🥀আমার জীবনের ছোট ষ্টরি
আমি আলী রেজা সুমন, আমার ফ্যামিলিতে ৭ ভাই ১ বোনের মধ্যে আমি সবার ছোট , সংস্যারের ছোট ছেলে হিসেবে বাবা মা ভাই বোনের সকলের আদরের ছিলাম আমি ।
আমার বাবা পেশায় একজন সরকারি চাকরিজীবি ছিলেন, মা গৃহীনি। বাবা চাকরি করে যেই সেলারি পেতেন, সেই সেলারি দিয়ে আমাদের সকল ভাই বোনের লেখা পড়ার খরচ সহ আমাদের দৈনন্দিনের জীবনের সংসার খরচ মোটামুটি চলে যেত। তাছাড়া আমাদের জমিতে ফসল ও আসতো সব মিলিয়ে আমাদের ৬ ভাই ১ বোন মা বাবা সহ ১০ জনের সংস্যারে সবাই একে অন্যের সাথে হাসি খুশি ভাবেই কেটে যেত।
🥀 জীবনে কখনো কোন কিছুর অভাব বুঝতে পারনি।আগেই বলেছি, যেহেতু আমার ফ্যামিলিতে সকল ভাই বোনের মধ্যে ছোট আমি। সেই ক্ষেএে সব ভাইয়েরা আমার চাহিদা অনুযায়ী সকল ধরনের আবদার সব সময় পুরুন করার চেষ্টা করতেন।
আমার জীবনে এমন টা কখনো হয়নি যে, মা বাবা ভাইয়াদের কাছে আমি কোন একটা জিনিস চেয়েছি কিন্ত পাইনি। তারা সব সময় তাদের সাধ্য আমার চাহিদা পূরুন করার চেস্টা করতেন। মা-বাবা ভাইদের ঋৃন আমি কখনো --কোন দিন ও শোধ করতে পারবো না। তারা সব সময় চেয়েছেন আমি যেন খুশি থাকি। আমার চাওয়া পাওয়া তারা কোন কিছুই অপূর্ন রাখেননি । ,,,আমি ও নিজের মতো করে চলা ফেরা করেছি। কারো সাথে কখনো ঝগড়া ঝাটি করিনি। সবার চোখে আমি ভালো একজন মানুষ ছিলাম, চেষ্টা করতাম সকলের উপকার করতে।
এই শিক্ষা টা আমি আমার মা-বাবার কাছ থেকে পেয়েছি। মা সব সময় বলতেন। দেখ বাবা যেখানেই যাও না কেন, কারো সাথে ঝগড়া করবা না। তোমার জন্য যেন কোন জায়গা থেকে বিচার আচার না আসে। মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করবা । সবাই যেন তোমাকে ভালো মানুষ হিসেবে জানে। আমি আমার মা- বাবাকে অনেক বেশি ভালোবাসি,,,। তাই আমি এমন কিছু করতাম না যাতে করে মা- বাবার কাছে কোন কমপ্লিন আসে।
ছোট বেলাঃ-
🥀 আমার বয়স যখন সাত বছর তখন আমাকে আমার বাাব স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। আমাদের বাড়ির সম-বয়সি সহপাঠীদের সাথে প্রতিদিনই স্কুলে যেতাম। ছোট বেলার সময়টা অনেক আনন্দের ছিলো। স্কুলে যাওয়ার পথে অনেক দুষ্টামি করতাম। সহপাঠীদের সাথে অনেক মজা করতাম। ছুটির পরে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরার পর মা আমাকে বোকে ঝড়িয়ে নিতেন। আর বলতেন বাবা পেটে ক্ষুদা লাগছে কিছু খাবে বাবা । পরম যত্নে আদর করে কোলে বসিয়ে খাবার খাইয়ে দিতেন। মায়ের সেই ভালোবাসা, আদর মোহাব্বত এখন অনেক মিস করি ।
🌷 প্রবাসে মায়ের মতো এমনি করে কেউ বলে না। খাবার না খেলে ও এমনি করে কেউ ডেকে খাওয়ায় না। একটু ব্যাথা পেলে ও মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় না। প্রবাসে এসে মায়ের স্নেহ ভালোবাসা থেকে অনেক দুরে চলে গেছি। দেশে থাকলে হয়তো মায়ের কাছা কাছি থেকে মায়ের কোলে মাথা রেখে নিঃশ্বাস নিতে পারতাম। আজ মন চাইলে ও সেটা সম্ভব হয় না। পৃথিবীতে মায়ের মতো আপন আর কেহ নেই।
🥀লেখা পড়া চলছে বিয়মিত স্কুলে যাচ্ছি। এমনি করে কখন যে চলে গেলো ২ বছর বুঝতেই পারিনি যখন ক্লাস তৃতীয় শ্রেনীতে উঠলাম । তখন আমাদের এক মাত্র বোনের বিয়ে ঠিক হয়ে যায়। আমাদের ছয় ভাইয়ের একটা বোন। আমাদের অনেক আদরের বড় বোন। আপু আমাকে ছোট ভাই হিসেবে অনেক আদর করতেন। আপু বিয়ে হলো আমার একমাএ দুলাভাই ছিলেন স্কুল মাস্টার। আমাকে অনেক আদর করতেন। সব মিলিয়ে মোটামুটি ভালোই। এই দিকে বাবা সরকারি চাকরি করতেন, থাকতেন ঢাকাতেই।
হঠাৎ বাবার ট্রান্সফার হয়ে যায় নরসিংদীতে । সেখানে যাওয়ার পর বাবা একটা বাসা ভাড়া করে আমাদের বাসার সবাইকে নিয়ে যান।
যেই বাসাতে থাকা হতো সেই বাসার কাছা কাছি একটা স্কুল ছিলো। বাবা আমাকে সেই স্কুলে নিয়ে গিয়ে ক্লাস ফোরে ভর্তি করিয়ে দেন,
নতুন জায়গা, নতুন স্কুল, নতুন বন্ধু বান্ধব সব মিলিয়ে সেখানে সবার সাথে মোটামুটি ভালোই চলছে লেখা পড়া।
আমি যতটা স্কুলেই পড়েছি সব স্যারেরাই আমাকে অনেক আদর করতেন। ভাগ্যের নির্মম পরিহাশ কোন স্কুলেই কন্টিনিউ লেখা পড়া করতে পারিনি।
সেই স্কুলে ও আমি বেশি দিন থাকতে পারিনি। বাবার ট্রান্সফারের কারনে সব সময় দৌরের উপরে থাকতে হতো । ক্লাস ফাইভ থেকে ক্লাস টেন পর্যন্ত ৩ টা স্কুল চেইন্জ করতে হয়েছে।
তবে বাবার ট্রান্সফারের কারনে আমাকে এস এস পরিক্ষা পর্যন্ত ৬ টা স্কুল চেন্জ করতে হয়েছে। আমার জীবনে এটা একটা রেকর্ড হয়ে থাকবে ।
খেলা ধুলাঃ-
🥀 লেখা পড়ার পাশি পাশি আমার লেখা ধুলার দিকে মন ছিলো বেশি। বলতে পারেন খেলা ধুলার প্রতি আমার আলাদা একটা নেশা ছিলো অন্যরকম । স্কুলে সব খেলায় আমি ফাস্ট হতাম, স্যার আমাকে মাএ ৩ টা খেলায় অংশ গ্রহন করার সুযোগ দিতেন। আর একটা বা দুইটা খেলা শেষ হতে না হতেই মাইক দিয়ে ডেকে বলে দিতেন - আলী রেজার খেলা শেষ। আমার প্রিয় খেলা ছিলো ক্রিকেট খেলা ,,,
যেই কোন জায়গায় ক্রিকেট খেলা হলে আমাকে ফোন করে দাওয়াত করা হতো। এবং সহপাঠীরা আমাকে নেওয়ার জন্য আমার বাসায় চলে আসতো । আমি খেলা পাইলে খাবারের কথা ও ভুলে যেতাম।
👉 মাছ ধরা খুব নেশা ছিল আমার মধ্যে প্রবল , মাজে মাজে গোসল করতে গেলে ও মাছ ধরে নিয়ে আসতাম।
👉 মোবাইল চালাতে বা নতুন নতুন মডেলের মোবাইল ভাইদের কাছ থেকে আদাইয় করা ছিলো আমার একটা নেশা।
আমি যখন স্মার্ট ফোন হাতে নেই , তখন আমার বন্দুরা আমার কাছে এসে বলে তোর জন্য নাকি তোর ভাই স্মার্ট ফোন পাঠাইছে , কই দেখি। মাশাআল্লাহ মোবাইলটা তো সেই সুন্দর।
মোবাইলে নাকি বিডিও দেখা যায়, আবার ক্যামারাও আছে। তখন তাদের একটা বিডিও গান শুনালাম তারা দেখলো কি করে সম্ভব হয় এত ছোট স্মার্ট ফোনে মানুষ নাচা নাচি করে। দেখে বন্ধুরা অহভাগ হয়ে যেত।
কারন তখন স্মার্ট ফোন সকলের হাতে সচারাচর ছিল না।আমি আমার ভাইদের রৃীন সোঁদ করতে পারবোনা।
🥀 আমি যখন এস এস সি পরিক্ষার্থী তখন ভাইয়েরা বলেছিলেন - ছোট ভাই তুমি যদি এস এস সি পরিক্ষায় পাশ করতে পারো। তাহলে আমরা তোমাকে মটর সাইকেল কিনে দিবো । বলে রাখি আমার ৫ ভাই প্রবাসে থাকতেন। সবাই আমাকে অনেক আদর করতেন। আমি ও মন দিয়ে লেখা পড়া করে পরিক্ষায় পাশ করলাম। ভাইদেরকে জানানোর এক সাপ্তাহ পর আমাকে মটর সাইকেল কিনে দেয়। আমার সখের মটর সাইকেল পেয়ে আমি অনেক খুশি। যে আমাকে দেখে সে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতো। আমাদের এলাকায় আমি আরো একটা নামে পরিচিত সেটা হল হুন্ডা সুমন,,,, আমি যে কোন গুন্ডামী করেছি তা কিন্তু নয়। সব ভাইয়েরা আমাকে যখন মটর সাইকেল কিনে দেন ২০০৪ সালে তখন আমাদের এলাকার মানুষের মটরবাইক সচারাচর ছিলো না। তখন আমি মানুষের সামনে দিয়ে মটর সাইকেল দৌড়াই, বড় চুল রাখি,, ভাইদের ইনকামের টাকা অজস্র খরচ করি। তাই দেখে মানুষ আমাকে ছয় ভাইয়ের ছোট ভাই (হুন্ডা সুমন) বলে ডাকতো । তবে আমি সবার কাছেই অনেক ভালো ও আদরের ছিলাম। এলাকার সবার সাথেই আমার সুসম্পর্ক ছিলো। এখনো আছে এবং সবাই আমাকে এখনো অনেক বিশ্বাস করে। আমি জানি এটা মানুষের ভালোবাসা।
স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৪৬৬ Date:- ১৯/০২/২০২১
আলী রেজা সুমন
ব্যাচ ১৩
রেজিষ্ট্রেশন ৫২৫৬৪
কুমিল্লা।
 
                       ইনশাআল্লাহ ফরিদপুর জেলার বাকি ৮টি উপজেলায় এই কর্মসূচি চলমান থাকবে। অনেক বেশি ধন্যবাদ Iqbal Bahar Zahid স্যার কে ॥
আমি রান্নাটা ভালো পারি, রান্নাটা নিয়েই পেজ খুলি অনলাইনে কাজ করি। প্রথম অর্ডার আসছিল পিৎজা ডেলিভারির। আলহামদুলিল্লাহ তারপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ।