See More Post

মা সংসার পরিচালনা করতেন আমাদের লেখা পড়া দৈনন্দিন জীবনের ভরণ পোষণ সব কিছুই মা-বাবা

আমি মোহাম্মদ মনিরুল হক (মনির) মধ্যবিও পরিবারের আমার জন্ম,,, আমার দুই ভাই এক বোন,,, সংসারের বড় ছেলে আমি,,,, আমার বাবা ছিলেন একজন সরকারি কর্মকর্তা। মা ছিলেন গৃহিণী। তাদের আদরের দুলাল আমি,,। আমার মা বাবার অনেক আদরের সন্তান ছিলাম আমি । কারন বাবা মায়ের দাম্পত্য জীবনের ১০ বছর পর আমার পৃথিবীতে আগমন। সবাই অনেক আদর করতেন এখনো অনেক ভালোবাসেন। আমি কোন কিছু নষ্ট করলে ও কখন ও বাবা মা কেউ কিছু বলতেন না। আমার মন খারাপ হবে বলে। তাদের ঋীন আমি সারা জীবনে কখনো শোধ করতে পারবো না। তাদের ভালোবাসায় আমি ধীরে ধীরে ছোট থেকে বড় হতে শুরু করলাম।
আমার বয়স যখন ৫/৬ বছর তখন স্কুলে ভর্তি হওয়ার বয়স,, কিন্তু আমাদের বাড়ীর পাশে স্কুল না থাকার কারনে , বাবা মা পাশের গ্রামে স্কুলে যাইতে দেয়নি। মা বলতেন আরো একটু বড় হলে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিবে আমাকে। সবার মতো আমার ও বই নিয়ে স্কুলে যেতে ইচ্ছে করতো। কি আর করার? আম্মু আমাকে স্কুলে না পাঠিয়ে বাসায় বসে বসে পড়াতেন।
আর বলতেন তুমি যখন একা একা স্কুলে যেতে পারবা তখন তোমাকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেবো ।
আমার জীবনের প্রথম প্রাথমিক শিক্ষা টা আমি আমার মায়ে কাছ থেকে পেয়েছি।
যখন আমার বয়স ৭/৮ বছর তখন আমার আম্মু আমাকে পাশের গ্রামের স্কুলে নিয়ে ভর্তি করে দিলেন। স্কুলের নাম ছিলো -- শাহাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়-- প্রত্যেকদিন স্কুলের যাওয়ার জন্য তৈরি করে আমাকে সাথে করে স্কুলে নিয়ে দিয়ে আসতেন। স্কুল ছুটি হওয়ার পর আমাকে আবার বাড়িতে নিয়ে আসতেন।
পরিবারের চাহিদা মিটানোর জন্য বাবা উনার কর্ম জীবন নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। মা সংসার পরিচালনা করতেন। আমাদের লেখা পড়া দৈনন্দিন জীবনের ভরণ পোষণ সব কিছুই মা-বাবা খুবই সুন্দর ভাবেই করেছেন। পরম আদর যত্নে আমাকে লালন পালন করে বড় করেছেন। আমি ও বেশ বড় হলাম প্রাথমিক বিদ্যালয় শেষ করে শাহাপুর জে এন, জয়দুনেচ্ছা উচ্চ বিদ্যালয় ভর্তি হলাম। লেখা পড়া ভালোভাবেই চলছে।
✍️ আমরা সবাই জানি জীবনে বড় হতে হলে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই । তবে ছোট থেকে বড় হওয়ার যেই সময়টা থাকে সেই সময়টাতে অনেকেই জানতে চায় বাবা লেখা পড়া শিখে বড় হয়ে কি হতে চাও।
আসলে সবার মতো আমার ও স্বপ্ন ছিলো লেখা পড়া শিখে বড় হয়ে সরকারী একটা জব করবো। সেই লক্ষে লেখা পড়া কন্টিনিউ চালিয়ে যাচ্ছি । কিন্তু সময়ের সাথে সাথে মানুষের চিন্তা চেতনা পরিবর্তন হওয়াটা সাভাবিক। যাই হোক আগেই বলেছিলাম আমাদের এলাকায় কোন প্রাইমারি স্কুল ছিলো না। এরই মধ্যে আমাদের গ্রামে একটা নতুন প্রাইমারি স্কুল প্রতিষ্ঠা হয়, সেখানে আমার ছোট বোনকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেই। সেখানে সে পড়তে শুরু করল । তখন আমার ছোট অনেক ছোট ভাই মায়ের কোলে। বাবার চাকরি, মায়ের সংসার সব কিছু মিলিয়ে আমাদের সংসার খুবই আনন্দে কাটছে।আমার অনেক আদরের ছোট ভাই বোন সারা বেলা তাদের সাথে হেসে খেলে লেখা পড়া করে সময় কাটতো।
মা বাবার আদরের ছেলে হিসেবে আমি দুষ্টের সেরা মনি ছিলাম। তবে কারো সাথে ঝগড়া করতাম না। সবাই আমাকে অনেক ভালো জানতো। এখনো অনেক ভালো জানে। কারন আমি দুষ্টামি করতাম,ঠিকই কিন্ত কারো ক্ষতি করতাম না।
তবে স্কুল জীবনে কবুতর পালন করার একটা নেশা ছিলো। কারন অনেকেই দেখতাম কবুতর লালন পালন করতেন। কবুতরকে ডাকলে হাতের উপরে এসে বসতো। উরন্ত অবস্থায় কবুতরকে দেখতে অনেক ভালো লাগতো, সেখান থেকে কবুতর পালনের সখ জাগলো মনে ভিতর । ভাবলাম কবুতর পালন করলে মন্দ হয় না, যেই ভাবনা সেই কাজ , বাজারে গেলাম বাজর থেকে একজোড়া কবুতর নিয়ে এসে লালন পালন শুরু করলাম। তখন আমি ক্লাস নাইনে পড়ি।
লেখা পড়ার পাশা পাশি কবুতর পালন করে মোটা মোটি ভালো টাকা ইনকাম করেছি। নিজের খরচের টাকা চলে আসতো। আমার কবুতর হয়েছিলো ৮ জোড়া - বাচ্চা বিক্রি করে ভালো টাকা উপার্জন করতাম। এমনি চলতে থাকলো আমার স্কুল জীবন।
এই প্লাটফর্মে যুক্ত হওয়ার পর স্যারের সেশন থেকে শুনতে পেলাম শুরুটা করতে হবে স্কুল জীবন থেকেই।
কারন লেখা পড়া শেষ করার পর চাকরি করার তেমন সময় থাকেনা। আর চাকরির পেছনে ছুটতে ছুটতে মানুষ ক্লান্ত হয়ে পরে। একটা সময় হতাশা ও ব্যর্থতার গ্লানী নিয়ে চাকরি না পেয়ে বেকার জীবনের ডাইরিতে নাম লিখাতে হয়। উদ্যোক্তা ক্লাবের স্লোগান আমরা একদিন বেকার থাকবো না। প্রতিটা দিন প্রতিটা মূহুর্তকে মূল্যায়ন করে এগিয়ে যেতে চাই।
ক্লাস নাইন থেকে টেনের ক্লাস ভালো ভাবেই কাটছে। সময় চলে আসলো এস, এস, সি, পরীক্ষার।
পরিক্ষার প্রস্তুতি চলছে। পরিক্ষা ও নিজের কবুতরের বিজনেস মোটা মুটি একটা চাপের মুখে ছিলাম তবে পরিক্ষা দিতে কোন সমস্যা হয়নি। পরীক্ষা ভালো ভাবেই শেষ হলো।
এখন রেজাল্টের অপেক্ষায়, ৩ মাস পর রেজাল্ট দিবে। কি করবো বুঝতে পারছি না। এমনিতে কবুতরের বিজনেসটা চলছে। আমার সাথে আমার আম্মু ও দেখা শুনা করে। আমি এই ৩ মাস ঘুড়া ফেরা করে আত্মীয় স্বজনের বাসায় বেড়াতে বেড়াতে সময় চলে গেলো। সময় হলো রেজাল্ট দেওয়ার। এস এস সি রেজাল্ট আসলো সেকেন্ড ডিভিশন নিয়ে পাশ করলাম।
ইন্টারে এডমিশন নিলাম মুরাদনগর শ্রীকাইল ড্রিগ্রী কলেজ এ নতুন কলেজে পড়ার আনন্দটাই অন্য রকম ছিলো। নতুব বন্ধুবান্ধব সাথে পরিচয়। সব মিলিয়ে অনেক আন্দের কলেজ জীবন পার করলাম। এই দিকে চোখের সমনে ছোট বোনটা কখন যে বড় হয়ে গেছে টের ও পাইনি। বিভিন্ন জায়গা থেকে বিয়ের অফার আসছে। তাকে বিয়ে দিতে হবে, সংসারের বড় ছেলে হিসেবে বাবা সব কিছু আমার সাথে শেয়ার করতেন। ঐইচ এস সি, পরিক্ষার আগে আাবা চাকরি থেকে রিটায়ার্ড করে চলে আসেন। রিটায়ার্ডে এসে বাবা সবাইকে নিয়ে চট্রগ্রাম শহরে এসে একটা ভাড়া বাসায় থাকা শুরু করলেন।
ছোট ভাই যখন লেখা পড়ায় তেমন ভালো ছিলো না, তাই বাবা ভাবলেন ছোট ভাইকে নিয়ে বিজনেস শুরু করবেন। তাকে নিয়ে চলে আসেন চট্টগ্রাম সিটিতে । এসে কোকারিজের বিজনেস শুরু করেন। মোটা মোটি ভালো চলছিলো। একটা দোকান থেকে দুই দুইটা দোকান হয়েছে।
আসলে স্যার বলেছেন বিজনেস হলো -একটা সাগর সেখানে অগনিত মাছ থাকে - সেখান থেকে যত ইচ্ছে মাছ ধরে খেলে ও কোন কমতি নেই,
আর চাকরী হলো একটা পুকুর সেখানে সিমিত মাছ থাকে। যত মাছ ধরে খাবেন, ততো কমে যাবে। কারন সেখানে সিমিত ও হিসাবের মাছ থাকে। তাই বিজনেসের সাথে চাকরি রাত আর দিন ব্যবধান।
✍️এই দিকে আমার ইন্টার- পরিক্ষার পরে আমি ও বাবার কাছে চলে আসলাম, বাবার বিজনেস দেখা করতাম। রেজাল্টের জন্য অপেক্ষায় আছি। তখন হঠাৎ বোনের জন্য একটা বিয়ের অফার আসছে। বাবা বললেন আমাকে ছেলের সব বিস্তারিত দেখার জন্য।
আমি বললাম বাবা আপনি থাকতে আমি কেন,, আপনি যেহেতু আছে আপনি আমার থেকে ভাল জানেন বুঝেন আপনি দেখলে ভালো হয়। তার পর ও বাবা আমাকে দেখার জন্য পাঠিয়েছেন।
বাবার আদেশ অনুযায়ী আমি ও রাজি হয়ে গেলাম সব কিছু দেখা শুনার পর উভয়ের পছন্দের ভিওিতে ছোট বোনের বিয়েটা হয়ে যায়। এখন আলহামদুলিল্লাহ সে অনেক সুখে আছে। ছোট বোন বিয়ে দেওয়ার প্রথম অভিজ্ঞতা আমার। বড় ভাইয়ের দায়িত্ব,,, দায়িত্ব নিয়ে কাজ করা খুবই কঠিন কাজ।
বাবার সাথে বিজনেসে নেমে পড়লাম। মোটা মোটি বিজেনেস ভালো চলছে, আমরা ফ্যামিলির সবাই সিটিতে থাকতাম। এমনি করে খুবই আনন্দে দিনগুলো কাটছিলো। দীর্ঘ ৯ বছর বিজনেস করার পর হঠাৎ বিজনেসে ধস নেমে আসলো। পরিস্থিতি সামল দিতে বাবা আর ছোট ভাইকে দুইটা দোকানের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে আমি একটা প্রাইভেট কম্পানিতে জব শুরু করলাম। ৬ মাস এক বছরের ভিতরে বিজনেসের অবস্থা খুবই খারাপ । তখন আমার উপর সব দায়িত্ব এসে পড়লো। চাকরি করে আমাদের দুরবস্থা মোকাবেলা করার জন্য আপ্রান চেষ্টা করে যাচ্ছি। একটা সময় দুইটা দোকানই বন্ধ হয়ে যায়। ফ্যামিলির সবাইকে আবার গ্রামের বাড়ীতে পাঠিয়ে দিয়েছি। আমি চাকরি করে কোন রকমে সংস্যার চলতো।
এমত অবস্থায় কি করে এই ক্রাইসিস থেকে পরিত্রাণ পেতে পারি সেটা নিয়ে ভাবছি। পরে সিদ্ধান্ত নিলাম বিদেশে পারি দিবো। এখন বিদেশে যাবে বললে তো আর হয় না। তার জন্য টাকা এবং ভিসার প্রয়োজন আছে। হঠাৎ একদিন বাবা স্টোক করেছেন। বাবার অবস্থা খুবই খারাপ থাকার পর ও তিনি কখনো আমাদের নিয়ে বিচলিত ছিলেন না। বাবা দীর্ঘ দিন অসুস্থ থাকার পর পরলোকগমন করেন। আল্লাহ উনাকে জান্নাতুল উচ্চ মকান দান করেন। আমিন
আজকের মতো এই পর্যন্তই
সকলেই ভালো থাকবেন সুস্থ ও নিরাপদে থাকবেন, বিধাতার নিকট সেই প্রত্যাশা করছি। আল্লাহ হাফেজ।
সবাইকে ধন্যবাদ আমার এই লেখাটা আপনাদের মূল্যবান সময় ব্যয় করে পড়ার জন্য। "স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৪৬১ Date:- ১৩/০২/২০২১
আমি মেহাম্মাদ মনিরুল হক (মনির)
ব্যাচ নাম্বার - 13
রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার - 52398
জেলা- ব্রাহ্মণবাড়িয়া
বতর্মান ঠিকানা - লাইবেরিয়া ওয়েস্ট আফ্রিকা

ফরিদপুর জেলা টিম কর্তৃক আয়োজিত বৃক্ষরোপন কর্মসূচি -২০২৪

ইনশাআল্লাহ ফরিদপুর জেলার বাকি ৮টি উপজেলায় এই কর্মসূচি চলমান থাকবে। অনেক বেশি ধন্যবাদ Iqbal Bahar Zahid স্যার কে ॥

পর্দাশীল ঘরোয়া নারী- সফল উদ্যোক্তা

আমি রান্নাটা ভালো পারি, রান্নাটা নিয়েই পেজ খুলি অনলাইনে কাজ করি। প্রথম অর্ডার আসছিল পিৎজা ডেলিভারির। আলহামদুলিল্লাহ তারপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ।