে প্র্যাকটিস অফ করে ২০১৫ সালে ইন্টারমিডিয়েট শেষ করি। আবার প্র্যাকটিস শুরু করি পরে ডিগ্রিতে ভর্তি হই পাশাপাশি প্র্যাকটিস করি। ভালোই চলছিল প্র্যাকটিস এবং লেখাপড়া
২০১৭ সালের নভেম্বর মাসের ২০ তারিখ কোন একটা বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারি।
ঢাকা গুলশান ইয়ুথ ক্লাবের কিছু ফাস্ট বোলার নেবে ।

পরিবারের মানুষ মত দিলো না। পরে রাগ করে কয়েক দিনের জন্য প্র্যাকটিস অফ করে দিলাম
বাড়িতে এসে রাগারাগি করতাম ভাত খাওয়া দাওয়া বন্ধ করলাম । পরে আমার পরিস্থিতি দেখে রাজি হলো বাড়িতে থেকে পরে ২০১৮ সালের প্রথম দিন ঢাকায় পা রাখি। ২-১-২০১৮ গুলশান ইয়ুথ ক্লাবে ট্রায়াল দেওয়ার জন্য যাই আলহামদুলিল্লাহ প্রথমেই টিকে যাই।
আলহামদুলিল্লাহ শুরু হলো ঢাকায় প্র্যাকটিস।
মোটামুটি ৩ মাসে একটা ব্যাচ পার করি কিন্তু দ্বিতীয় ব্যাচ ৬-৭ মাস হয়ে যায় পার করতে পারি না হতাশ হয়ে গেলাম।
তখন মনে হলো আমাকে দিয়ে মনে হয় হবে না
আমি মনে হয় পারবোনা।



বলে,
তুমি নিয়মিত ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের লেখা গুলো পড়ো তাই সাহস পাবে।
ভাইয়ের পরামর্শে তাই শুরু করলাম
একদিন স্যারের সেই উক্তিটি সামনে আসলো
তুমি যতবার পড়বে ঠিক ততবার উঠে দাঁড়াবে বলবে আমি খেলব আমাকে দিয়ে হবে আমি খেলবো।
তখনি সাহস করে আবার প্র্যাকটিসে মনোযোগ দিলাম।

পরে টাংগাইল প্রিমিয়ার লিগে ডাক পেলাম।
প্রিমিয়ার লিগ খেলার পরে টাঙ্গাইল থেকে ইন্ডিয়া যাওয়ার চান্স পেলাম ।
পাসপোর্ট করলাম ভিসা লাগালাম ।
২০২০ সালে মার্চ মাসেই যাবো।
কিন্তু মহামারি করোনা হানা দিলো সব শেষ ।
দীর্ঘদিন করোনা থাকায় প্র্যাকটিস অফ করে দিলাম ।


পরে পরিবারের মানুষ সাথে পরামর্শ করে একটা ছোট করে বিজনেস শুরু করলাম হোল সেলের বিজনেস ।
প্রথমে ৬ লাখ টাকা দিয়ে শুরু করেছি ১৯ মাসের মধ্যে ইনশাআল্লাহ আমার বিজনেস ভালো পজিশনে চলে গেছে। আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।


আলহামদুলিল্লাহ স্যারের শিক্ষা নিয়ে আমি একটি সংগঠন করেছি।
এলাকায় মানবিক ও সামাজিক কাজ প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছি।

যেহেতু নদী ভাঙ্গন এলাকা চোখের সামনে বাড়ির শত শত বাড়ি ভেঙ্গে যেতে দেখেছি ।


এবং একটি পরিবার অসহায় হয়ে পড়ায় তাদেরকে ৫৫ কেজি চাউল নগদ ৮৭০০ টাকা দিয়ে সহায়তা করছি।
আরো অনেক ভালো কাজ করেছি।
স্যারের শিক্ষা নিয়ে এলাকায় মানবিক ও সামাজিক কাজ করার জন্য একটি টিম তৈরি করেছি । বতমান সংগঠনের সদস্য সংখ্যা ১৬৫ জন।


ইনশাআল্লাহ দোয়া করবেন নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশনের কর্মকান্ড আমি গ্রাম পর্যায়ে মানুষের কাছে পৌছে দিব ইনশাআল্লাহ।
সবাই আমার ও আমার পরিবারের, প্রতিষ্ঠানের জন্য দোয়া করবেন। আমি যেন স্যারের শিক্ষা নিয়ে আজীবন চলতে পারি।
একজন আদর্শ ভালো মানুষ হতে পারি।

Date:- ১০/০৪/২০২৩ইং
বেলাল হোসেন
ব্যাচ ১১
রেজিঃ৩৪২৪০
উপজেলা কালিহাতি
জেলা টাংগাইল