See More Post

অঝোর ধারায় বৃষ্টি হয়ে ঝরতে চাই

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম 

আসসালামু আলাইকুম 


🥀আমি  প্রথমেই শুকরিয়া জানাই সকল প্রসংশাময় আল্লাহর দরবারে যিনি অশেষ রহমতে আমাদের সুস্থ ও ভালো রেখেছেন ।


🥀 কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি  সকলের আশার প্রদীপ জ্বালানো শ্রেষ্ঠ  শিক্ষক মেন্টর ভালো  মানুষ  গড়ার  কারিগর তরুণ তরুণদের  আইডল  ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার এর প্রতি।


🌹  নিজের বলার মতো একটা গল্প প্লাটফর্মের  আঙ্গিনা জুড়ে,,  

অঝোর ধারায় বৃষ্টি  হয়ে ঝরতে চাই । আামার আগমনী বার্তা দিক ঝর্ণাদের কলতান, আামার  জীবনের নিপুণ গল্প লিখতে চাই

অজানা অজস্র শোক গাঁথা সীমাহীন কষ্ট চাপা পড়ুক এবং রংধনুর মতো  আবির্ভূত  হোক সেই চেনা মুখ। 

 

🍁আমি সাফিনা আকতার সাফি


আজ আমি  আপনাদের জন্য  নিয়ে  এলাম আামার জীবনের 

অজানা কিছু  অসমাপ্ত গল্প । আশা করি সকল প্রিয় ভাই ও বোন গল্পটি  কষ্ট করে পড়ে আপনাদের  প্রিয়  বোনকে উৎসাহিত করে  ভালোবেসে পাশে থাকবেন। 


🍁  আমার প্রিয় বাবার কথাঃ


আমার দাদুর বাড়ি গাইবান্ধা সদরে। 

দাদু বেশ প্রভাবশালী ছিল।  আমার দাদু হিন্দু ধর্ম অনুসারি ছিলেন। আমার  বাবার বয়স যখন  আনুমানিক (৪-৫) বছর। তখন থেকেই বাবা ইসলাম  ধর্মের প্রতি দূর্বল ছিলেন। পরিবার কে ফাঁকি  দিয়ে 

বেশির ভাগ সময়ই সে চুপিচুপি পাশের একটা  মসজিদে নামাজ পড়াতো।  বিষয়টি চোখে পড়ে ওই এলাকার  চেয়ারম্যানের চোখে।  কাউকে  কিছু  না বলে চেয়ারম্যান দাদু  নিয়ে আসে তাদের  বাড়িতে। আল্লাহ তায়ালার মেহেরবানীতে ওই বয়সে বাবার স্বইচ্ছায় দেরি না করে  তাকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করান। আলহামদুলিল্লাহ 

তখন তার বাবা  মানে আমার  দাদু  বাবার ঘটনাটা জানতে পারেন। তারপর বাবাকে পাওয়ার জন্য আইন আদালত পর্যন্ত যান। কিন্তুু তাতে কোন  লাভ হয় না।  অবশেষে সবকিছু  বিক্রি করে স্বপরিবারে ইন্ডিয়াতে পারি  জমান । আমার বড় ফুফির এখানেই বিয়ে হওয়ায় সে এখানে তার স্বামীর কাছেই থেকে যান।  তারপর থেকে বাবার জীবন শুরু হয়  চেয়ারম্যান দাদুর  কাছে। 


নতুন একটা  পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে  অনেক বাঁধা  পেরিয়ে বড় হতে  থাকে  ওই পরিবারে।  একদিন ইন্ডিয়া  থেকে খবর আসে যে আমার দাদি মৃত্যু শয্যায় বাবাকে শেষ বারের মতো  দেখতে  চান। বাবা খবর টা শুনে দাদিকে দেখতে  যাওয়ার জন্য  সব কিছু  ঠিক করেন, কিন্তু  কেউ  যেতে দেয়নি  এই ভেবে  যদি আর ফেরত  না আসে। শেষ বারের মতো  তার মাকে আর দেখা হলো না।  এমনি ভাবে  কিছু দিন যাওয়ার পর বাবা প্রাইমারী স্কুলের সহকারী  শিক্ষক পদে যুক্ত হলেন।  কয়েক বছর চাকুরী করার পর  প্রধান শিক্ষক হয়ে গেলেন।  আলহামদুলিল্লাহ  আল্লাহ তায়ালা 

বাবার  হজ্জ করার তৌফিকও দান করছেন। এই হলো আমার  সুপার হিরো প্রিয় বাবা যার গুণাবলি  লিখে শেষ করা যাবে না। 


🍁আমার প্রিয় মা:


মা তো মা তার কোন তুলনা হয়না।আমার  নানু গ্রামের মধ্যে  মোটামুটি প্রভাবশালী  ছিলেন । দুঃখের বিষয়  আমার  মা যখন  একটু বুঝতে  শিখেছেন তখন রাজশাহীর কোন  এক হাসপাতালে  চিকিৎসারত অবস্থায় আমার নানু মারা যান। ওই সময়ে  তাকে আর বাড়িতে আনা হয়নি। রাজশাহীর কোন এক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। আনার জন্য অনেক চেষ্টাও  করেন নানি কিন্তু  সমাজের কিছু লোক ও আত্মীয় স্বজনরা যারা নিজের স্বার্থের জন্য অন্যের ক্ষতি করে তাদের কারণে আনা যায়নি। তার পর বাবা হারা তিন  বোন  বড় হতে  থাকেন। বড় খালামণি মারা যান। আমার  মা খুব ছোট্ট বয়সে  আমার বাবার  জীবনে সঙ্গী হয়ে তার পাশে  দাঁড়ায়।

 মা  আমাদের নিয়ে  ও নানি মাকে নিয়ে  বগুড়ায় চলে  আসেন।

  

🍁 আমার পথ চলা শুরু 


আমার বাড়ি বগুড়া জেলায় এসপি ব্রিজ সংলগ্ন  দক্ষিণ নাটাই পাড়া (বউ বাজার)  বগুড়া  সদর বগুড়া। কিছু দিন  গ্রামের বাড়িতে থাকলেও , আমার  যখন জন্ম হয় । তখন গ্রামের বাড়িতে মা তখন  বেশি অসুস্থ হয়ে পরেন এজন্য  তখন বগুড়া  মিশন  হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই আমার জন্ম হয়। আমরা চার ভাই বোন ছিলাম। কিন্তু এক বোন চার বছর বয়সে অসুস্থ হয়ে মারা যান।

তখন  আমার  মা প্রায়  পাগলের মতো হয়ে গিয়েছিলেন। সেই   সুবাদেই  বগুড়া আসা। আমরা এখন  দুই  বোন ও এক ভাই।  ভাই বোনের মধ্যে  আমি  সবার বড়। আামার ছোট  ভাই, তারপর ছোট বোন টা। মধ্যবিত্ত পরিবারের মাঝেও খুব আনন্দ মুখরিত ভাবে  দিন  কাটতো আামার।  বাবা মার আদর্শই ছিল আমার চলার পথের  দিশা। পাড়ার ছোট বড় সকালের  সাথে মিশতাম। খুব ভালোবাসতো আমায়। বাবার আদরের রাজকন্যা ছিলাম আমি।

 আমার  স্কুল জীবনটাও অনেক সুন্দর কেটেছে। কিন্তু ভাগ্যে মিলেনি দাদু- দাদি,ফুফি চাচ্চুর স্নেহের পরশমাখা আদর ও ভালোবাসা। মিলেনি নানু ও মামার আাদর। ভাবতেই যেন চোখের কোণে অশ্রু জমা হয়। 


আমি যখন ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী । তখন আামার  জীবনের নতুন  এক মোর নেয়। আমার সামনে তখন  প্রি-টেস্ট পরীক্ষা। যথারীতি ভাবে পড়াশোনা চলছে। একদিন হঠাৎ করে  আমাদের বাসায় একবড় ভাইয়া তার বন্ধুকে নিয়ে বেড়াতে আসেন। যেহেতু  আমার পরীক্ষা সামনে তাই পড়ার টেবিলে পড়ছিলাম। তারপর শুনছিলাম পাশের রুম থেকে তাদের কথা। ভাইয়ার বন্ধু বলছিল তার বড় ভাই  আমেরিকা যাওয়ার ডিভি ওয়ান লটারি  পেয়েছে তাই তাদের  বাড়ির সকলেই চায় তাদের ভাইয়াকে বিয়ে করাতে। আর তাদের  আবদার ছিল আমেরিকা যাওয়ার ব্যাপারে যা খরচ  হবে তা আমাদের কে দিতে  হবে। কথাগুলো শোনার পর আমার হাত পা

 যেন ঠান্ডা  হযে আসছিল।  কোন ভাবেই যেন স্বাভাবিক হতে পারছিলাম না। এভাবে  একদিন  দুইদিন যায় আমার পরীক্ষা কাছে আসতে  থাকে তেমনি ভাবে  আমার  বিয়ের কথা ঠিক  হতে  থাকে। তারপর  ঠিক পরীক্ষার শেষ দিনে আামার বিয়ে হয়ে যায়। বলতে পারিনি কিছু। কারণ,  আমি আমার বাবাকে  অনেক ভালোবাসতাম।

তারপর শুরু হয় শ্বশুর বাড়ি -বাবার বাড়ি । আবার  আমার সামনে  এস এস সি পরীক্ষা। আমার  মা একদিন  হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে যায়।  ডাক্তার বলেন পিত্ত থলিতে পাথর হয়েছ।

 

তখন  আমার এস এস সি পরীক্ষা শেষ। আমার  মার অপারেশন ভালো ভাবে হয়ে যায়। কিন্তু  আমার হাসবেন্ডের যাওয়া হলো না আমেরিকায়। 😠১৯৯৫ সালের ডিভি ওয়ান লটারিতে তার  নাম ওঠে। তার  কেস নাম্বার ছিলো -৩১। তিনি অত্যন্ত  ভাগ্য বান ছিলো।কিন্তু তার একটা  ভুলের কারণে এভাবে তার  আমেরিকার যাওয়ার স্বপ্ন গুলো এক নিমিষেই যেন শেষ হয়ে যায়। প্রচন্ড পরিমানে আঘাত পায়। এমতাবস্থায় পাশে থেকেছি আমি প্রতিটা মূহুর্ত। অনেক অনেক বেশি ভালোবাসতাম। ভালোবাসি এখনো, বাসবো সারাজীবন। 


🍁শুরু হলো জীবনের নতুন মোর। কিছু হতাশা কেটে  যাওয়ার পর। মাত্র ৮০০ টাকা বেতনের  ছোট্ট একটা কাজ  শুরু করলো।কোন রকম ভাবে চলছিল। এর মধ্যে  আমার  এস.এস.সি এর  রেজাল্ট বের হলো। ছাত্রী হিসাবে মোটামুটি ছিলাম। বাবা টাকা দিলেন কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য। তারপর এইচ.এসসি তে ভর্তি হয়ে  গেলাম। তারপর চয়েস নামক একটা  কোম্পানিতে জয়েন করে তিনি  চলে যান ঢাকাতে । এখানে যে বেতন পায় ঢাকা শহরে থেকে হিমসিম খেতে হতো। আমাকে অল্প  কিছু টাকা পাঠাতো।এর পাশাপাশি বাবা আমাকে  সাহায্য করতো।এভাবে এক কোম্পানি থেকে  আরেক কোম্পানি, এক জায়গা থেকে  আরেক জায়গায়। আমিও তার সাথে মাঝে মাঝে চলে যেতাম। এর মাঝে আলোকিত  করে আসলো আমার ছোট্ট সোনামণি  আমার ছেলে।যাকে পেয়ে  আমার সকল কষ্ট গুলো কে  আড়াল করে ফেললাম।বড় হতে  থাকে।এর মধ্যে  এইচএসসি কমপ্লিট করলাম ভর্তি হলাম ডিগ্রিতে।এই অবস্থায় আামার হাসবেন্ড কোন মাসে টাকা পাঠাতো,কোন মাসে  পাঠাতো না।তখন এই জীবনের প্রথম বয়স্কদের গণশিক্ষা স্কুলের এক সপ্তাহে  ট্রেনিং করে শিক্ষক হিসেবে কাজ করতে 

লাগলাম।অনেক ভালো লাগতো।ছেলেটা কে স্কুলে ভর্তি  করিয়া  দিলাম।এবার  খরচ বেড়ে  গেল।আমার বেতন মাত্র ৫০০ টাকা পেতাম। তিনি  যে টাকা পাঠাতেন তাতে সংসার  চলতো না।এবার  বগুড়া টেকনোলজি ডেন্টাল বিভাগের অফিসিয়াল হিসাবে কাজ শুরু করলাম।এখানে এসে কম্পিউটারে কাজ করতে  হতো। কিন্তু আমি তো পারতাম না। তখন ম্যাম প্রতিদিন অফিস শেষ করে তার বাসায় নিয়ে গিয়ে কম্পিউটার শেখাতেন।  ভালোই চলছিল। কিন্তু বেশি দিন করতে পারি নি। এবার ছেলের থ্রি এ্যাডমিশন  ভর্তি  সামনে। সব বাদ দিয়ে একটি  বছর অনেক পরিশ্রম  করলাম।আল্লাহকে অনেক  ডাকলাম। ইনশাআল্লাহ ছেলে ৯ম তম স্থান করে নেয় জিলা স্কুলে । এবার একটু নড়ে চড়ে  উঠে পড়লাম। 


ছেলেকে প্রথমে কুরআন শিক্ষা,৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়া শিখালাম।তারপর ভর্তি করে দিলাম বিভিন্ন বিষয়ে যেমন  ছবি আঁকা, আবৃত্তি, অভিনয় ও গান শেখা।ওর এত প্রতিভা ছিল যে ও সব কিছুতে ভালো করতো। বিভিন্ন জায়গায় অংশ গ্রহণ করতো। কিন্তু অনেক খরচ বেড়ে যায়। ছেলের  চান্স পাওয়টা আমার  সামনে  প্রবল  শক্তি হিসেবে  দ্বার করালাম। ছেলেকে পড়ানো এ্যাডমিশনের পড়াটা আমার  কাজে  লাগানোর  চিন্তা  ভাবনা করলাম।বাবা আমাকে একটা টিউশনি  ধরিয়ে  দিলেন। তার বাসায় গিয়ে পড়াতে হবে। শুরু করলাম।এভাবে  দিনরাত পরিশ্রম করতে  লাগলাম।ছোট ভাইদের সাথে  মিলে একটা কোচিং দিয়ে  ফেললাম কিন্তু সেটাও পরবর্তীতে বন্ধ হয়ে যায়।


🍁এভাবেই প্রতিটা মূহুর্তে  বারবার পড়ে  যাওয়ার পর  আবার উঠে দাঁড়িয়েছি। এবার আবার উঠে দাঁড়ালাম। এবার  আমার সুপার হিরো বাবা আমাকে সামনের পথ চলার  জন্য অনেক সাহস দিলেন।

আবার টিউশনি শুরু করলাম। অন্য একটা কোচিং এ যুক্ত হলাম। দিন রাত এভাবে পরিশ্রম করতে থাকলাম। এভাবে কয়েকটা বছর কেটে  গেল। আমার  ছেলেটা এবার এস এস সি পাশ করলো। জিপিএ ৫ পেয়ে মায়ের  আনন্দকে বাড়িয়ে দিল। এবার কোচিং  ছেড়ে একটা স্কুলে  শিক্ষক হিসেবে  জয়েন করলাম। ছয় মাস পরে। আমি  বর্তমানে বগুড়া যে স্কুলে  আছি (ইউনিক পাবলিক স্কুল) সেখানে  আবার নতুন ভাবে  শিক্ষক হিসেবে জয়েন করি। এখানে  আমার সহপাঠীদের  ভালোবাসায়  অনেক উৎসাহ নিয়ে কাজ করতে পারি। স্টুডেন্টদের স্নেহমাখা ভালোবাসা ও গার্ডিয়ানদের ভালোবাসা আমি  এক আনন্দময় ভাবে সময় কাটাতে লাগলাম।টিচারের পাশাপাশি বাসায় টিউশনি করতাম।এভাবে ভালোই  চলছিল। ছেলে এবার এইচ. এসসি পাশ করলো। এবারো জিপিএ ৫ পেল। এবার চললো ইউনিভার্সিটির পরীক্ষার প্রস্তুতি।   ঢাকায় কোচিং করলো। এবার ছেলেটা এই প্রথম বারের মতো আটকে গেল। এবার মিললো না কোন ইউনিভার্সিটিতে। দ্বিতীয় বার ইনশাআল্লাহ  চান্স পেয়ে যায়। ছেলের  নাম - কাজী মো. ফারহীন এহসান সুপ্ত। এখন বর্তমানে হাজী মুহাম্মদ দানেস সাইন্স এন্ড টেকনোলজি ইউনিভার্সিটিতে( ফ্যাকাল্টি-সি এস সি ডিপার্টমেন্ট -ইসিই) নিয়ে দ্বিতীয় বর্ষে (১৯তম batch )অধ্যায়ন রত আছে। 


🍁এবার নতুন রঙে রাঙিয়ে তুললো করোনা ভাইরাস। সব কিছু  যেন এলোমেলো করে দিলো। থেমে গেল জীবন চলার পথ। বন্ধ হয়ে গেল স্কুল ও টিউশনি । আমার কিছু জমানো টাকা ছিল বাসায় সেটা দিয়ে  চলতে  থাকলাম। কয়দিন  আর এভাবে  চলে ।  তিনি শুধু  কিছু  টাকা  পাঠিয়ে  দিয়ে দায়িত্ব  শেষ করতেন।  ছেলের কোন খোঁজ  নেওয়ারও  সময় নেই  তার। একসময় টাকা  শেষ  হয়ে গেল। 


২০২০ সালের আগস্ট মাসে বর্ষার সময়। ঘরে আমার রান্না করার  মতো কিছু  ছিল না। বাহিরে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছিল। আমার  বাসা থেকে কয়েকটি  বাসা পরেই আমার বাবার বাসা। উপায়  না দেখে  বৃষ্টির মধ্যে চলে গেলাম বাবার বাসায়। ওখান থেকে  কিছু খাবার নিয়ে আবার বাসায় আাসি।এই বৃষ্টির মাঝে  বোঝা যায় নি, কোনটি চোখের পানি - কোনটি বৃষ্টির পানি। বাসায়  এসে  ভাবলাম কিছু  একটা করতে  হবে। কি করবো বুঝতে পারছিলাম না।


এবার আমার  মা ২০০০/= টাকা দিয়ে  বললেন  কিছু  একটা  কাজে লাগাও প্রথমে শুরু করলাম নিজের হাতে  বানানো পার্টি  মোমবাতি কিন্তু  লকডাউনে খুব একটা  সারা  পেলাম না। এবার কিছু  টাকা  ব্যাংকে জমা ছিল।  উঠিয়ে  ফেললাম।  তখন আামার ছোট ভাই  বললো  দেখো কাপড়  দিয়ে  কিছু  করতে পারো কিনা। শুরু করলাম কিছু থ্রি পিচ এর কাপড়  নিয়ে  নিজের হাতে কিছু  ডিজাইন করে  সেগুলোর উপরে  সুতার কাজ করেছিলাম। মোটামুটি  বিক্রি হয়ে  গেল  কয়েকটা থ্রি  পিচ। তখন লাভের  টাকা সহ আরও কিছু টাকা এক জায়গায় করলাম। এবার একটু  রিস্ক নিয়ে  ফেললাম। ৫০,০০০ হাজার টাকার  প্রাইড শাড়ি ও ওরগেন্ডি কাপড় কিনে  ফেললাম।  এগুলো  কাপড় দিয়ে কিছু  শাড়ী ও থ্রি পিচ  করে ফেললাম । এখন  আমার কিছু  দক্ষ কর্মী দিয়ে  সুতা, 

হেন্ডপ্রিন্ট ও ব্লক এর কাজ কমপ্লিট করে ফেললাম। এখন কোথায়  বিক্রি করবো এতো গুলো  কাপড়। এবার শুরু  হলো নানান জনের  নানান  কথা। কিন্তু  আমার  বাবা  আবার  সাহস যোগালেন। অনেক চেষ্টা  করার একমাস পর  ঢাকায়  এক কাজিন  এর কাছে  ফোন  দিয়ে  সব খুলে বললাম। তখন  বললো  তুমি  কাপড় গুলো নিয়ে  চলে আসো আমি ব্যবস্থা করে  দিচ্ছি। তখন  নিরুপায় হয়ে  ফোন দিলাম  আমার  হাসবেন্ড এর কাছে ঢাকায় আমার সাথে  যাওয়ার জন্য  কিন্তু না করে  দিলো  যেতে  পারবে না। তখন  আমার দিকে  তাকিয়ে  আামার বাবা বললো। আমি  বাবা  থাকতে তোমার  টেনশন করতে  হবে না। কয়েক  দিন আগে আমার  নানী স্টোক করেন।সেই  রোগীকে রেখে একজনের  উপর  দায়িত্ব  দিয়ে  আমার  বাবা মা দুই জনেই সাথে  ঢাকায় চলে  গেলাম। আমার  বোন জামাই এক অনলাইনের মাধ্যমে দুই তিনটা  কাপড়  রেখে  সব গুলো বিক্রির ব্যবস্থা করে  দিলেন ।আশার আলো নিয়ে  বগুড়ায় আসলাম।  বাসায়  এসে  ব্লক ও হ্যান্ডপ্রিন্টের কাজ শিখে  ফেললাম। এবার  হঠাৎ করে আমার হাসবেন্ডের চাকরীর সমস্যা হলো।বাসায়  ছয়মাস বসে রইলো।এবার ব্যবসার টাকা থেকে সংসার  চালাতে লাগলাম।  কিন্ত ব্যবসার টাকা দিয়ে সব খরচ চালানো সম্ভব হচ্ছিলো না। আবার হতাশায় পড়ে গেলাম।


🍁 এবার  মনে পড়লো  প্রিয় স্যারের ইউটিউবে দেখা কিছু  ভিডিও এর কথ। মাঝে মাঝে শুনতাম স্যারের কথা গুলো। অনেক ভালো লাগতো। একদিন  আমি ছেলের  সাহায্য নিয়ে ১৪ তম ব্যাচে রেজিষ্ট্রেশন করে ফেললাম। নিজের বলার মতো গল্পের প্লাটফর্ম থেকে  আমি যেন  নতুন করে স্বপ্নের জাল বুনলাম। মনে হয়  আমি আবার ঘুরে দাঁড়াবো। এই প্লাটফর্ম থেকে আমি যা শিখছি তা বলে শেষ করা যাবে না।   শুধু এইটুকু চাওয়া আামার। আমি বাকী জীবন টুকু যেন হাসবেন্ডকে নিয়ে  ভালো থাকতে পারি।


🌹প্রিয় মেন্টর ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের কথা


 * প্রিয় শিক্ষক ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারই পারেন নিরব নদীর জীর্ণতা কাটিয়ে শোনাতে পারেন  মিষ্টি মধুর কলতান। তপ্ত মরুর বুকে ঝড়াতে পারেন শান্ত শীতল বর্ষা। প্রিয় স্যারের প্রতি রইল আমার অন্তরের অন্তস্তল থেকে কৃতজ্ঞতা ও গভীর শ্রদ্ধা ভরা ভালোবাসা।  আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রিয় মেন্টরের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। 


সকল প্রিয় ভাই ও বোনের প্রতি রইল   প্রাণ ঢালা শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।  আল্লাহ তায়ালা আপনাদের সকলকে তার হেফাজতে রাখুন। 


পরিশেষে বলতে  চাই আমি নিজেকে একজন ভালো মানুষ হিসেবে  গড়ে তুলতে পেরেছি। প্রিয় ভাই ও বোনদের ভালোবাসা পেয়ে,  আমার জীবন কে বদলে  ফেলেছি। আমার জীবনের গল্প লেখার মাঝে ভুল করে থাকি তাহলে ভালোবেসে ক্ষমা করে  দিবেন। 


📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬১২

Date:- ০২/০৯/২০২১

🌹সাফিনা আকতার সাফি 

ব্যাচ নংঃ ১৪

রেজিষ্ট্রেশন নংঃ ৬২৯৬৯

রক্তের গ্রুপঃ  B+

 জেলাঃ বগুড়া 

বর্তমান অবস্থানঃ বগুড়া সদর বগুড়া

ফরিদপুর জেলা টিম কর্তৃক আয়োজিত বৃক্ষরোপন কর্মসূচি -২০২৪

ইনশাআল্লাহ ফরিদপুর জেলার বাকি ৮টি উপজেলায় এই কর্মসূচি চলমান থাকবে। অনেক বেশি ধন্যবাদ Iqbal Bahar Zahid স্যার কে ॥

পর্দাশীল ঘরোয়া নারী- সফল উদ্যোক্তা

আমি রান্নাটা ভালো পারি, রান্নাটা নিয়েই পেজ খুলি অনলাইনে কাজ করি। প্রথম অর্ডার আসছিল পিৎজা ডেলিভারির। আলহামদুলিল্লাহ তারপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ।