See More Post

উদ্যোক্তা হওয়া হচ্ছে মাতৃত্বের স্বাদের মতন।

“আমার জীবনের গল্প”

সবাই কষ্ট করে শেষ পর্যন্ত আমার গল্পটা পড়ার অনুরোধ রইল।

সবাই আমার আদাব/নমস্কার  গ্রহন করবেন

সকল প্রশংসা মহান সৃষ্টি কর্তার যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন ও সুস্থ রেখেছেন।

শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করছি প্রিয় বাবা-মাকে যাদের কারনে এসেছি এই পৃথিবীতে। বড় হয়েছি তাঁদের অকৃত্রিম ভালোবাসায়। যাদের ঋন কখনও শোধ হবার নয়।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমাদের সকলের প্রিয় মেন্টর শ্রদ্ধেয় জনাব Iqbal Bahar Zahid স্যারের প্রতি, যার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আমরা পেয়েছি এই ভালোবাসার প্রিয় প্লাটফর্ম “নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন”। ভালো মানুষ গড়ার কারিগর, পথহারা বেকারদের পথের দিশারি, আমাদের সবার অভিভাবক, প্রিয় মেন্টর শ্রদ্ধেয় জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার। স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। স্যারের দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

✍️সবাই আমার শুভেচ্ছা নিবেন। জীবনের গল্প কি একটি গল্প আকারে প্রকাশ করা সম্ভব?
জীবনের এক একটা দিন, এক একটা যুদ্ধ, এক একটা দিন নিয়ে ই তো একটা গল্প লিখা যায়। তাই আজ আমি  আপনাদের মাঝে আমার উদ্যোক্তা জীবনের গল্প উপস্থাপন করতে আসছি।
শৈশব, কৈশোর ও পড়াশোনার গল্প না হয় আর একদিন শুনাবো। আমার ছয় বোন তিন ভাই। ভাই বোনদের সবার ছোট আমি।

✍️✍️আমার ছোট বেলা থেকেই বিজনেসের প্রতি লোভ ছিলো। পড়াশুনা চলাকালীন আমি যুবউন্নয়ন থেকে সেলাই ও ব্লক বাটিকের প্রশিক্ষণ করি। তারপর মাস্টার্স পড়াকালীন আমার চাকরি হয়ে যায়। ৪/৫ বছর করার পর ২০০৭ সালে
আমার বিয়ে হয়ে যায়। আমি হিউম্যান রাইটস এ চাকরি করতাম। আমার হাসব্যান্ড সিলেটে চাকরি করার সুবাদে আমাকে চলে আসতে হয় সিলেটে।

আমার হাজবেন্ডের কথা একটু বলি...
আমার হাজবেন্ড খুবই ভালো মনের মানুষ, আমাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছে। উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য কোনো বাধা দেয়নি। বরং সহায়তা করার চেষ্টা করে। সিলেটে এসেই আমার আর একটা যুদ্ধ শুরু হয়। আমার বেবি কনসিভ হয়। হঠাৎ করে  ৩মাস+ এবোরশান হয়ে যায়। এরপর থেকে আর বেবি কনসিভ হয়না। শুরু হলো ডাক্তার দেখানো। প্রথমে সিলেটে দেখাই, তারপর ঢাকায়। কিন্তু  কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। ডাক্তাররা শুধু বলে কোন সমস্যা নাই। এভাবে চললো বেশ কয়েক বছর। তারপর ইন্ডিয়া চলে যাই, সেখানে দুবছর ট্রিটমেন্ট করার পর ২০১৯ সালের ২০ মে আমি  এক পুত্র সন্তানের মা হয়েছি।  ২০০৭ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত মা না হতে পারার জন্য মানুষ থেকে কত রকমের কথা শুনতে হয়েছে সেটা শুধু আমি জানি৷ আমার মা হওয়ার তীব্র ইচ্ছা আকাংক্ষা পূর্ণ হয়েছে। আমার ছেলের জন্য আপনারা সবাই দোয়া ও আশীর্বাদ করবেন। সবাই হয়তো ভাবছেন উদ্যোক্তা জীবনের গল্প শুনাবো বলে এগুলো কেন লিখলাম! এই সময় গুলো আমার উদ্যোক্তা জীবন শুরু করার এবং ব্যর্থ হয়ে স্বপ্ন ভেঙ্গে যাওয়া সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনা।

✍️✍️✍️প্রথম উদ্যোক্তা জীবনের পথ চলা...
বিয়ের আগে পার্লারের কাজ শিখে ছিলাম। জীবনের প্রথমে উদ্যোগ ছিলো পার্লার। চাকরির পাশাপাশি
ভালোই চলছিলো। বিয়ে হয়ে যাওয়ার কারনে পার্লারের কাজ টা আর করা হয়নি। বিয়ের পর আমার খুব কাছের বান্ধবীকে নিয়ে ব্যবসায়িক জীবনে আবারও পদার্পণ করলাম। বিজনেসে আমি হলাম প্রতারিত। আমি আমার খুব কাছের বান্ধবীর সাথে বিজনেস করার কারণে তাকে বিশ্বাস করে তার কাছে আমার ৪ লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম ২০১৫ সালে। সে থাকে নেত্রকোনায় আর আমি থাকি সিলেট। মোটামুটি যা দিত এতেই আমি খুশি থাকতাম। এর মাঝে আমার বান্ধবীর মাধ্যমে পরিচিত একজনের সাথে নিয়ে শপিং বেগের একটা ছোট করে কারখানা দিয়েছিলাম। সেটাও পার্টনারশিপে। আমি যেতাম ২ মাস অন্তর অন্তর। প্রথম প্রথম ভালোই চলছিলো। পরে দেখলাম সেখানেও সমস্যা। তারপরও কিছু বলিনি আমি৷ আমি মনে করতাম যেহেতু আমি থাকিনা সে বেশি পরিশ্রম করে সে আমাকে যা হিসাব দিত আমি মেনে নিতাম। হঠাৎ চলে আসলো করোনা! সব বন্ধ হয়ে গেলো। এখানেও আমি লসে পরলাম। আমার পার্টনারকে বললাম আমি আর বিজনেস টা কনটিনিউ করবো না। তবে আস্তে আস্তে যেন আমার মূল টাকা ফেরত দিয়ে দেয়। সে খুব ভালো মানুষ। আমাকে মূল টাকা দিচ্ছে আস্তে আস্তে। তার সাথে সম্পর্ক এখনো ভালো। তবে আমার কাছের বান্ধবী সে আমার ৪ লক্ষ টাকা দিবে তো দুরের কথা আমার ফোন পর্যন্ত রিসিভ করেনা! আমাকে সে বলছে সব শেষ, এক টাকাও দিতে পারবেনা। শুধু আমাকে নয় আরো অনেকের সাথে সে প্রতারণা করেছে। খুব কাছের বান্ধবীর থেকে এমন প্রতারনার শিকার হয়ে আমি খুব ডিপ্রেশনে চলে যাই। উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখার আর সাহস হয়না।

✍️✍️ নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশনে যুক্ত হওয়া ও নতুন করে স্বপ্ন দেখা...
বিজনেসে ব্যর্থ হওয়ার পর ইউটিউব দেখে প্রতিদিন কাটত। হঠাৎ একদিন মোবাইল স্ক্রলিং করতে করতে ইউটিউবে ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের লাইভ দেখতে পাই। তখন অনেক গুলো লাইভ দেখি। এখান থেকেই সাহস নিয়ে ১৭ তম ব্যাচে ফাউন্ডেশনে রেজিষ্ট্রেশন করি এবং ৯০ দিনের সেশন শেষ করি। আর আজ আমি উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখছি।
এই ফাউন্ডেশনে প্রিয় স্যারের একটা সেশনে আছে
“পার্টনার শিপে বিজনেস করতে হলে আগে তার সাথে পরিচিত হয়ে তাকে জেনে বুঝে তারপর পার্টনাশিপে যাওয়া”। আমি ভুল পথে পা দিয়েছিলাম বলে আমি হেরে গেছি  প্রিয় স্যারের আরেকটা সেশনে আছে “হেরে গেলে  আবার উঠে দাঁড়াতে হবে”। এটাই আমার জীবনে টার্নিং পয়েন্ট ছিল। আমি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম আমিও পারব। আর সেখান থেকেই উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি। আমার প্রিয় ফাউন্ডেশনের ভাই ও আপুদের সহযোগিতায় আমি একটু একটু করে এগিয়ে যেতে সাহস পাচ্ছি।

✍️✍️ আমার উদ্যোক্তা জীবনের ভুল থেকে
ফাউন্ডেশনের আলোকে
কিছু শিক্ষা...
জীবনে অনেক ভুল হয় এবং সেই ভুল থেকে শুধরে আলোর রাস্তা সবাই পায় না, আমি পেয়েছি। নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনে যুক্ত হওয়ার পর আমার ভুল গুলো স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। স্যাররের প্রত্যেকটা সেশন নতুন কিছু শিক্ষা দেয়। একটা সেশনে আছে “একসাথে  চললে, একসাথে চা কফি খেলে কখনো বন্ধু হওয়া যায় না, বড় জুড় পরিচিত বলতে পারি”। আমার বান্ধবীও এমন ই ছিলো। আমি হয়তো ভাবতাম তাকে বান্ধবী, কিন্তু সময় মতো সে অপরিচিত হয়ে গেলো। নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনে এসে বুঝতে পারলাম বিজনেস বা উদ্যোক্তা হলো আলাদা একটা সত্তা। এখানে পার্টনার যারা হবেন তাদের কিছু রুলস রেগুলেশন আছে। তাদের লিগেল ডকুমেন্টের মাধ্যমে পার্টনার হতে হবে। পার্টনার হওয়ার জন্য একজন অন্যজনকে ভালো ভাবে বুঝতে এবং জানতে হবে। সর্বোপরি প্রতিষ্টানের নামে একটা জয়েন একাউন্ট থাকতে হবে। যেন ব্যাবসার মধ্যে একজন আরেকজনের টাকা মেরে না দিতে পারে। প্রত্যেকটা সেশন থেকে শিখেছি। সব গুলো তো উল্লেখ করা সম্ভব নয়। তবে নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন আমাকে নতুন করে স্বপ্ন দেখার অনুপ্রেরণা দিয়েছে। ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার উদ্যোক্তা হওয়ার ইচ্ছাটা আবার জাগিয়ে দিয়েছে। আমি পারবো, আমাকে দিয়ে হবে। এই কথাটা এখন বিশ্বাস করি প্রিয় স্যারের শিক্ষা ও আমাদের এই নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের কারণে।

✍️✍️ আমার স্বপ্ন, এখন স্বপ্ন হচ্ছে প্রিয় স্যারের শিক্ষাকে বুকে ধারণ করে একজন সফল উদ্যোক্তা হয়ে উঠা। প্রিয় স্যার বলেন
উদ্যোক্তা হওয়া হচ্ছে মাতৃত্বের স্বাদের মতন।

একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শুরু করার বিষয়টি পেটে একটি বাচ্চা ধারণ করার মতই। আমাদের মা ও বোনরা জানেন ১০ মাস (কখনো ৭ মাস) কি পরিমাণ কষ্ট, ত্যাগ, ঘুমহীন রাত, অজানা আতংক, মৃত্যুভয়, স্বাভাবিক জীবন যাত্রা জলাঞ্জলি দিয়ে সন্তান ধারনের সিদ্ধান্ত নেন!!! আমাদের উদ্যোগও ঠিক তেমনই। সন্তানের মা হয়েছি, এখন সফল উদ্যোক্তা হয়ে আবারও এই মাতৃত্বের স্বাদ নিতে চাই। সবাই আমার জন্য দোয়া ও  আশির্বাদ করবেন, আমি যেন একজন সফল উদ্যোক্তা হতে পারি।
আপনারা সবাই পাশে থাকবেন, আমার জন্য দোয়া ও আশীর্বাদ করবেন যেন আমাদের প্রিয় মেন্টরের শিক্ষাকে বুকে ধারণ করে জীবনের বাকী অংশটুকু চলতে পারি।

এতক্ষণ আমার জীবনের গল্প ধৈর্য্য ধরে পড়ার জন্য আপনাদের কাছে অনেক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সবাই আমার জন্য দোয়া ও আশীর্বাদ করবেন, আমি যেন সবকিছু ভূলে আমার বর্তমান উদ্যোক্তা জীবনে আপনাদেরকে সাথে নিয়ে  এগিয়ে যেতে পারি।


📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮৭৩
তারিখ ২১-০৯-২০২২ইং


আমার পরিচয়:
আমি সোনালী রায়
ব্যাচ নং-১৭
রেজিঃ ৯০০১২
জেলাঃ নেত্রকোনা
বর্তমান অবস্থানঃ সিলেট

আমার পেইজ লিংক https://www.facebook.com/profile.php?id=100082853126660

আমি কাজ করছি দুধের সন্দেশ, ব্লকের শাড়ি, থ্রি-পিছ, আমার সিগনেচার পণ্য। আরও আছে শাড়ি, থ্রি-পিছ ও অন্যান্য পণ্য নিয়ে।
আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া ও আশীর্বাদ করবেন আমি যেন ভালো ভাবে আপনাদের পণ্য সরবরাহ করে সেবা দিতে পারি।

ফরিদপুর জেলা টিম কর্তৃক আয়োজিত বৃক্ষরোপন কর্মসূচি -২০২৪

ইনশাআল্লাহ ফরিদপুর জেলার বাকি ৮টি উপজেলায় এই কর্মসূচি চলমান থাকবে। অনেক বেশি ধন্যবাদ Iqbal Bahar Zahid স্যার কে ॥

পর্দাশীল ঘরোয়া নারী- সফল উদ্যোক্তা

আমি রান্নাটা ভালো পারি, রান্নাটা নিয়েই পেজ খুলি অনলাইনে কাজ করি। প্রথম অর্ডার আসছিল পিৎজা ডেলিভারির। আলহামদুলিল্লাহ তারপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ।