শেষ বিকেলে ভোরের আলো
হাকীম মোঃ মাসুক মিয়া
ব্যাচ : ২০ - রেজিঃ নং :১১১১২১
জেলা : হবিগঞ্জ
ওনার অফঃ ডিয়ার হেলথ্ কেয়ার লিঃ
একজন সাধারন মানুষের অসাধারন হয়ে ওঠার পেছনে ছোট ছোট অনেক গল্প থাকে, যে গল্প হয় পরিশ্রমের, ধৈর্য্যের, সাহসিকতার।
ছোট বেলার স্বপ্ন ছিলো চিকিৎসক হওয়ার। যদিও মাঝপথে স্বপ্নটাকে হারিয়ে ফেলি এসএসসি আশানুরূপ ফলাফল না হওয়ার জন্য। তবুও হাল ছাড়িনি।ভর্তি হই দেশের অন্যতম প্রতিষ্ঠিত ইউনানী মেডিকেল কলেজে DUMS কোর্সে।
সাফল্যের সাথে কোর্স শেষে যথারীতি শুরু হয় কর্মযজ্ঞ। ২০০৮ সাল থেকে চিকিৎসার পাশাপাশি ভেষজ ঔষধের ব্যবসা শুরু করি,
পরবর্তীতে ইউনানী ওষুধ কোম্পানির সহ কয়েকটি কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসা করে যখন আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হই,তখনই সিদ্ধান্ত নেই, ব্যবসা করব না উদ্যোক্তা হব ।
উদ্যোক্তা হওয়ার শুরুতেই চিন্তা করি কি পণ্য নিয়ে কাজ করা যায়? তখন চিন্তা ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নেই যে, নিজেই ভেষজ পণ্য উৎপাদন করব। মার্কেট রিসার্চ করে দেখলাম যে ত্বক ও চুলের জন্য পণ্যের চাহিদা বর্তমানেও আছে এবং আগামীতেও থাকবে ।
দেশের মানুষের ইন্ডিয়ার পন্যের প্রতি আগ্রহ দেখে আমার পরিচিত কলকাতার একজন সায়েন্টিস্ট এর সাথে যোগাযোগ করে,তার ফর্মুলা অনুযায়ী পন্য উৎপাদন করি।খুব ভাল ফলাফল পাই ব্যবহারকারীদের থেকে।
তখনই সিদ্ধান্ত নেই যে বৃহৎ আকারে বাজারজাত করার উদ্দেশ্যে পণ্য উৎপাদন শুরু করব। আলহামদুলিল্লাহ ২০১৮ সালের প্রথম দিকেই পন্য উৎপাদন শুরু করি। প্রতিষ্ঠানের নাম দিলাম "ডিয়ার হেলথ্ কেয়ার লিঃ"।
ব্র্যান্ড নাম দিলাম ডিয়ার যার বাংলা অর্থ প্রিয়, চুলের জন্য তৈরী করি ডিয়ার হেয়ার অয়েল, ডিয়ার হেয়ার ক্লিনজার, ডিয়ার হেয়ার টনিক এবং ত্বকের জন্য তৈরী করি ডিয়ার ট্যান ফাইটার ( ভেষজ ফেইস স্কাব) ডিয়ার ফেইস ওয়াস, সহ মোট ১২ টা পণ্য।ব্যবসা চালু হওয়ার পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ডিলার নিয়োগ দিলাম।
আলহামদুলিল্লাহ মোটামুটি ব্যবসা রানিং হয়েছিল যখন কিছুদিনের মধ্যেই চলে আসলো মহামারী করোনা। ডিলারদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ও অনেকেই ব্যবসা ছেড়ে মার্কেট আউট হওয়ায় বিশাল অংকের আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হই।চারদিক দিয়ে অন্ধকার নেমে আসলো, ঘুরে দাঁড়ানোর মতন আর কোন পথ ছিল না, তবুও আল্লাহর উপর ভরসা ও নিজের প্রতি বিশ্বাস রেখে সামনের দিকে এগিয়ে চললাম ।
২০১৯- ২০২১ সাল খুবই কষ্টের মধ্যে কাটালেও পণ্য উৎপাদন বন্ধ করিনি। ২০২২ সাল থেকে যে ব্যবসা রানিং হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত দিন দিন পণ্যের চাহিদা বেড়েই যাচ্ছে। কারণ যারাই আমার ডিয়ার ব্র্যান্ডের পণ্যগুলো একবার ব্যবহার করছেন তারাই যেন এর প্রেমে পরে যাচ্ছেন এবং ব্যক্তিমাধ্যম প্রচার করছেন নিজেরাই।
জীবন সৎ ও পজিটিভির কোন বিকল্প নেই। আর এই শিক্ষা পেয়েছি প্রিয় শিক্ষক জনাব " ইকবাল বাহার জাহিদ " স্যার থেকে।আর এগিয়ে চলার অদম্য সাহস পাচ্ছি "নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন, উদ্যোক্তা তৈরীর প্লাটফর্ম থেকে।
পণ্যের গুণগত মান অটুট রাখতে আমি এবং আমরা বদ্ধপরিকর সর্বদা।কারখানা থেকে শুরু করে বিক্রয় ও বিপণন সেক্টরে কাজের সুযোগ করে দিয়েছি শতাধিক বেকার যুবক কে।
সমাজ সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছি বিভিন্ন সম্মাননা।
আগামী ৫বছরে তা আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।
পরিশেষে এটাই বলবো চাকুরী নয়, আসুন উদ্যোক্তা হই ।