সব জায়গায় গর্ব করে বলি, আমিই এম এ পাস চা ওয়ালা !!
আমি মো. সহিদুল ইসলাম। আমি ২০১২ সালে ইংরেজি বিষয়ে অর্নাস এবং ২০১৩ সালে একই বিষয়ে মাস্টার্স কমপ্লিট করি। আমি একটি কলেজে প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতা করতাম কিন্তু করোনা প্যানডামিক এর কারনে ২০২১ সালে আমার চাকুরী চলে যায়।
তারপরে ২০২১ সালেই প্রতিষ্ঠা করি অর্ক ডট টেক নামে একটি ই-লানিং প্লাটফর্ম।
এই ই-লার্নিং প্লাটফর্ম থেকে আমি এতটাই ব্যর্থ হই যে, আমি এক সময় ডিসিশন নিয়ে ফেলেছিলাম আত্মহত্যা করার।
যাহোক মনে মনে চিন্তা করলাম আত্মহত্যা করলে তো আর সবকিছুর সমাধান হবে না।
তাই-এই পথ থেকে সরে এসে চিন্তা করা শুরু করলাম কি করা যায়। কারণ ঢাকাতে টিকে থাকতে হলে আমাকে একটা ইনকাম সোর্স বের করতে হবে। তাই প্রথমে চিন্তা করলাম অটো রিক্সা চালাবো পরে চিন্তা করে দেখলাম অটো রিক্সা তো পুলিশে ধরে কারণ এটা তো ঢাকায় নিষিদ্ধ। তাই এই চিন্তা বাদ দিলাম। তারপরে চিন্তা করলাম চায়ের দোকান দিবো কারণ বাংলাদেশের মানুষ পানির পরেই চা পান করে বেশি তাই চায়ের দোকান ভাড়া নেওয়ার জন্যে দোকান খোজা শুরু করলাম। দুঃখের বিষয় চায়ের দোকান দিবো এই কথাটি শুনে কেউ দোকান ভাড়া দিতে চাইত না। অনেক অনেক খোজাখুজির পরে একটা দোকান পাই। চায়ের দোকানের নাম দিবো কি এটা নিয়ে অনেক কনফিউজড ছিলাম।
পরিবার পরিজনের কথাকে অমান্য করে এম এ পাস চা ওয়ালা নামটিকে চুজ করলাম।
আমার শপের বিল বোর্ডে এম এ পাস চা ওয়ালা নামটি দেখে আমাকে অনেক ক্রিটিসাইজ করা শুরু করলো এমনকি অনেক জন মারমুখী আচরণ করলো কারণ আমি এই নামটি দিয়ে নাকি এম এ পাস ডিগ্রিধারীদের আন্ডারস্টিমেট করছি।
যাহোক, কুসুমকুমারী দাশের ’আদর্শ ছেলে’ কবিতার কয়েকটি চরণ মনে পড়ে গেল-
আমার দেশে হবে/ সেই ছেলে কবে/ কথায় না বড় হয়ে/ কাজে বড় হবে
আদর্শ ছেলে তৈরি করতে হলে যে আদর্শ সমাজ ব্যবস্থার প্রয়োজন- এটা মনে হয় আমরা দিন দিন ভুলে যাচ্ছি। শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা এমনিতেই ছোট খাটো কাজ করতে চাই না, কেউ যদি সাহস করে শুরু করে তাহলে আমরা তাকে ডিমোটিভেইটেড করি। তবে অত্যন্ত আনন্দের বিষয় আমাদের দেশে কুসুমকুমারী দাশের “আদর্শ ছেলে” গড়ার কারিগর হিসেবে আবির্ভাব ঘটেছে একটা ফাউন্ডেশনের নাম তার-নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন।
এই মহতী কাজের রুপকার ”উদ্যোক্তা গুরু” ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার।
নিজের বলার মত একটা গল্প ফাইন্ডেশন-আমার জীবনটাকেই চেন্জ করে দিয়েছে। চাকুরী করবোনা চাকুরী দিবো এই কথার অনুপ্রেরণায় প্রভাষকের চাকুরী চলে যাওয়ার পর আর চাকুরীর পিছনে না ছুটে হয়ে গেলাম চা ওয়ালা। এখন এম এ পাস চা ওয়ালাকে নিয়ে প্রতিবেদন করেছে দেশের শীর্ষ পত্রিকা কালের কন্ঠ,প্রথম আলো,জনকন্ঠ,যায়যায় দিন,সমকাল ইত্যাদি। এত এত অর্জন সবই তো ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের কল্যাণে। উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য যা যা বেসিক ফান্ডামেন্টালস জানা দরকার সবই শিখেছি স্যারের ৯০ দিনের ভিডিও সেশন থেকে। এম এ পাস চা ওয়ালা চিরকৃতজ্ঞ নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশনের কাছে।আমার জীবনটাই ভুলে ভুলে ভরা। ভুল শোধরাতে শোধরাতে আমি এখন ক্লান্ত শ্রান্ত। কেন জানি আমি মানুষকে অতি অল্পতেই বিশ্বাস করে ফেলি আর এই সুযোগেই তারা আমার ক্ষতি করে।ভুল করতে করতে কখন যে আমি আমার সহজ সরল জীবনটাকে কঠিন করে ফেলেছি তা টের পাইনি। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি এবং আমরা সাক্ষাৎ পেয়েছি ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের যার ক্যারিসম্যাটিক লিডারশিপ এবং মোটিভেশনাল স্পিচ আমার মত হাজারো হতাশাগ্রস্থ যুবক যুবতীদের জীবনে আশার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে।
যার ফলে, এম এ পাস চা ওয়ালা শপটি আমাকে নতুনভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখাচ্ছে। আমার জীবনের স্বপ্ন বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় এম এ পাস চা ওয়ালার ৬৪ টি আউটলেট , থাকবে,সবার কাছে দোআ প্রার্থী !!!