See More Post

সর্বোপরি সবসময় তাদের পাশে থাকবার চেষ্টা করুন।

বিসমিল্লাহ রাহমানির রাহিম
   আসসালামু আলাইকুম"

সর্বপ্রথম আমি শুকরিয়া আদায় করছি মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি, যিনি আমাদেরকে এই সুন্দর পৃথিবীতে সকল প্রকার বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করে এখনো পর্যন্ত সুস্থ এবং নিরাপদ রেখেছেন আলহামদুলিল্লাহ !

শ্রদ্ধাও ভালোবাসার সাথে স্মরণ করতে চাই, আমার মমতাময়ী মা ও বাবা প্রতি, যাদের দোয়ায় আমি এখনো সুস্থ আছি।।তাদের জন্য আমি  সুন্দর পৃথিবীতে আলোর মুখ দেখেছি এবং মহান সৃষ্টিকর্তার সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে পারছি আলহামদুলিল্লাহ।

সেই সাথে শ্রদ্ধার নিয়ে স্মরণ করছি আমাদের সকলেরই প্রিয় মেন্টর ও শিক্ষক এবং তরুণ প্রজন্মের আইডল-আইকন, লক্ষ লক্ষ তরুণ উদ্যোক্তা তৈরির কারিগর যিনি স্বপ্ন হারা মানুষদের স্বপ্ন দেখান সবার প্রিয় মুখ মাননীয় Ikbal Bahar Zahid স্যার,, যার সুন্দর স্বপ্ন ও পরিকল্পনার মাধ্যমে আমরা মনমুগ্ধকর একটা প্ল্যাটফর্ম উপহার হিসেবে পেয়েছি।

আমার মমতাময়ী মা

নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশনে আজ আমার মায়ের গল্প সবার
সাথে শেয়ার করতে চাই।কারন নিজের গল্পের চেয়ে আমার মায়ের প্রতিটি কথা আমার পুরো অস্তিত্ব জুড়ে থাকে।হায়াতে যদি বেচে থাকি নিজের গল্প হয়তো বা সবার সাথে কখনো শেয়ার করবো আর সেদিনটি
হতে পারে আমার ঘুরে দাড়ানোর গল্পের সাথে মিশ্রিত।

আমার মা তার প্রতিটি কথা,ভালোবাসা,অনুভূতি,কস্টের জায়গা সবটাই
প্রতিটা মুহুর্তে এখন আমায় ভাবায়,কাঁদায়।কিভাবে হারিয়ে ফেললাম মাকে ?
কিছুই যে করা হয়নি মায়ের জন্য।কখনো জড়িয়ে ধরে বলাও হয়নি মাকে কতটা ভালোবাসি?
তাই আজ এই প্রিয় পরিবারে আমার মাকে নিয়ে কিছু বলতে চাই।

মা একটি ছোট শব্দ।যে শব্দে লুকিয়ে আছে পৃথিবীর সব সুখ,মায়া,ভালোবাসা।
মায়ের তুলনা যে শুধু মা নিজেই ।মা শব্দটি যেন একটি মধুর খনি।শুধু নদী কেন
সাগরের গভীরেও যাওয়া যায় কিন্তু মায়ের ভালোবাসার গভীরতা কখনো
পরিমাপ করা যায় না।মা যেন চাওয়া পাওয়ার একটা পুরো পৃথিবী।
মা শব্দটি ছোট হলেও এর বিশালতা আকাশের চেয়েও বড়।মা দশ মাশ
দশ দিন তিল তিল করে আমাদের গড়ে তুলতে সাহায্যে করেন।
আর সেই সাহায্যে চলতে থাকে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।“মা” শব্দটিতে যেন সারা পৃথিবীর সুখ রয়েছে।
আর তাইতো আজও একটু আঘাত পেলেই অজান্তেই বলে উঠি “মাগো”।

শিশুকাল থেকে এ পর্যন্ত শুধু মায়ের কাছে হেরেই গেলাম কখনো
জিততে পারিনি।মা আগে থেকেই সব কিছু বুঝে ফেলতো যেন কিভাবে।
আমার ২.৫ বছরের একটি ছেলে রয়েছে যাকে জন্মের পর থেকেই আমি মা বলে ডাকি
কিন্তু শত ডাকের পরও মনটা কখনো ভরে না আজও ভরেনি।তৃপ্তি পাইনা
মনে হয় কোথায় যেন একটা শূন্যতা রয়েই যাচ্ছে যা কখনো আর পূরন হবার নয়।

হতভাগ্য এক সন্তান আমি।কখনো মাকে জড়িয়ে ধরে বলতে পারিনি মাগো
তোমায় খুব ভালোবাসি,তোমায় ছাড়া এই পৃথিবী কখনো কল্পনাও করতে পারিনা।
যদিও বা কখনো রাগ করে বলতো আমি চলে গেলে বুঝবি
সাথে সাথেই বলতাম আমায় রেখে যাবে কোথায় সাথে করে নিয়ে যেও।আমার মা
আমার মা ছিলেন আমার নানা নানীর ৬ সন্তানের মাঝে প্রথম সন্তান।
আমার নানাজানের খুব আদরের ,তার চোখের মনি।যেদিন রাতে আমার নানাজান ইন্তেকাল করেন
সেই রাতে নাকি আমার মাকে সারারাত ডেকেছিলেন।কিন্তু তখন আমরা
ছিলাম ঢাকাতে আর নানাজান ছিলেন গ্রামের বাড়িতে তাই মা আর সেই ডাকে সারা দিতে পারেনি।

নানাজান তার চোখের মনিকে বনেদী ঘর দেখে মাত্র ১৩ বছর বয়সে
বিয়ে দিয়েছিলেন।আমার মা ছিলো ভালোবাসার খুব কাঙ্গাল একজন মানুষ।
অমারা নয় ভাইবোনের মাঝে আমি হলাম মায়ের সবার ছোট সন্তান
মায়েরই মতো ভালোবাসার কাঙ্গাল ,তার চোখের মনি।আমি যখন অনার্সে
পড়ি তখন প্রথম আমার মাকে ছেড়ে বড় আপার শ্বশুর বাড়ি যাই বেড়াতে।
তার আগ পর্যন্ত কখনো মায়ের স্পর্শ ছাড়া ঘুমাইনি।খুব কস্ট হয়েছিল তখন
আমার।বড় আপা খুব জোড় করেই নিয়ে গিয়েছিল
বলেছিল বিয়ের পর মাকে ছাড়া থাকতে হবে তো?মাকে ধরা ছাড়া ঘুমাতে
পারতাম না বলে আপারা মাকে রাগ করতো।মা তখনো বলতো থাক ছোট তো।

মাকে ছাড়া এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকবো ভাবতেও পারতাম না ।
স্বপ্নেও যদি দেখতাম মা নেই ঘুম ভেঙ্গে সেই কি কান্না
আর দোআ করতাম আল্লাহ আমার মাকে কখনো আমার থেকে নিয়ে যেওনা। আমি অনেক বেশি জেদি আর অভিমানী ছিলাম আর তা ছিল শুধু
আমার মায়ের কাছে।কিছু হলেই খাবার বন্ধ করে দিতাম
যা ছিল আমার মায়ের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা।সারা পৃথিবী দিতে রাজি
থাকতো মা শুধু আমায় একটু খাওয়ানোর জন্য ।আর কখনো যদি খুব রেগে
যেতাম তখনই মা তার বুকে টেনে নিতো কারন মা জানতো আমি একমাত্র শান্ত হবো মায়ের
বুকে গেলে।আজও সেই শান্তির জায়গাটা খুজে বেড়াই কিন্তু পাইনা।

আমার ছেলের জন্মের ৪৩ দিন আগে আমার মা আমায় ছেড়ে চলে যান।
এতবড় পৃথিবীতে আমায় একা করে দিয়ে।মায়ের খুব ইচ্ছে ছিল আমার সন্তানকে
দেখার।মা বলতো মাগো যখন তোমার কোল জুড়ে আল্লাহ একটা সন্তান দিবেন
তখন ওকে বুকে জড়িয়ে ধরো দেখবা মনটা শান্ত হবে।আজ আমার ছেলেকে
বুকে জড়িয়ে ধরে মনটা শান্ত হয় ঠিকই কিন্তু শান্তিটা যে মার সাথেই চলে গেছে।

১৮ নভেম্বর,২০১৯।রাত ১১ টায় বাবা কল দিয়ে জানালো মা স্ট্রোক করেছে।
ভাইয়া ভাবীরা মাকে নিয়ে বারডেম হসপিটাল থেকে হার্ট ফাউন্ডেশন এর উদ্দ্যেশ্যে তখন যাচ্ছে।
আমি তখন শ্বশুর বাড়ি,ছেলেটা ৮ মাসের গর্ভে।সে রাতে সারা পৃথিবীর
অন্ধকার বুঝি নেমেছিল আমার জীবনে।কেউ আমায় তখন ঘর থেকে
বের হতে দিচ্ছিল না।অনবরত কল করছিলাম ভাইয়া-
ভাবীদেরকে শুধু মায়ের একটু শব্দ শোনার জন্য ।কিন্তু সবাই তখন মাকে
নিয়ে ছোটাছুটি  করছিল।সে রাতে সারারাত কেঁদেছিলাম
আর বলেছিলাম আল্লাহ আমায় একা করে আমার মাকে নিয়ে যেও না।
শেষবারের মতো আমায় ভিক্ষা দিয়ে যাও।
কিন্তু মন থেকে বারবার একটাই সারা পাচ্ছিলাম আর বুঝি মাকে দেখতে পাবো না।
রাত যখন ২-৩ টা, মা তখন অচেতন অবস্থায় শুয়ে ছিলেন।ডক্টর বলেছিলো
রোগিকে কিছু একটা খাওয়াতে হবে ঔষধ খাওয়ানোর জন্য।ছোট ভাবী অনেক
চেষ্টা করেও যখন মায়ের মুখে কিছু দিতে পারছিলো না তখন নাকি মাকে
আমার নাম বলেছিলো যে মা ছোট আপা আসতেছে আপনার কাছে।
তখন আমার মা শেষবারের মতো মুখে একটু খাবার নিয়েছিলো।
ভোর ৫ টার দিকে সবাই হসপিটালে পৌছে যায় তখন মায়ের হার্টবিট
কোনভাবে চলছিল।কিন্তু শুধু আমিই পারিনি সেদিন মায়ের কাছে পৌছাতে।৯ টার দিকে সারা পৃথিবীর মায়া ,আমার মায়া ত্যাগ
করে চলে যায় আমার মা।সারা পৃথিবীর বুকে একা শূন্য করে রেখে যায় আমায়।
আজও যখন খুব বেশি অশান্ত হয়ে যাই মা স্বপ্নে এসেআমায় আদর করে,দোআ করে
শান্ত করে রেখে যান। কারন মা তো জানতো আমি অশান্ত টা শুধু
আমার মায়ের কাছেই যা পৃথিবীর আর কেউ দেখে না।

মা ছাড়া জীবন এককথায় শুষ্ক মরুভূমির মতো , জলহীন সমুদ্রের মতো ও বায়ুহীন প্রকৃতির মতন । মায়ের কোল যে কত বিশাল একটি আশ্রয় তা একজন যোগ্য সন্তান ছাড়া আর কেউ বোঝে না। আর সেই মা ‘কে ছাড়া যখন থাকতে হয় তখন এক মুহূর্তও হয়ে ওঠে দুর্বিষহ ; শ্বাসরুদ্ধকর।

সারমর্ম

প্রকৃতপক্ষে আমরা সন্তানেরা শুধু মা-বাবার কাছ থেকে শুধু নিয়েই যাই কখনো দেয়ার কথাগুলো আর ভেবে দেখা হয়না।এমনকি তাদের প্রতি ভালোবাসাটাও প্রকাশ করে বলা হয়ে ওঠে না যা শুনার জন্য তারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে। তাদের সর্বোচ্চ টা দিয়ে চেষ্টা করেন আমাদের ভালো রাখতে। কোনো কিছু বলার আগেই বুঝতে পারেন সবটা।কিন্তু সেই মা-বাবা যখন পৃথিবী থেকে বিদায় নেন তখন তাদের পাশে থাকাটা ও নসিব হয় না।বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে। তাই যাদের মা বাবা এখনো আপনাদের কাছে আছে তাদের কাছে বিশেষ অনুরোধ, মা বাবা কে কখনো চোখের আড়াল করবেন না।অনেক বেশি ভালোবাসুন তাদের। জড়িয়ে ধরে বলুন মা বাবা তোমাদের অনেক ভালোবাসি। তাদের চোখের ভাষা বোঝার চেষ্টা করুন। সর্বোপরি সবসময় তাদের পাশে থাকবার চেষ্টা করুন।

প্রিয় ভাইয়া ও আপুদের জন‍্য আমার ভালবাসা ও দোয়া রইল।আমার লিখার মাঝে কোন ভুলত্রুটি থাকলে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।এতসময় ধরে আমার মাকে নিয়ে লিখা  পড়ার জন‍্য, সকলকে আন্তরিক ধন‍্যবাদ জানাই।সবাই আমার জন‍্য দোয়া করবেন।মৃত‍্যু পর্যন্ত আপনাদের সাথে থেকে কাজ করে যেতে চাই,হতে চাই সফল উদ‍্যোক্তা।
সকলে ভালোবসে পাশে থাকবেন, পাশে রাখবেন।


📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮৭৭
তারিখ ২৮-০৯-২০২২ইং

 এস এস নিঝুম
জেলা : নারায়নগঞ্জ
রেজি: ৯০৪২৭
ব্যাচ:১৭

ফরিদপুর জেলা টিম কর্তৃক আয়োজিত বৃক্ষরোপন কর্মসূচি -২০২৪

ইনশাআল্লাহ ফরিদপুর জেলার বাকি ৮টি উপজেলায় এই কর্মসূচি চলমান থাকবে। অনেক বেশি ধন্যবাদ Iqbal Bahar Zahid স্যার কে ॥

পর্দাশীল ঘরোয়া নারী- সফল উদ্যোক্তা

আমি রান্নাটা ভালো পারি, রান্নাটা নিয়েই পেজ খুলি অনলাইনে কাজ করি। প্রথম অর্ডার আসছিল পিৎজা ডেলিভারির। আলহামদুলিল্লাহ তারপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ।