👉জীবন থেকে নেওয়া জীবনের গল্পঃ-
সকল-কে পড়ে আসার অনুরোধ জানাচ্ছি।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আসসালামু আলাইকুম শুরু করছি মহান রাব্বুল আলামিনের নামে যে আল্লাহ আমাকে আপনাকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে তৈরি করেছেন এবং এখনো পর্যন্ত মহামারী করোনা থেকে বাঁচিয়ে সুস্থ স্বাভাবিক রেখেছেন। সকলে শুকরিয়া আদায় করি আলহামদুলিল্লাহ।
যে মা-বাবা জন্ম দিয়ে এই পৃথীবির আলো দেখিয়েছেন তাদের ঋণ শোধ করার ক্ষমতা কারোর ই নেই।
যে মা-বাবা ছোট থেকে বড় করেছেন এখনো সন্তানের একটু অসুখ হলে নিজের চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনা সেই মা-বাবাকে যেন আল্লাহ নেক হায়াতের মাধ্যমে সুস্থ রাখেন সেই দোয়া করি রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বা ইয়ানি সাগিরা।
প্রত্যেক টি মানুষ ২ বার শৈশবে ফিরে যায় এক হলো ছোট বেলায় ২য় হলো যখন বয়স ৬০+ হয়। প্রত্যেক টি সন্তানের উচিত মা-বাবা যখন বয়স বাড়ে তখন আমাকে আপনাকে যেমন ছোট বেলায় আদর স্নেহে বড় করেছেন সেই ব্যবহার এবং যত্ন টা তাদের সাথে করা প্রত্যেক টা সন্তানের কর্তব্য।
মা-বাবার দোয়া থাকলে আমি আপনি সফল হবোই।
অসংখ্য ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা স্বীকার করি লক্ষ লক্ষ তরুন তরুনীর স্বপ্নদ্রষ্টা এশিয়া মহাদেশের উদ্যোক্তা তৈরির কারিগর Iqbal Bahar Zahid স্যার এর প্রতি। যিনি পরম স্নেহে তৈরি করে যাচ্ছেন অগনিত উদ্যোক্তা। যিনি তৈরি করে দিয়েছেন এত বিশাল একটা ফ্লাট ফর্ম যেখানে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মিলন মেলা। স্যার হাতে কলমে শিখিয়ে দিচ্ছেন আপনার আমার স্বপ্ন বাস্তবায়নের রূপরেখা।
বিশেষ ধন্যবাদ জানায় আমাদের নোয়াখালীর গর্ব সকলের প্রিয় Abdul Karim Munna ভাইয়াকে। ভাইয়া সাহস এবং ভরসা দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
👉আমার জন্ম ও পরিচয়ঃ আমি নুর ইসলাম, সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেছি ১৯৯৪ সালের ৭ ই মার্চ।
বাবার নামঃ আবুল খায়ের,(দুবাই প্রবাসী) মাঃ সখিনা খাতুন(গৃহিনী)।
আমরা ২ ভাই ১ বোন।
বড় ভাই পেশায় সিভিল ইন্জিনিয়ার বর্তমানে স্কয়ার গ্রুফে কর্মরত আছেন।
ছোট বোন এসএসসি পরিক্ষার্থী। আলহামদুলিল্লাহ আমরা ৫ সদস্যের সুখি পরিবার।
👉শিক্ষা জীবনঃ আমি ১৯৯৯ সালে একটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয় সেখানে দ্বিতীয় শ্রেনী পর্যন্ত পড়ালেখা করি এর পর আমাদের পাশেই একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে সেখান থেকে কৃতিত্বের সাথে প্রাইমারি জীবন শেষ করি।
এর পর আমাদের এলাকার একটা উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হয় শুরুর দিকে খামখেয়ালি ছিলো কিন্তু ৯ম শ্রেণী থেকে পুরোপুরি পড়ালেখায় মনোনিবেশ করি এবং আলহামদুলিল্লাহ ২০১০ সালে এস এস সি পরিক্ষায় কৃতিত্বের সাথে সফল হয়।
এর পর ২০১২ সালে ইন্টারমিডিয়েট শেষ করি। এর পর পড়ালেখা কন্টিনিউ করিনি। কিন্তু এখন একজন প্রিয় মানুষের অনুপ্রেরণায় গ্রাজুয়েশন শেষ করার চিন্তাভাবনা শুরু করছি। শিক্ষার কোন বয়স নেই। আমরা প্রতিনিয়ত শিখছি।
👉পেশা হিসেবে ব্যবসা কেন বেছে নিলাম?
১/আমি মনে করি হালাল উপার্জনের সর্বোত্তম পন্থা হলো ব্যবসা।
২/ হালাল ব্যবসা বরকতময়। আমাদের নবী রাসুল গন ও ব্যবসা করতেন।
৩/ আপনি যদি স্বাধীনতা পেতে চান তাহলে ব্যবসা করুন।
৪/ বড় বড় স্বপ্ন পূরণ করতে ব্যবসা করাটাই উত্তম।
৫/ ব্যবসা করার মাধ্যমে নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে অন্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়া যায়।
👉ব্যবসায়ী হয়ে উঠার পেচনের গল্পঃ-
আমি ছোট থেকেই একজন ব্যবসায়ী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর ছিলাম। জেঠাতো ভাইদের বিদেশী মালামালের দোকান থাকার সুবাদে কলেজে পড়া অবস্থায় উনার দোকানে যেতাম, কাষ্টমার আসলে কিভাবে কেনাবেচা করে দেখতাম। বিদেশীরা মালামাল যেমনঃ কম্পিউটার, মোবাইল, কম্বল, কসমেটিকস সামগ্রী প্রবাসীরা বেশি নিয়ে আসলে উনার দোকানে বিক্রি করতো এবং সেই পন্য গুলো উনি অন্য কাষ্টমারদের কাছে বিক্রি করতো।
আমি লক্ষ্য করতাম কত দিয়ে ক্রয় করতেছে আবার কত বিক্রয় করতেছে। এগুলো দেখে নিজের কাছে মনে হতো আমি ও যদি ব্যবসায়ী হতে পারতাম। ইন্টারমিডিয়েট শেষ করার করার পর ২ বছর বাড়িতে থাকি, ছেলেদের সাথে আড্ডা দিতাম এসব দেখে আমার জেঠাতো ভাই আমার বড় ভাইকে বলে নুর ইসলাম তো এলাকায় আড্ডা দেই ও যদি দোকানে এসে বসে তাহলে ব্যবসা টা ও শিখতে পারলো বাজে আড্ডা টা ও বন্ধ হবে।
প্রথম দিকে ভাইয়ার ইচ্ছে ছিলো আমাকে মেরিন ইন্জিনিয়ারিং পড়াবে বা ইউরোপের যে কোন রাষ্ট্রে পাঠাবে। কিন্তু আমার ইচ্ছে ছিলো না কারণ আমার আব্বু সেই ছোট থেকে ৩৫ পর্যন্ত প্রবাসে কাটিয়ে দিয়েছেন, এখনো প্রবাসে আছেন। উনি উনার জীবনের ৬০% সময় বিদেশের মাটিতে কাটিয়ে দিয়েছেন।
আব্বুর কথা চিন্তা করেই নিজের দেশে কিছু করার চিন্তা করি।
একদিন বিকেলে এলাকায় হাটছিলাম জেঠাতো ভাই বলে বাজারে যাবি আমার ও কাজ ছিলো তাই আসছিলাম উনার গাড়ীতে করে।
আসার পর উনি আমাকে দোকানে বসিয়ে নাস্তা করতে গিয়ে ১ ঘন্টা হয়ে গেলেও আসছেনা, কল দিলে ও ধরছেনা বাধ্য হয়ে কাষ্টমার আসার পর পন্য দেখায় এবং উনার বিক্রয় মূল্যের থেকে ৫০ টাকা বেশি রেটে সেল করি। পরে উনি আসলে এটা বলার পর উনি বলে তুমি এলাকায় ঘুরাঘুরি না করে দোকানে বসলে ভালো হতো। আমি ও বলি আচ্ছা কালকে থেকে আসবো।
তার পর থেকে দোকানে রেগুলার আসা যাওয়া করি। যখন ১ মাস পূর্ণ হয় উনি আমাকে টাকা সাধে কিন্তু আমি টাকা গুলো নেয়নি। কারন টাকা নিলে আমার ব্যক্তি স্বাধীনতা হারাবো। আমি পরিশ্রম করতে পচন্দ করি কিন্তু কারো অর্ডার মত চলতে ভালো লাগেনা।
আমি প্রতিনিয়ত সময় দিচ্ছি এবং নিজ থেকেই ব্যবসার সব শিখতেছি। আমার টার্গেট ছিলো নিজে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দিবো ঐ জন্য কাষ্টমারদের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি করার জন্য নিজেই কাষ্টমার দের কে আপ্যায়ন করাতাম এবং পরিচিত হওয়ার চেষ্টা করতাম। কাষ্টমার রা এসে আমি না থাকলে আমার খোজ নিতো। এটা আমার জেঠাতো ভাই ভালো ভাবে নেয়নি।
পরে একদিন আমাকে কয়েকটা কথা বলে এবং আমি জেদ করে দোকান থেকে বের হয়ে যায়।
তবে উনার কাছ থেকে ব্যবসার অনেক নিয়ম কানুন শিখতে পারছি। বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করলেও অনেক কিছু শিখছি যেটা এখন ব্যবসায়িক জীবনে কাজে লাগছে।
সবসময় টাকার জন্য কাজ করলে হয়না।
উনার দোকান থেকে বের হওয়ার পর থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য প্লেস খুজতে থাকি এবং পরিশেষে একটা প্লেস পাই। আব্বু, ভাইয়ার সহযোগিতায় ছেলেদের পোশাক নিয়ে কাজ শুরু করি আলহামদুলিল্লাহ সফলতার পথেই এগুচ্ছি।
প্রিয় ফাউন্ডেশনের সাথে যুক্ত হয়ে ভালো মানুষদের সাথে মিশে এখন নিজেই পোশাক উৎপাদনের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রিয় স্যারের সবগুলো সেশন নিজের জীবনে প্রতিফলন ঘটানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি।
পরিশেষে প্রিয় মেন্টর ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের জন্য অন্তরের অন্তস্থল থেকে দোয়া করি যিনি প্রতিনিয়ত সেশনের মাধ্যমে আমাদের কে আঙুল দিয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন টা বাস্তবে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
👉প্রিয় ফাউন্ডেশনের সাথে যুক্ত হয়ে কি পেয়েছিঃ-
১/ প্রথমত পেয়েছি অগনিত ভালো মানুষ। যারা প্রতিনিয়ত ভরসা এবং পরামর্শ দিচ্ছেন।
২/ পেয়েছি এত বিশাল একটা প্লাটফর্ম যেখানে রয়েছে ক্রেতা এবং বিক্রেতা।
৩/ ৯০ টা সেশনের মাধ্যমে অনেক কিছু শেখার সুযোগ যেটা কোথাও পাওয়া যায়না ফ্রি তে।
৪/ এখানে সকল মানবিক কাজ হয়ে থাকে যেটা সত্যিই অসাধারণ।
৫/ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে নেটওয়ার্কিং বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং মার্কেট প্লেস তৈরি হচ্ছে।
৬/ নিজের ব্যবসার পাশাপাশি সাইট বিজনেস করার সুযোগ পেয়েছি।
৭/ কথা বলার জড়তা কাটানোর সেশনের মাধ্যমে নিজেকে অন্যের কাছে সহজে উপস্থাপন করা শিখতে পারছি।
ফাউন্ডেশনের সাথে যুক্ত হয়ে কি পেয়েছি সেটা সারাদিন লিখলেও মনে হয় শেষ হবেনা।
👉প্রিয় ফাউন্ডেশনের সাথে যুক্ত হওয়ার গল্প টা ও বলি-
ফেসবুকে স্ক্রল করার সময় প্রিয় মেন্টর ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের একটা ভিডিও সামনে পড়ে সেটা একবার শুনার পর ডাউনলোড করি এবং প্রতিদিন হেডফোন লাগিয়ে অবসর সময় শুনতাম। আমার ব্যবসায়িক পেইজ থেকে প্রথম ভিডিও শেয়ার করি। অনেকেই ভালো ভালো কমেন্ট করছেন।
এর কয়েকদিন পর আরেকটা ভিডিও পাই সেটা ও ডাউনলোড করি এবং শুনি। প্রতিনিয়ত অপেক্ষা করতাম কখন আবার নতুন ভিডিও পাবো। অনেকগুলো ভিডিওর পর একদিন কিভাবে গ্রুপ টা চোখে পড়ে এবং সকলের পোষ্ট গুলো দেখে ভালো লাগে এবং একটা কমেন্ট করি কিভাবে এড হবো কিন্তু কোন রেসপন্স পাইনি। আরেকটা কমেন্টের রিপ্লায়ের পর জানতে পারি রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে। পরে একটা পোষ্ট করি এবং একজন দায়িত্বশীলের মাধ্যমে রেজিষ্ট্রেশন টা সম্পন্ন করি।
আলহামদুলিল্লাহ অনেক কিছু শিখছি প্রতিনিয়ত। আফসোস করি ইশ যদি আরো আগে যুক্ত হতে পারতাম।
পরিশেষে সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানায় আমার এলোমেলো কথা গুলো ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য।
কিছু ভুল হলে সংশোধনের জন্য বলবেন ইনশাআল্লাহ।
সকলের সুস্থতা কামনা করছি।
স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮১৯
তারিখ ১৩-০৬-২০২২ইং
আমি-
নুর ইসলাম
ব্যাচঃ ১৭
রেজিষ্ট্রেশন নংঃ ৯০৬০৬
জেলাঃ নোয়াখালী
উপজেলাঃ কোম্পানিগঞ্জ
পেইজঃ 𝙎𝙖𝙝𝙚𝙗 𝘽𝙖𝙗𝙪
সকলের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করছি।
ইনশাআল্লাহ ফরিদপুর জেলার বাকি ৮টি উপজেলায় এই কর্মসূচি চলমান থাকবে। অনেক বেশি ধন্যবাদ Iqbal Bahar Zahid স্যার কে ॥
আমি রান্নাটা ভালো পারি, রান্নাটা নিয়েই পেজ খুলি অনলাইনে কাজ করি। প্রথম অর্ডার আসছিল পিৎজা ডেলিভারির। আলহামদুলিল্লাহ তারপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ।