"আমি একজন কেক আর্টিস্ট"
হাসিনা রহমান লোপা।
কোর ভলান্টিয়ার ও মডারেটর
ব্যাচঃ১২- রেজিস্ট্রেশন নাম্বারঃ ৪১৩১৫
জেলাঃ নারায়ণগঞ্জ, ওনার অফ @Cake Valley
ছোট বেলা থেকেই ভালো স্টুডেন্ট ছিলাম। সততা, সাহসিকতা দায়িত্ববোধ এবং কমিটমেন্ট এর জন্য আমি ছিলাম সুপরিচিত যা আমার আত্মবিশ্বাসের জায়গা কে করেছিল অত্যন্ত দৃঢ়-- আলহামদুলিল্লাহ!
আমার বাবা একজন প্রথম শ্রেনির সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। তার চাকরির সুবাদে বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন স্কুলে পড়ার সুযোগ হয়েছে। যে স্কুলেই পড়েছি-- মেধাতালিকায় ক্লাসের প্রথম তিনজনের মধ্যেই থাকতাম। এরপর SSC, HSC কমপ্লিট করে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স করলাম। স্বপ্ন ছিলো অধ্যাপনা করার। কিন্তু স্বপ্ন পুরণের আগেই বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গেলাম। নিজের পছন্দে -- উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে।
আলহামদুলিল্লাহ-- আমার হাসবেন্ড অনেক বড় মনের এবং উদার মনের --অনেক ভালো একটা মানুষ । পেশায় - ঠিকাদার ব্যবসায়ী।
আমার শশুর বাড়ি অনেক বড় বাড়ি। বড় বাড়ির,বড় বউ,---অনেক দায়িত্ব, অনেক সমস্যা, অনেক সেক্রিফাইস,অনেক ভালোবাসা, অনেক প্রাপ্তি। সবকিছুই অনেক অনেক।
এরকম একটা পরিবারে নিজেকে সামলাতে সামলাতে নিজের স্বপ্ন ভুলে গেলাম যদিও নিজের যোগ্যতা ও হাসব্যান্ড এর সামাজিক পরিচিতির কারণে একটা ভালো চাকরি জোগাড় করা খুব বেশি কঠিন ছিলো না।
বিয়ের আগে থেকেই আমি রান্না ও হাতের কাজে পারদর্শী ছিলাম। টেইলারিং,হাতের কাজ,ব্লক, বাটিক,টাইডাই সবই জানতাম। বেকারি আইটেমের উপর বিভিন্ন কোর্স করেছিলাম ২০১১ সালে-পরিবারের ও বাড়ির সবার কাছে অনেক প্রশংসা অর্জন করলাম। বিশেষ করে আমার কেক সবার কাছে খুব জনপ্রিয়তা পেলো। বড় বাড়ি হওয়ার কারণে আমার কেকের প্রসংশা খুব দ্রুত ছড়িয়ে গেল।
লকডাউনে ঘরে বসে আরো অনেকগুলো কোর্স করলাম। নিজের উপর কনফিডেন্স আরো বেড়ে গেলো। ঠিক সেই মুহূর্তেই বড় বোন হামিদা রহমান এর কাছ থেকে সন্ধান পেলাম প্রিয় ফাউন্ডেশনের।
নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন - উদ্যোক্তা তৈরির কেন্দ্র - তে জয়েন হবার পর স্যারের সেশন দেখে এবং অন্যান্য উদ্যোক্তা আপুদের দেখে সপ্ন দেখতে শুরু করলাম উদ্যোক্তা হবার।
স্যারের প্রতিটি সেশন আমাকে মন্ত্রমুগ্ধ করে ফেললো।
এক অদৃশ্য শক্তি অনুভব করতে লাগলাম।
ব্যাস...
শুরু করে দিলাম উদ্যোক্তা জীবনে পদার্পণ। সেই থেকে শুরু হলো আমার উদ্যোক্তা জীবনের পথচলা।
আমার উদ্যোগের নাম Cake Valley, বয়স তিন বছর।
আমি কাজ করছি কাস্টোমাইজড কেক নিয়ে। ১০,০০০/- টাকা নিয়ে আমার উদ্যোগ শুরু। এখন আমার প্রতি মাসে সেল ৫০০০০/- + আলহামদুলিল্লাহ!
"আমি একজন কেক আর্টিস্ট" এটা বলতে খু্ব গর্ব বোধ করি এখন। আর এটা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র প্রিয় মেন্টর জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার এর কারণে। এই ফাউন্ডেশনে যুক্ত না হলে এটা কখনোই হয়তো সম্ভব হতো না।
আমার স্বপ্ন --বিশাল বড় একটা কেক পার্লার হবে আমার এবং পাশাপাশি আমার মতো শত-শত গৃহিনীদের নতুন করে স্বপ্ন দেখানোর জন্য একটা ট্রেনিং সেন্টার করবো ইনশাআল্লাহ।
আমার স্বপ্ন পুরণ করতে ও আমার উদ্যোগকে দৃঢ়তার সাথে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রিয় ফাউন্ডেশন কে পাশে পাবো আজীবন এই কামনা করছি।
সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।