🌺মায়ের হাতের 250 টাকার গল্প 🌺
🌹বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম 🌹
🌷শুরু করছি পরম করুণাময় আল্লাহর নামে যিনি সমস্ত বিশ্বের সৃষ্টি কর্তা, পালনকর্তা, রিজিকদাতা এবং বিচার দিনের মালিক, জান্নাত জাহান্নামের মালিক।🌹
🌺অসংখ্য দুরুদ ও সালাম পেশ করছি আমাদের প্রিয় নবী, সর্বশ্রেষ্ঠ নবী, আখেরী নবী, সর্বশ্রেষ্ঠ মানব, বিচার দিবসের একমাত্র সুপারিশ কারি, নূর নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি 🌺
💕ভক্তি এবং শ্রদ্ধার সহিত স্মরণ করছি আমার প্রিয় মা বাবা যারা অক্লান্ত পরিশ্রম মেহনত করে আমাকে লালন-পালন করে এতোটুকু বড় করেছেন💕
☝️কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি আমাদের প্রিয় মেন্টর, প্রিয় শিক্ষক, লাখো ভাই বোনের আইডল, বর্তমান বাংলাদেশের তরুণদের প্রিয় মুখ ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার এর প্রতি☝️
👉শুরু করছি নিজের গল্প
আমি মোঃ মোশারফ হোসেন আট দশটা পরিবারের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের একজন সন্তান। দেশের বাড়ি নরসিংদী ডিস্ট্রিক পলাশ থানা। সাত ভাই এক বোনের মধ্যে আমি সবার বড়। পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছিলাম সবাই খুব ভালোভাবে। আব্বা ছিলেন ওই সময় একজন মুদির দোকানদার সংসার চলছিল খুবই ভালভাবে। একসময় দোকানে অনেক বাকি নেওয়ার কারণে দোকানের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।ব্যবসা করার মত পরিস্থিতি আর থাকেনা। বাধ্য হয়ে আমার ছোট ভাই পড়ালেখা বাদ দিয়ে রাজমিস্ত্রির কাজে মনোনিবেশ করেন পরিবারকে সহযোগিতা করার জন্য ।তো সবাই পড়ালেখা করতেছি ছোট ভাই পড়ালেখার জোগান দিচ্ছে, সংসারের খরচ চালাচ্ছে। হঠাৎ অকাল মৃত্যুতে ঢলে পড়েন আমার ছোট ভাইটি। মৃত্যুর সময় মাকে বলে যায়, আমি যেন বিদেশে চলে গিয়ে বাকি ভাই বোনদের পড়াশোনার খরচ চালাইএবং সংসারের খরচ চালাই। কিন্তু বিদেশে যাব কি করে খাবারের টাকাই তো আমাদের জোগাড় করা অনেক কষ্ট ছিল।ঐসময় ssc পরীক্ষা শেষ করেছিলাম। এমনও দিন গেছে না খেয়ে রয়েছি। রাস্তার কাজ করেছি, মানুষের ক্ষেতে খামারে কাজ করেছি, প্রাইভেট পড়ায়েছি,মসজিদে মোয়াজ্জিনের দায়িত্বে ছিলাম অনেক দিন যাবত ।এগুলো করে যতটুকুই ইনকাম হয়েছে তা সংসারের কাজে খরচ করেছি।
🌺মায়ের কাছ থেকে 250 টাকা নিয়ে শুরু করলাম ব্যবসা।🌺 ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের খেলনার জিনিস এবং মজা বিক্রি করতাম । ঘরের ভিতরে জিনিসপত্র রাখতাম এবং বিক্রি করতাম। কিছুদিন এভাবে করার পরে আব্বা ছোট্ট করে একটি দোকান বানিয়ে দিলেন বাড়ির পাশেই। দোকান দারি করে ভাইদেরকে মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়েছি ।বাড়িতে সংসারের খরচ চালিয়েছি। মায়ের হাতের ঐ 250 টাকা বাড়তে বাড়তে একসময় 10 হাজারেরও বেশি হয় আমার কাছে। ওই থেকেই ব্যবসার প্রতি একটা লোভ আমার অন্তরে জেগে থাকে। প্রতিবেশী এক চাচা অফার করলেন বিদেশে আসার জন্য সেন্টারে ভর্তি হলাম কাজ শিখতে ছিলাম প্লাম্বিং এর। এক ক্লাসের ভিতরই ফিটারের কাজ শিখাত। তো তাদের কাজ দেখে দেখে ফিটারের কাজ শিখে ফেলে ছিলাম । ইচ্ছা ছিল শুধু আরব কান্ট্রি তে যাব অন্য কোন দেশে যাব না । কিন্তু এ কাজ গুলোর তেমন চাহিদা না থাকার কারণে শিখলাম 3g,4g ওয়েল্ডিং এর কাজ। সাথে সাথে 6G কাজও শিখলাম। কাজ শিখা অবস্থায় অনেক সময়ই শিক্ষক ক্লাস থেকে বের করে দিতেন, টাকা জমা দিতে না পারার কারণে। অনেক জায়গায় ইন্টারভিউ দিয়েছি, পাশ করেছি, মেডিকেল করেছি কিন্তু ভিসা পাই নাই। এভাবে চলে গেল প্রায় 5 বছর । আমার প্রতিবেশী চাচা দুইটা ভিসা পাঠিয়েছিলেন কিন্তু টাকা জমা দিতে না পারার কারণে আমাকে মেডিকেল আনফিট বলে বাদ দিয়ে অন্যদেরকে নিয়ে গিয়েছিলেন। আমি ইবনে সিনা থেকে পরীক্ষা করে দেখলাম আমার কোন সমস্যা ছিল না।পরবর্তীতে চিন্তা করলাম যে কোন দেশেরই ইন্টারভিউ আসবে, আমি চলে যাব ইন্টারভিউ দিয়ে ।এমনই সময় সিঙ্গাপুর থেকে আলপাইন ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস এর ইন্টারভিউ । 3G,4Gইন্টারভিউ দিলাম।পাশ করার ১৫ দিন পরেই সিঙ্গাপুরে চলে আসলাম। আমার এজেন্ট বলেছিল মাসে 50 হাজার টাকা পাওয়া যাবে। কিন্তু সিঙ্গাপুরে আসার পরে আমার প্রথম মাসের বেতন হয়েছিল মাত্র 11 হাজার টাকা। ওই দিক দিয়ে জায়গা জমি বন্ধক দিয়ে মানুষের কাছ থেকে টাকা কর্জ এনে বিদেশে আসছি। তাদের টাকা ফেরত দিতে হবে, কিভাবে দিব চিন্তায় পড়ে গেলাম ।দুই তিন মাসের টাকা জমা করে 50 হাজার করে পাঠাতাম। আস্তে আস্তে বেতন বাড়তে থাকে 20, 25, 40,70,80 হাজার ।প্রথম সাত বছরের টাকা বাড়িতে পাঠিয়ে দেই। কোন টাকা নিজের কাছে জমা রাখি নাই ।সাত বছর পরে বিবাহ করি ।বিবাহ করার সময় আব্বা বলেন তোমার কোন টাকা আমার কাছে নাই ।তোমার ভাই বোনদের পড়ালেখার খরচ এবং সংসারের খরচ চালিয়ে সব টাকা শেষ হয়ে গিয়েছে। আব্বা-আম্মা দুজনই বলেন যেহেতু এখন তুমি বিবাহ করেছো, তোমার সংসার হয়েছে। এখন থেকে তুমি টাকা জমা কর।তাদের কথামতো টাকা জমা করতে লাগলাম। প্রতিমাসে সংসারের খরচের জন্য শুধু 20 থেকে 30 হাজার টাকা পাঠাতাম ।মাঝেমধ্যে বড় কোন অনুষ্ঠান ,রোজা, কুরবানী এসবের জন্য বড় অঙ্কের টাকা পাঠাতে হতো। যা জমা করেছি তা দিয়ে কিছু জমি কিনেছি। এখন আমার বেতন ১ লক্ষ টাকার উপরে এবং আমার এক ভাই এডভোকেট,এক ভাই মাদ্রাসার শিক্ষক, এক ভাই হাফেজ, দুই ভাই বড় ব্যবসায়ী সবাই এখন প্রতিষ্ঠিত। আলহামদুলিল্লাহ👈
🤝উদ্যোক্তা জীবনের শুরু🤝 ইউটিউব এর ভিতরে একদিন আমাদের প্রিয় মেন্টর, প্রিয় শিক্ষক, লাখো জনতার আইডল ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের একটা ভিডিও দেখি। ভিডিও দেখে এমনই অনুপ্রাণিত হই যে কন্টিনিউ ওনার ভিডিওগুলো দেখতে থাকি ।কিভাবে এই গ্রুপে জয়েন হওয়া যায়, সন্ধান করতে থাকি । মেসেঞ্জারে এক বোন আমাকে গ্রুপে জয়েন হওয়ার একটা লিংক দেন ।ওই লিঙ্ক দিয়ে আমাদের নরসিংদী জেলার মোস্তাক আহমেদ মৃধা ভাইয়ের সহযোগিতায় গ্রুপে এড হই।সিঙ্গাপুরে ফেরদৌস ভাই ও ইয়াকুব আলী ভাইয়ের সহযোগিতায় সিঙ্গাপুর টিমে এড হই। সেশন গুলি করতে থাকি এবং শুনতে থাকি এর ভিতরে আমার মনের ভিতরে বাসা বাঁধে আমিও একজন উদ্যোক্তা হব। সাথে সাথে স্মরণ হয় ❣️আমার মায়ের হাতের 250 টাকার কথা❣️🌺 চাকরি করব না চাকরি দিব। এই চিন্তা কে সামনে রেখে আমারই সিঙ্গাপুরের এক বন্ধু বর্তমান বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলায় অবস্থান করতেছেন। তার সাথে কবুতরের ফার্ম এর পার্টনারশিপ ব্যবসা শুরু করি এবং ভৈরবের এক বন্ধুর সাথে কম্পিউটার ও ফটোকপি মেশিনের দোকান নেওয়ার চিন্তা করছি। যদিও তাদের বাড়ি অনেক দূরে কিন্তু তারা আমার খুব কাছের ভালো বন্ধু। যেহেতু তাদের আর্থিক অবস্থা দুর্বল এজন্য আমার চিন্তা,ব্যবসার মাধ্যমে তাদের কিছু উপকার হোক এটাই আমার প্রত্যাশা । এবং সিঙ্গাপুর picky.com.bd টিম এর অনুপ্রেরণায় আমরাও 12 জন সদস্য মিলে একটি যৌথ ব্যাবসায়িক উদ্যোগ নিয়েছি। যার নাম দিয়েছি
🌺বিসমিল্লাহ কর্পোরেশন🌺 আমাদের ব্যবসা বিভিন্ন ধরন। এর মধ্যে একটি হলো সিজনালি ব্যবসা। মানুষের উপকারার্থে এবং দেশের বেকার সমস্যা দূর করার জন্য আমাদের আরো বিভিন্ন রকম ব্যবসার চিন্তা চলিতেছে । ইনশাআল্লাহ, সবাই দোয়া করবেন যেন মানুষের খেদমত করতে পারি এবং দেশের বেকার সমস্যা কিছুটা হলেও দূর করতে পারি।
💕 স্যার বলেছেন ভালো মানুষ হতে হবে এবং একজনকে হলেও ভালো কিছু উপহার দিতে হবে 💕।ওই চিন্তা কে সামনে রেখে বর্তমানে আমার এলাকার একটি মহিলা মাদ্রাসার ভরণ পোষণের দায়িত্ব পালন করতেছি এবং নিকটাত্মীয় একজনকে থাকার জন্য ঘর করে দিয়েছি এবং একজনকে দোকান করে দিয়েছি যা দিয়ে তাদের সংসারের খরচ চলে। এবং অনেকেই এই নিজের বলার মত গল্প ফাউন্ডেশনে যুক্ত করে দিয়েছি। সবাই দোয়া করবেন এভাবে আরো ভালো ভালো কাজ করতে পারি। এবং যার অনুপ্রেরণায় শুধু আমি নই, লাখো ভাইবোন এরকমের ভালো ভালো কাজ করতেছেন, আল্লাহ যেন সেই স্যারকে নেক হায়াত দান করেন, সবাই দোয়া করবেন ইনশাআল্লাহ।
অনেক ধৈর্য্য এবং কষ্টসহকারে সময় নিয়ে পড়ার জন্য লাখো কোটি শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। আর একটু কষ্ট করে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার করবেন। দোয়া করি আপনাদের জন্য আপনারাও জীবনে আরো বেশি উন্নতি লাভ করেন, দুনিয়া ও আখেরাতে। আমিন
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮০৭
তারিখ ২৮-০৫-২০২২
মোঃ মোশারফ হোসেন
জেলা নরসিংদী
থানা পলাশ
ব্যাচ নাম্বার 17
রেজিস্ট্রেশন নাম্বার 87611
ফোন নম্বর +6589010832
বর্তমান অবস্থান সিঙ্গাপুর
পেইজ লিংক https://www.facebook.com/profile.php?id=100035036236799
ইনশাআল্লাহ ফরিদপুর জেলার বাকি ৮টি উপজেলায় এই কর্মসূচি চলমান থাকবে। অনেক বেশি ধন্যবাদ Iqbal Bahar Zahid স্যার কে ॥
আমি রান্নাটা ভালো পারি, রান্নাটা নিয়েই পেজ খুলি অনলাইনে কাজ করি। প্রথম অর্ডার আসছিল পিৎজা ডেলিভারির। আলহামদুলিল্লাহ তারপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ।