See More Post

আলহামদুলিল্লাহ, যে বাড়িতে কাজ করেছি ভাগ্য আমাকে সেই বাড়ির আজ জামাই করেছে। কারণ আল্লাহর খেলা,,,,,, বুঝা বড় দায়,,

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

     আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহ

            🌺একটু খানি (ট্রাজেডিময়) জীবন গল্প🌺

    🌹🌹 আলহামদুলিল্লাহ আশা রাখি আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনারা সবাই ভালো আছেন। 

আলহামদুলিল্লাহ আমিও আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি....

     🌹🌹 সর্বপ্রথম লাখো কোটি শুকরিয়া জানাই সেই মহান আল্লাহর  প্রতি যিনি আমাদেরকে সৃষ্টির সেরা মাখলুকাত হিসেবে প্রেরণ করেছেন এবং এই অসুস্থ পৃথিবীতেও সুস্থ রেখেছেন আলহামদুলিল্লাহ...

     🌹🌹 আন্তরিক শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি

👉বাংলার যুব সমাজের আইকন,,

👉বাংলার যুব সমাজের মডেল,, 

👉বাংলার যুব সমাজের প্রেরণার বাতিঘর,, 

👉বাংলার যুব সমাজের হৃদয়ের স্পন্দন,,

👉বাংলার যুব সমাজের উদোক্তা জীবনের রাহবার,,

          সর্বোপরি আমার একান্ত শ্রদ্ধাভাজন ওস্তাদ জনাব  ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার এর প্রতি।

          যার অক্লান্ত চেষ্টা ও পরিশ্রমের ফলেই আজ বাংলার যুবসমাজ হতাশা গ্লানি ও দুঃখময় জীবনকে দুমড়েমুচড়ে দিয়ে  নতুন করে স্বপ্নের বীজ বপন করা শুরু করেছে। "নিজের_বলার_মত_একটা_গল্প_ফাউন্ডেশন " এর মত একটি সুন্দর প্ল্যাটফর্ম এর মাধ্যমে। 

         🌹🌹 আমি সবসময়  আল্লাহর দরবারে আমাদের সকলের চোখের মণি শ্রদ্ধেয়  Iqbal Bahar Zahid   স্যারের সু-সাস্থ্যতা কামনা করি যেন  আল্লাহ তায়ালা  স্যারকে নেক হায়াত দান করেন। 

আমিন.,,

 🌺শুনুন তাহলে আমার ভাঙ্গা গড়া জীবনের গল্প🌺

👉আমার পরিচয়ঃ

                আমি মুহাঃ আব্দুল আলীম, বর্তমানে একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জব করছি। আমরা ২ ভাই, ২বোন, আমার বোন দুটো বড় আমি ৩ নম্বর এরপর আমার একটা ছোট ভাই। 

👉আমার প্রিয় মাঃ

                আমার মা এক্সুয়ালি লেখা পড়া জানেনা। তবে তিনি সন্তানদের লেখা পড়ার ব্যপারে অত্যান্ত সচেতন ছিল। আমার বোন দুটো ভালো মেধাবী ছিল কিন্তু আমাদের দারিদ্র্যতার নির্মম কষাঘাতে অল্প বয়সে তাদের শশুরালয়ে যেতে হয়েছিল। আমার মা নিজে না খেয়ে আমাদের কে মানুষ করেছে। তিনি অত্যান্ত সাদাসিধা ও সদালাপী আমার মা আমার কাছে পৃথিবীর মধ্যে সেরা মা। পড়াশোনার জন্য আমার মা আমাকে অনেক পিটাইছে দুঃখ জনক হলেও সত্য মায়ের পিটানি না খেলে হয়ত আজ কামিল পাশ ও করতে পারতাম না অন্যদিকে এমএ পাশ ও করতে পারতাম না। আমার মায়ের সপ্ন ছিল এক ছেলেকে আলেম অন্য ছেলেক হাফেজ বানাবে। আমার মায়ের সপ্ন সত্যি সত্যিই পূরন হয়েছে। 

👉 আমার বাবাঃ

                আমার বাবাকে আমাদের এলাকার সকলে  মাস্টারমশাই বলে ডাকে। কেননা আমার বাবা ছিলেন একজন শিক্ষক। আমার বাবা এক মাদ্রাসায় চাকরি করতেন। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস। আমাদের পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে একটা সময় মাদ্রাসার চাকরি ছেড়ে দিয়ে গ্রামের পাঠশালায় শিক্ষকতা করতেন। 

🌷কারণ তখন ওই মাদ্রাসায় কোন এমপিও ছিলনা বেতন ও ছিল না। একারণেই আমার বাবা চাকরি ছেড়ে দিয়ে গ্রামে পাঠশালা প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানে ছাত্র-ছাত্রী পড়িয়ে যে বেতন পেতেন তাতে আমাদের সংসার চলতে লাগলো। কিন্তু একটা সময় আমরা চার ভাই বোন হওয়ার কারণে তাছাড়া আমাদের দাদা- দাদি সহ এত বড় পরিবার আব্বুর সামান্য বেতনে সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছিল। তাই আব্বু সেটাও ছেড়ে দিয়ে দিনমজুরের কাজ শুরু করলো। দুঃখজনক হলেও সত্য যে আব্বুর হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান আজ অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা  চাকরি করছেন কিন্তু আজ আব্বু সেখানে নাই। তার একমাত্র কারণ দারিদ্রতা। আমার আব্বুর হাতের লেখা অত্যান্ত সুন্দর।

🌷সবাই বলে আমার আব্বুর হাতের লেখা ভালো বলে আমাদের ৪ ভাই বোনের লেখা ভালো হয়েছে। যাইহোক আমার আব্বু ভালো ইংলিশও বলতে পারেন। তার টিসিং ক্যাপাচিটি অনেক হাই। আমার আব্বুর হাতে গড়া অনেক ছাত্র-ছাত্রী বর্তমানে অনেক ভালো ভালো জায়গায় জব করতেছে।

ঢাকা কলেজের এক শিক্ষক ও আব্বুর ছাত্র। আমার বড় আপুর বিয়ে তে তাকে দাওয়াত দিয়েছিল। বিয়ে শেষে যখন বিদায় নিবে দেখলাম তিনি আমার আব্বুর পায়ে কদমুসি করছেন। আমি সহ উপস্থিত সবাই অবাক। ছোটকালের শিক্ষককে এত মর্যাদা দিতে দেখে  আমি অভিভূত হয়েছিলাম। সত্যিই অসাধারণ ছিল সেই  মুহূর্ত টা। এরপর আব্বুর জড়ায় ধরে কেঁদে ফেললো এবং বল্লো স্যার আপনার কাছে আমি চির ঋনি। আমার জন্য দোয়া করবেন। 

        🌺শুনুন তাহলে আমার ছোট কালের গল্প🌺

        আমি ছোট কাল থেকে একটু দুরন্ত স্বভাবের ছিলাম। খেলাধুলা, গাছে উঠা ইত্যাদি ছিল আমার কাজ। বই পুস্তক নিয়ে আমার মা স্কুলে পাঠাত কিন্তু স্কুলে না যেয়ে খেলাধূলা করতাম অথবা বই গুলো গাছের নিচে রেখে গাছে উঠে কুহু কুহু করে ডাকা, হুজুরদের মত ওয়াজ করা, গজল গাওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। 

🌷এদিকে কেউ আমাকে দেখলে বাড়িতে এসে মাকে বলে দিত। স্কুল যখন ছুটি হত তখন বাড়ি ফিরতাম। বাড়ি ফিরলেই আজও মার কাল ও মার। 

ওরে আল্লাহ,,,,,,, 

আমাদের স্কুলের পাশে একটা পুকুর আছে মা ও আপুরা আমাকে যখন ধরে বান্ধে ওই পর্যন্ত যেই নিয়ে যেত বই খাতা টুপি সব ফেলে দিয়ে দিতাম আজও দৌড় ,,,,, কালও দৌড় । সেদিন আমার আর খুঁজে পাবে না। রাত হলে আমার বড় কাকির ওখানে যেয়ে শুয়ে পড়তাম। মা এলে কাকী বলতো ও ঘুমাইছে। সকালে কাকী আমার সাথে করে বাসায় নিত আর বলে আসত,,,,, খবরদার ওর গায়ে হাত দিবানা কিন্তু। যাইহোক 

🌷এখন আমরা ঐ পুকুর পাশ দিয়ে গেলে মা ও আপুরা  এখনো বলে এই পুকুরে  তোর কত জামা কাপড় ও বই পুস্তক যে আছে তার কোন ঠিক নেই। 

সেটা বলা মাত্রই সকলে হু হু করে হাসতে শুরু করে।

গত বছরও একই ঘটনা ঐ পুকুর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সাথে আমার ৩ বছরের মেয়েও  সকলের সাথে মনের অজান্তে হাসতে শুরু করে। ওর আম্মু মেয়ের সামনে গল্প বলছে তোমার আব্বু এই,,,এই করতো। 

আমার মেয়ের একটা স্বভাব আছে ভাত খাওয়ানোর সময় গল্প বলতে হবে তো ওর আম্মু বানিয়ে বানিয়ে গল্প বলে খাওয়ায়।

এখন সে বলে আম্মু আব্বুর ছোট কালের দুষ্টুমির গল্প শোনাও,,,, যদি না বলে সে ভাত খাবেই না,,,,,,, 

🌷আমাকে আমার এলাকার লোকজন "গাইছো" বলে ডাকত। গাছে ওঠা ছিল আমার অন্যতম একটি শখ।

গ্রামের বড় বড় নারকেল গাছ ও বড় বড় তাল গাছে উঠেতে আমারই ডাক পড়তো কি আর করার। আমিও মজা করে চলে যেতাম।  তাল গাছের মাথায় উঠে প্রথমে একটি তাল কেটে খাওয়া  ছিল অন্যতম একটা আনন্দ। 

🌷গাছে ওঠা ছিল আমার নিত্যনৈমিত্তিক ব্যপার,,,,, আমার দাদি ছোটকালে সারাদিন আমার পিছে পিছে ঘুরতো এমনকি গাছে যাতে না উঠতে পারি সেজন্য গাছে গাছে কাঁটা বেঁধে রাখতো। একদিন আমি এক গাছে বসে আছি হঠাৎ আমার এক কাকা দিছে তাড়া ওমনে গাছ থেকে দিছি লাপ ঠিক "স্পাইডার" ম্যানের মত,,,,,, 

সামান্যর জন্য প্রানে বেচে গেলেও দৌড় দিয়ে আমাদের গোয়াল ঘরে ডুকতে যেয়ে আমার মাথায় চালের এক কড়া ঢুকে যায় এবং সেখানে আমি বেহুশ হয়ে পড়ে যায়। আজও আমার মাথায় সেই দাগ রয়ে গেছে। সেদিন দুই দুই বার বড় বিপদ থেকে আল্লাহ হেফাজত করেছিল। 

🌷এছাড়াও কাদামাটি নিয়ে খেলা করা ছিল একটা নিত্য নৈমিত্তক ব্যাপার,,, কাদাদিয়ে বিভিন্নরকমের মিষ্টি বানানো,,,, টেলিভিশন বানানো,,,, ধান ভাঙ্গানো কল বানানো,,,, আমার এক কাকা ছিল,,, ওরা মিষ্টি বানাতো কাদামাটি দিয়ে যখন রোদে শুকিয়ে যেত তখন  আমি ওদের কাছ থেকে পাইকারি কিনতাম,,,, টাকা ছিল চকলেট এর খোশা।  

এ সব নিয়ে আমরা আবার সাপ্তাহিক হাট বসাতাম। সত্যি সত্যিই অনেক আনন্দের ছিল ছোট কালের সেই দিন গুলো।

মনে পড়ে যায় সেই সোনালি মাখা,,,,,,,,,, দিনগুলোর কথা,,,,,

🌷এলাকায় যখন মাহফিল হত আমরাও মাহফিল করতাম। কাঁদা দিয়ে মাইক সেট বানাতাম, আমি সহ আমার অনেক পার্টনার ছিল। এর মধ্যে আমরা চারজন  ছিলাম ওয়াজ গজল ইত্যাদি বলতে পারতাম। আমরাই মাহফিলের বক্তা হতাম।

🌷বক্তাদের চা দেওয়ার জন্য চা তৈরি করতাম কি দিয়ে জানেন? 

আখের গুড় দিয়ে। কিজে মজা লাগত সেই  সময় টা,,, একদিন আমাদের ভিটের উপর মাহফিল হচ্ছিল মাহফিলে টাকা তোলার দায়িত্ব আমার ছিল। আমরা কাদার মাইক দিয়ে ওয়াজ মাহফিল,,,,বিশাল ব্যপার!!!!! 

,,,আমাদের এক ভাই  এসে দ্যাখে আমরা ওয়াজ মাহফিল করছি,,, তিনি গ্রামে গ্রামে মাইকে আইসক্রিম বিক্রি করত। তার একটা মাইক ছিল তখন সে বাড়ি গিয়ে মাইকটা নিয়ে আসে। বেশ জমে উঠল,, আমাদের পাড়ার মা- বাবা,ভাই বোনেরা আস্তে আস্তে সবাই এসে জড়ো হলো প্রায় ১৫০-২০০ লোক হবে!!

এবার আসল আমার পালা আমি কিছু সময় ওয়াজ করলাম। ওয়াজ মানে,,,, ওই,,, হুজুরদের থেকে যা শুনছি সেই শোনা ওয়াজ এই আর কি!! তখন তো ছোট খেলার ছলে এগুলো করা,,,,,

এরপর টাকা উঠানো শুরু হলো,,,আমার মা প্রথম আধা কেজি চাউল দান করল,,, এরপর একে একে শুরু হলো দান করার পালা সর্বশেষ যে দান পেয়েছিলাম তাতে প্রায় ১৭ কেজি চাল ও ২৫০০ টাকার মত আদায় করলাম। এটা ছিল জীবনের প্রথম টাকা তোলা খেলা করতে করতে একটা সেমি মাহফিল হয়ে গেল। এই টাকা আমাদের বাড়ির পাশে একটা বড় তাফসীর মাহফিল হয় সেখানে দান করলাম,,,

এসব স্মৃতি মনে পড়লে হৃদয়টা আবেগাপ্লুত হয়ে যায়। সত্যিই অসাধারণ ছিল সেই ছোট কালের দিন গুলো। 

🌹বিকালে কত রকমের খেলা খেলেছি, পতুল চু, কুতকুত খেলা, কানামাছি ভোঁ ভোঁ যারে পাবি তারে ছো, গুটি খেলা,,,,,,, গুটি নিয়ে  মুখে মুখে বলতাম,,,,

দোগো দোগো,,তেগো

তেগো তেগো,,খুটানি

খুটানি খুটানি,,এক ধাপ্পা,,,,,,ইত্যাদি। 

এরকম বহু ধরনের বচন বলতাম আর খেলতাম। যেমন-

★খেজুর পাতার ইট,,,,,, ভাংবো তোর পিট,,,

★তল পাতার কেউচি,,, বউ নিতে আইছি,,,,

★ঘরে কানাচে ওল,,,,, কোদাল মেরে তো,,,

★ঐ দেখা যায় শশুর বাড়ি,,,,,বিলদে যাব আড়াআড়ি ইত্যাদি ইত্যাদি। 

গেদন খেলা,, পাইট খেলা,, কৈল খেলা,, লাঠি খেলা,, হা- ডু- ডু খেলা,ক্রিকেট, ফুটবল খেলা সহ আরো কত কি!!!

দুঃখ জনক হলেও সত্য,,,,প্রযুক্তির এ যুগে গ্রামীন কৃষ্টি কালচার আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে

  যাইহোক,,,তবে আমার বদ অভ্যাস ছিল ,,, খেলায় হেরে যাওয়া মোটেও পছন্দ ছিল না যদি দেখতাম,,,, আমি বা আমার দল হেরে যাচ্ছে তখন যে কোন একটা অযুহাত বা সমস্যা দেখিয়ে খেলা পন্ড করে দিতাম !!! কারণ আমার কাছে জিততে হবে এটাই ছিল মুখ্য বিষয়। হা,, হা,,,,,হা,,,,

এছাড়াও আমরা, 

একটা জারি ও নাট্য দল ছিলাম, শিশু চরিত্রে অভিনয়ে যথেষ্ট পটু ছিলাম আমার নাটকে অভিনয় এর মধ্যে অন্যতম হলো "কালো টাকার মানুষ" 

চাঁদনী রাতে যাত্রা পালা, নাটক, জারি গান প্রায় চলতো টিনের কলসের মুখ বেধে ঢোল বানাতাম,, ঢুলি ছিল আমার এক ছোট কাকা। কাকা জঙ্গলে মাছ ধরতে যেত কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস ছোট কাকা জঙ্গলে একবার গোল কাটতে গিয়েছিল,,,, সেখানে তাকে বাঘে ধরছিল। বাঘে তাকে ছিন্ন ভিন্ন করেছিল দেখে চেনার কোন উপায় ছিল না। যাইহোক সেটি ছিল  অত্যান্ত হৃদয় বিদারক ঘটনা। 

কাকা মারা যাওয়ার পর আমরা আর ঐ সামাজিক সাংস্কৃতিক কাজ গুলো করতাম না। কারণ কাকাই আমাদের কে নিয়ে মজা করার জন্য এগুলো করতো। কিন্তু কাকাকে হারিয়ে আর কোন দিন,,,,,ঐ গুলো করিনি। আজও মনে পড়ে কাকাকে,,,,

আসলে সত্যিকার অর্থে,,, তখন গ্রাম্য এলাকায় মানুষের অভাব ছিল বটে!!! কিন্তু তাদের মাঝে আনন্দের ঘাটতি ছিল না। 

   🌺দারিদ্র্যের কষাঘাতে কাটানো দিনগুলো🌺

🌹আমি ছোট কাল থেকে অনেক কষ্ট করে বড় হয়েছি। সংসারের ব্যয়ভার বহন করার জন্য আমার আব্বু শিক্ষাকতা পেশা ছেড়ে  একটা ঘেরে থাকত

বেতন ছিল ১২০০ টাকা। আমি প্রতি সোমবার হাটে যেতাম আব্বু যা পারত বাজার ঘাট করে দিত। যা আমাদের পরিবারের জন্য পর্যাপ্ত ছিল না মোটেও। 

কি আর করার দিন তো পার করতেই হবে!!!

🌹আব্বু ৫ কেজি চাল ও ৫ কেজি আটা কিনে দিত প্রতি  সপ্তাই। আমার আম্মু অর্ধেক চাল ও অর্ধেক আটা দিয়ে ভাত রান্না করত,,,ভাতের উপর যে আটা দেওয়া হত আমরা ওটাকে গ্রাম্য ভাষায় আটার ভ্রু বলতাম। অর্ধেক ভাত অর্ধেক ভ্রু খেতে হবে,,,,

 নিয়ম ছিল এক অক্ত পেট পুরে খাওয়া আর বাকি ২ অক্ত যা থাকবে তা সবাই মিলে ভাগ করে খাওয়া। আমার আম্মু আমাকে একটু বেশি ভালো বাসত। ভাত আমার একটু বেশিই দিত কিন্তু তাতেও আমার পেট ভরত না। কেননা এক মুট ভাতে কি কখনো পেট ভরে? তাই আমি ভাতের সাথে আগে পানি মিশিয়ে নিয়ে,,,  পানি টুকু আগে খেয়ে পেট ভরে নিতাম তারপর ঐ ভাত গুলো খেতাম। ঠিক পান্তা ভাতের মত,,,,,

একদিন রাতে অল্প ভাত ছিল। সবাই ভাগ জোগ করে খেলাম কিন্তু আমার পেট ভরেনি,,,,, রাতে শুয়ে পড়লাম কিন্তু রাত ৩ টার দিকে আমার ভোকছান /ক্ষুধা লাগছিল। ক্ষুধার তাড়নায় আমি ছটফট করছিলাম। ঐ রাত ৩টার সময় আমাদের বাড়ির পাশে এক মুদি দোকানদারকে ডেকে আমার মা মুড়ি কিনে খেতে দেয়। তখন একটু সস্তি পেয়ে ঘুমায় যাই। আহ! আহ!,,,,,,,

আজও মনে পড়ে সেই বেদনা বিদূর দিন গুলোর কথা!!!

🌹কোন কোন সময় বিল থেকে শাপলা ফুলের,, ঢ্যাপ তুলে নিয়ে আসতাম। আম্মু ওটাও আমাদের রান্না করে খাওয়াতো। তরকারি খাওয়া ভাগ্যর বেপার ছিল। আমার শশুর বাড়ির পাশেই আমাদের বাড়ি। আমার এখনো মনে আছে,,,, যখন আলু ও কচুর মুকি উঠত,, আমরা কচুর মুকি আলাদা করে দিয়ে মূল গুলো নিয়ে আসতাম।

আজকাল যে মূল কেউ খেতে চায়না। আমার শশুর রা প্রভাবশালী ও এলাকার ধনাঢ্য ব্যক্তিদের মধ্যেও একজন,,,ভাগ্যর লিখনে,,,

আলহামদুলিল্লাহ, যে বাড়িতে কাজ করেছি ভাগ্য আমাকে সেই বাড়ির আজ জামাই করেছে।

কারণ আল্লাহর খেলা,,,,,, বুঝা বড় দায়,,,,

🌹আমার বড় চাচা শশুরের বিল্ডিং এর ছাদের জন্য ইট  ভেঙে খোয়া বানায় দিয়ে ৮ ম শ্রেণির বই কিনেছিলাম!!! 

ঐ যে পড়াশোনা শুরু হলো আর কখনো পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি,,,,

শুরু হয় আমার পড়ালেখা করার নতুন জীবন যাত্রা,,,,,,,,,,,,, 

সামনের পর্বে আমার ঐতিহাসিক ট্রাজেডিময় শিক্ষা জীবন নিয়ে গল্প লিখব।

ইনশাআল্লাহ 

সে পর্যন্ত,,,,,,,,,,,,

                       আল্লাহ হাফেজ 


📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৭২৮

Date:- ২৩/০১/২০২২ইং

মুহাঃ আব্দুল আলীম

ব্যাচ-১৫

রেজিষ্ট্রেশন নং-৫৭৩৫২ 

খুলনা সদর

কাজ করছি নন ওভেন টিস্যু ব্যাগ ও শপিং ব্যাগ নিয়ে।

সবার দোয়া ও ভালবাসা প্রত্যাশী,


ফরিদপুর জেলা টিম কর্তৃক আয়োজিত বৃক্ষরোপন কর্মসূচি -২০২৪

ইনশাআল্লাহ ফরিদপুর জেলার বাকি ৮টি উপজেলায় এই কর্মসূচি চলমান থাকবে। অনেক বেশি ধন্যবাদ Iqbal Bahar Zahid স্যার কে ॥

পর্দাশীল ঘরোয়া নারী- সফল উদ্যোক্তা

আমি রান্নাটা ভালো পারি, রান্নাটা নিয়েই পেজ খুলি অনলাইনে কাজ করি। প্রথম অর্ডার আসছিল পিৎজা ডেলিভারির। আলহামদুলিল্লাহ তারপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ।