পর্দাশীল ঘরোয়া নারী- সফল উদ্যোক্তা
সারাবান তাহুরা
ফুড ট্রেইনার (KDC Academy, আঞ্চলিক সমবায় প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর)
পরিচালিক(মিসবাহুল উলুম মডেল মাদ্রাসার পাঁচদোনা সৈকাদি খন্দকার বাড়ি)
ব্যাচ নং:১৩ - রেজিস্ট্রেশন নং:৬১৪৭৭
জেলা নরসিংদী।
স্বতাধিকারী: khai dai cooking's world
করোনা মহামারীর সময় যখন সমস্ত পৃথিবী থমকে গেছে তখন আমি মাস্টার্স কমপ্লিট করে ঘরে বেকার বসে থাকি।হঠাৎ দেখলাম অনলাইনে অনেক আপুরাই ফুড নিয়ে কাজ করে। তখন এটা দেখে আমিও উদ্বুদ্ধ হই। কারণ ছোট সময় থেকেই আমার রান্নার প্রতি একটা ভালোবাসা ছিল ।বিয়ের পরও সকলে রান্না করে খাওয়াতে ভালবাসতাম।
তখন ভাবলাম যেহেতু আমি রান্নাটা ভালো পারি, রান্নাটা নিয়েই অনলাইনে কাজ করি। আমি ফেসবুকে একটা পেজ খুলি। সেই পেজে রান্নার কিছু ছবি দিয়ে পোস্ট করি। প্রথম অর্ডার আসছিল ৭ই ডিসেম্বর ২০২০ এ পিৎজা ডেলিভারির।আলহামদুলিল্লাহ তারপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।এ পর্যন্ত নারী উদ্যোক্তা হিসেবে পাঁচবার সম্মাননা পেয়েছি।
নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন আমাকে দিয়েছে সম্মান, আমাকে দিয়েছে পরিচিতি। আমাকে দিয়েছে কাজ করার একটা বিশ্বস্ত প্লাটফর্ম। নিজের বলার মত গল্প ফাউন্ডেশন আমাকে স্বাবলম্বী করেছে। আমার আগের অবস্থান থেকে আমাকে আত্মকর্মী ও দক্ষ মানবে পরিবর্তন করেছে।
নিজের বলার মত গল্প ফাউন্ডেশন থেকে আমি শিখেছি কিভাবে সবার সামনে কথা বলতে হয়, কিভাবে ব্র্যান্ডিং করতে হয়, কিভাবে নিজের ব্যবসাটাকে প্রচার করতে হয়।
আমার উদ্যোক্তা জীবনে আমি যখন ভালো পারফরমেন্স করতেছি।ঠিক তখনই পরিবার বাধা হয়ে দাড়ায়।সংসার চাই নাকি কাজ? এইরকম পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে সংসারকেই বেছে নেই।
কারণ একজন বিবাহিত নারীর কাছে স্বামীর সংসার তার কাছে সব ।
টোটাল ৩/৪মাস আমি কাজ করিনি। তখন সবার কাজ দেখলেই আমার কান্না আসতো। পোস্ট না দেয়া স্বত্বেও আমারর অর্ডার আসতো,আর তা ক্যান্সেল করে অঝোরে কান্না করতাম।এখন আল্লাহর রহমতে সব ঠিক হয়েছে। আমি কাজ করছি আগের মত আলহামদুলিল্লাহ।
জীবনে বড় ভুল করি মানুষের প্রতি বিশ্বাস করে। আগে পেমেন্ট না নিয়ে ডেলিভারি দেই। একুশে অক্টোবর ২০২২ এ তিন লাখ ৩৫০০০হাজার টাকার একটা ডেলিভারি দেই। আমাকে তিন লক্ষ টাকা পেমেন্ট করেছে এখন পর্যন্ত তাদের কাছে বাকি টাকাটা পাই।এটাই বড় ভূল জীবনের ।
আর একটা ভুল করেছি ইভালিতে ইনভেস্টমেন্ট করে।
আমার ব্যবসার প্রথম মূলধন ঘরে থাকা উপকরণ। ৫০০ টাকার মতো জিনিস কিনেছিলাম। পিজ্জা বানানোর জন্য।
বর্তমানে আমি কাজ করছি বেকারি, পেস্ট্রি, ফাস্টফুড, কেক,আচার, ফ্রোজেন আইটেম শীতের বাহারি রকম পিঠাপুলি, মোরগ পোলাও,বিরিয়ানী,কাচ্চি, ভূনাখিচুড়ি, ক্যাটারিং সার্ভিস নিয়ে।আলহামদুলিল্লাহ সেলের ৫০% এই গ্রুপ থেকে আসে।
আমি রান্না শিখাই বেকিং, ফাস্টফুড, মাল্টি কুইজিং অনলাইন এবং অফলাইনে।
ব্যবসার দুই বছর পথচলায় বর্তমান মাসে সর্বোচ্চ সেল হয়েছিল একদিনে ৩৫০০০০টাকা।
বর্তমানে মূলধন আছে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার মতো।
জীবনের শত পজেটিভ থাকাটা ১০০% ধারণ করার চেষ্টা করি। আগামী পাঁচ বছরে নিজেকে দেখতে চাই একজন সফল নারী উদ্যোক্তা এবং একজন স্বনামধন্য ট্রেইনার,কালিনার ইনস্টিটিউট এর মালিক হিসেবে।