See More Post

হতাশা থেকে সফলতার দ্বার প্রান্তে ধাবিত হওয়ার গল্প

হতাশা থেকে সফলতার দ্বার প্রান্তে ধাবিত হওয়ার গল্প

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতু

সর্বপ্রথম শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি মহান আল্লাহ তাআলার যিনি আমাকে সুস্থ রেখে জীবন যাপন করার তৌফিক দান করেছেন।

দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক প্রিয় রাসুল সাঃ এর উপর এবং তার পরিবার ও পরিজনের উপর।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি মা-বাবার প্রতি যাদের মাধ্যমে দুনিয়ার আলো আমি দেখতে পারছি

আমি আরো কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ সন্তান না খোলা উদ্যোক্তা তৈরীর কারিগর প্রিয় মেন্টর প্রিয় শিক্ষক জনাব ইকবাল বাহার জাইস স্যারের প্রতি

১৯৯৯ সালে ০৪ ডিসেম্বর রোজ শুক্রবার আমার জন্ম হয়, আমার শৈশব অনেক আদর ভালোবাসায় কাটে, আমি এক মাত্র ছোট সন্তান ছিলাম,,যার আদর ভালোবাসার কোন কমতি ছিলোনা,,আমার প্রতিবেশী যারা আছেন তারাও আমার চাচা-চাচী তারা যদিও ভিন্ন ধর্মাবলম্বী তবুও তারা আমায় অনেক ভালোবাসাতো,,আমি শুনেছি আমায় তারা অনেক ভালোবাসতো স্নেহ করতো,,ছোট সময়ে আমি এত সুন্দর ছিলাম নিজেকে নিজের ছবি দেখালে আমার হিংসে হয় যে আমি এত সুন্দর ছিলাম,আমার দাদা-দাদীর ভালোবাসা আমি কখনোই ভুলতে পারবোনা,,আমি লেখাপড়ায় ছোট সময়ে অনেক ভালো ছিলাম,,দিন যেতে থাকে আমিও বড় হতে থাকি তখন পড়াশোনাও মোটামুটি ভালোই চলতে থাকে,,সকলেই সব সময় উপদেশ দিত যে ভালো করে পড়তে হবে এবং মানুষের মতো মানুষ হতে হবে।

আমি ২০১২ সালে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট  পরীক্ষা দেই এবং আমার রেজাল্ট খারাপ আসে,, সকলের অনেক কথা সবাই ভালো করেছে আমি খারাপ করলাম,,সকলে কথা উপেক্ষা করে আমি নবম শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়,, SSC তে মোটামুটি ভালোই একটা রেজাল্ট আসলে,, সেই পর্যন্ত আমার পরিবারের আবস্থা অনেক ভালো ছিলো,, তারপর আমি ডিপ্লোমা ইন ইন্জিনিয়ারিং  এ ভর্তি হয়,,পারিবারিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে,,আমাকে খরচ চালানো তাদের জন্য অনেক কষ্ঠ  হলেও তারা চালিয়ে নিয়েছেন,,আমি নিজে থেকে কিছু করতে চেয়েও কিছু করতে পাড়িনি,,টিউশনি করতে চেয়েছি ওই সময় সেটাও হয়ে উঠেনি হয়তো পরিচিতির অভাবে পাইনি,, এক পর্যায়ে আমার ৪র্থ সেমিস্টার ২০১৭ সাল তখন আমার একটা হসপিটালে প্রতি শুক্রবার একটা কাজের ব্যবস্থা হয়,, প্রতি শুক্রবার ঢাকা থেকে ডাক্তার আসতো তাদের রোগীর সিরিয়াল করে ডাক্তারের কাছে পাঠানোই আমার কাজ ছিল,, এভাবে মাসে ৪ দিন পার্টটাইম কাজ করি এবং ডিপ্লোমা শেষ করি ২০১৯ সালে।

এরপর থেকেই ধারাবাহিক ভাবে চাকরি নামক সোনার হরিণের পিছু ছুটে চলা,,

দীর্ঘদিন চেষ্টা করে কোন লাভ হয়নি,, অতঃপর একটা ইন্টারভিউ এ ডাক পাওয়া এবং সফলভাবে সব কিছু শেষ হয় তারা জয়েন করার তারিখ জানিয়ে দেয়,, ইতি মধ্যে আর মাএ ৭ দিন বাকি, নতুন ভাবে কাজে নিযুক্ত করবো ঠিক এমন সময় (করোনা ভাইরাস সংক্রমণ) এর দেখা দেয়,,যা আমার জীবনে তৈরি করে হতাশা আর ব্যার্থতার গল্প,,না পারছিলাম তখন কিছু করতে না পারছিলাম  বেকরত্বের ভার সইতে,,পারিবারের যে আর্থিক সমস্যা তবুও আমার বাবা আমাকে কখনও কোন বিষয়ে প্রেসার দেয়নি শত সমস্যার মাঝে আমায় সাহায্য করতো,,আমার কাছে টাকা থাকতোনা সেটা সে বুঝতো নিজে খরচ না করে আমাকে খরচ করার জন্য টাকা দিতো,,
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রভাবটা কমলে আমি বিভিন্ন কম্পানির সাথে যোগাযোগ করি কিন্তু তারা নতুন কাউকে নিয়োগ তো দূরে থাক আরও পুরাতন ছাটাই করেছে,,এভাবে আরও অনেক চেষ্টা করেও কোন লাভ হয়নি,,কাউকে চাকরির কথা বললেই সকলেই বলতো কোন অভিজ্ঞতা আছে নাকি,,এর পর আমি নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশনের সাথে এড হই তখন ১১তম ব্যাচ চলছিলো আমার বিজনেসের বিষয়ে কোন ধারণা না থাকায় আমি সবার কার্যক্রম গুলো দেখতে থাকি এবং আমি ১৩ তম ব্যাচ এ রেজিষ্ট্রেশন করি,,আমি অনেক চেষ্টা করি আমার নেটওয়ার্কিং না থাকার কারণে আমার সেল হয় না,,আমি একটা দোকানে জব পাই খুব অল্প সেলারি যা দিয়ে আমার নিজেরই চলা কষ্ঠ হয়ে যেতো,,পাশাপাশি আমি শখ করে আমার বন্ধুর মাধমে গাড়ি চালানো শিখি,,এটা মূলত ভালোলাগা থেকেই শিখেছি প্রোফেশনের জন্য নয়,,এভাবে ৬ মাস কাটে আমার তখন ২-১ টা করে সেল হতো অনেক দিন পরপর এভাবে চলছিলোনা। দিন যাচ্ছিলো পারিবারিক অভাব বেড়েই চলছিল ছেলে বেকার বসে থাকলে যা হয়।

আর কত হতাশার জীবন, এক পর্যায়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে দেই,   প্রাইভেট কার ড্রাইভিং এ সময় দিয়ে নিজেকে প্রোফেশনালি তৈরি করি। লাইসেন্স বের হওয়ার পর আবার চাকরির খোজ,,নতুন লাইসেন্স হওয়ায় কেউ ডাকে না এভাবে ছয় মাস কাটে,একটা চাকরির সুযোগ আসে তখন আমি কিছু না ভেবেই রাজি হয়ে যাই কারণ এটা আমার খুব বেশি প্রয়োজন ছিলো,,শুরুতে মনের আনন্দেই কাজ করতাম কিছু দিন পর থেকে ভাবতে থাকি,,আমি এভাবে চাকরি করে জীবনে কিছুই করতে পারবো না,,পুরাতন বিজনেসের অভিজ্ঞতা টা আবার কাজে লাগাতে শুরু করি, দ্বীর্ঘদিন অফ লাইন এ থাকার ফলে আমার সব কিছু আবার নতুন করে শুরু করতে হয়,,চাকরির পাশাপাশি আমি খুব দ্রুত নিজের মত করে বিজনেসটা দাঁড়া করাই,ভালো প্রতিক্রিয়া পাচ্ছিলাম কিন্তু চাকরির কারনে সময় দিতে পারছিলাম না,,প্রোডাক্ট আনতে যাই মালিকের ফোন,ডেলিভারি দিতে যাই তাও ফোন,,অফিস টাইম শেষে বিজনেস এর কাজে বের হলে তাও তার ফোন এমন সময় চাকরিটা আমার জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ালো,, আমার ব্যবসায় মাসিক ১৫-২০ হাজার টাকার মত সেল হচ্ছিলো আমি এটা হাড়াতে চাচ্ছিলাম না, তাই সম্প্রতি চাকরিটা ইস্তফা দেই,,আমার চাকরিদাতা তার কোম্পানিতে কাজের জন্য আমাকে বহাল রাখতে অনেক চেষ্টা করেছে, আমায় অনেক কিছু অফার করেছে কিন্তু আমি না করেছি কারণ সে যদি তার কোম্পানির মালামাল সেল করতে আমার উপর আস্থা রাখে যে আমি পারবো। তাহলে আমি নিজে কেন কিছু করতে পারবোনা,,আমার নিজের উপর আস্থা আছে আমি পারবো তাই চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছি,,বিদায় এর দিন স্যার বলেছেন যা করিস না কেন মণ দিয়ে করিস এবং যদি কখনও চাকরির প্রয়োজন হয় আমাকে ফোন দিতে হবে না আমার কাছে চলে আসবি,আমার একটাই ভুল আমি ব্যবসায় লাগে না থেকে হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম,,  লেগে থাকার বিকল্প নেই এবং আমি শুরু থেকেই লেগে থাকলে এখন হয়তো মাসিক সেল এক লক্ষ টাকা হতে পারতো,, আলহামদুলিল্লাহ চলতি মাসে আমার প্রায় ৪০-৫০ হাজার টাকার মত অডার আছে,,আমি শূন্য থেকেই শুরু করেছি এখন আমার মূলধন ১৫০০০ টাকা এটা আমার বিজনেস থেকে উপার্জন এর আয়।
এখন আমি আমার ব্যবসায় লেগে আছি,,চাকরি করবোনা না চাকরি দেব এই প্রত্যাশা ব্যক্তো করে আপনাদের সকলের দোয়া প্রার্থনা করছি এবং সকলকে পাশে থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।


📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮৫০
তারিখ- ১০-০৮-২০২২ইং

শরীফ আকন্দ সবুজ

উপজেলাঃ ভূঞাপুর
জেলাঃ টাঙ্গাইল
ব্যাচঃ ১৩
রেজিঃ ৫৬৮৯২
ফাউন্ডারঃ https://www.facebook.com/Purple-Fashon-105357935603331/

কাজ করছি টাঙ্গাইলের চমচম,, তাঁতের তৈরি শাড়ী,, তাঁতের তৈরি থ্রিপিস ও কাস্টমাইজ টি-শার্ট নিয়ে

ফেসবুক লিংকঃ https://www.facebook.com/sharifakanda.sabuz

ফরিদপুর জেলা টিম কর্তৃক আয়োজিত বৃক্ষরোপন কর্মসূচি -২০২৪

ইনশাআল্লাহ ফরিদপুর জেলার বাকি ৮টি উপজেলায় এই কর্মসূচি চলমান থাকবে। অনেক বেশি ধন্যবাদ Iqbal Bahar Zahid স্যার কে ॥

পর্দাশীল ঘরোয়া নারী- সফল উদ্যোক্তা

আমি রান্নাটা ভালো পারি, রান্নাটা নিয়েই পেজ খুলি অনলাইনে কাজ করি। প্রথম অর্ডার আসছিল পিৎজা ডেলিভারির। আলহামদুলিল্লাহ তারপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ।