দুনিয়ার সব মানুষের সফলতা লাভ করতে চায়।কিন্তু সঠিক ভাবে তারা তাদের জীবনকে পরিচালনা করতে পারে না, পরিকল্পনাহীন জীবনে কখনো সফল হওয়া যায় না । সফল হওয়ার জন্য যা যা দরকার তা আমি আজ তুলে ধরতে চেষ্টা করব।
লক্ষ্যস্থির করা সাফল্য লাভের প্রথম ধাপ। লক্ষ হচ্ছে সাফল্যের রাস্তা সরূপ। আমরা বেশির ভাগ মানুষই জানি না যে, আমরা আসলে কী চাই। কেন চাই। বা কোন চাওয়া নিয়েও অনেক ক্ষেত্রে সন্তুষ্টও অর্জন করতে পারি না। আসলে চাওয়া পাওয়ার হিসাবটিতেই যদি গড়মিল করে ফেলি তাহলে সাফল্যের প্রথম সিঁড়িতেই হোচট খতে হবে। এ কারনেই নিজের লক্ষ স্থির করুন এবং মনেপ্রাণে সেটি ধারণ করুন।
কেননা লক্ষ্যই সাফল্যের সিঁড়িতে পৌঁছতে আপনাকে সহায়তা করবে। তাই আপনার লক্ষ্যকে মনের মাঝে প্রতিষ্ঠিত করুন।
স্বপ্ন ছাড়া মানুষ বাচতে পারে না। স্বপ্নই আমাদের বেচে থাকার অনুপ্রেরণার যোগান দেয়। মোট কথা স্বপ্নকে ঘিরেই আমাদের বেচে থাকা। সাফল্যে অর্জনের জন্য সপ্ন একটি কাঠামো তৈরী করে দেয়। তাই বিজ্ঞানী আইনস্টাইন বলেছেন, ‘জ্ঞানের চেয়ে কল্পনার জোর অনেক বেশি।
তাই স্বপ্নটাকে ধারন করতে হবে বুকের বাম পাশটায়। মনের আঙ্গিনায় স্বপ্নটির চিত্র স্পষ্ট করে তুলুন। অর্থাৎ আপনার লক্ষ্যকে স্বপ্নে পরিণত করুন। তবে শুধু স্বপ্ন দেখে বসে থাকলেই হবে না। কঠর পরিশ্রম করতে হবে এবং স্বপ্নটাকে বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলে যতো বাঁধাই আসুক না কেন, আপনি পৌঁছে যাবেন স্বপ্নলোকের সেই রাজপ্রাসাদে।
আমি বলব আত্মবিশ্বাসই হল সফলতার মূল মন্ত্র। আত্মবিশ্বাসের ঘাটতির কারনেই অনেকে সফলতার দ্বার প্রান্তের কাছাকাছি এসেও ব্যার্থতার তকমা গায়ে মাখে। নিজের আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে নিজেকে সেরা ভাবুন, নিজেকে বলুন আপনিই পারবেন এবং আপনাকে দিয়েই হবে। এই আত্মবিশ্বাসের জোর যে আপনাকে কোথায় পৌছে দেয় আপনার ধারনা করতে পারবেন না।
আমরা সবাই গ্রেটেস্ট বক্সার মোহাম্মদ আলি কে চিনি, তার একটি সাক্ষাতকারে তিনি বলছেন “I Am The Greatest” আমিই সেরা- এই ব্যাক্যটি আমরা যদি আমাদের মনে গেথে না ফেলি তাহলে আমাদের মনবল কখনোই চাঙ্গা হবে না। কারন কেউ যদি ভাবে, আমি পারবো না’ ব্যস! নিশ্চিতভাবে সে ব্যর্থ। সে চেষ্টা করে না বা চেষ্টা করার আগেই আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। তাই যদি মনে বিশ্বাস থাকে অটুট লক্ষ্য যতোই কঠিন হোক না কেন বিজয় নিশ্চিত।কাজেই বিশ্বাস ধরে রাখুন। নিজের মাঝে নিজেই
সফলতা অর্জনের জন্য চাই সুচিন্তিত ও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা। এই ধাপটি আপনার কাজের সফল হওয়ার পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কেননা আপনি যদি কোন পরিকল্পনা ছাড়াই কোন কাজে নেমে পড়েন তাহলে আপনার ব্যার্থতা আসবে এটা স্বাভাবিক কিন্তু অপর দিকে আপনি যে কাজটি করবেন তার জন্য আগে থেকেই চিন্তাভাবনা করে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহন করেন তাহলে নিঃসন্দেহেই আপনি সাফল্য লাভ করবেন।
এই সহজ সমীকরণটি মাথায় গেথে ফেলুন। এ ক্ষেত্রে আপনি যে কাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে সেই সেক্টরের অভিজ্ঞ মানুষের সাথে পরামর্শ করে ডিসিশন নিতে পারেন। তবে মনে রাখবেন আপনার অবস্থান ও আপনার কাঙিক্ষত গোলের অবস্থানের দূরত্বের মাঝে কিছু বাঁধা আসতে পারে। বাঁধাগুলোকে চিহ্নিত করুন। বাঁধাগুলো দূর করার উপায় বের করুন। আপনি যেটি হতে চান সেটি হওয়ার জন্য যা যা প্রয়োজন সেভাবে নিজেকে প্রস্তুত করুন। সাফল্য আসবেই।
নিজের কাজকে ছোট ভাববেন না। কাজকে ভালোবেসে দক্ষতার সাথে সেরে ফেলুন। আপনাকে কর্মতৎপর হতে হবে, তাছাড়া সাফল্য আপনার কাছে ধরা দেবে না। দক্ষতা বর্তমান কালে সফলতার অন্যতম নিয়ামক। দক্ষতা ও কর্মতৎপরতার মাঝে সামান্য পার্থক্য আছে। কর্মতৎপরতা হচ্ছে কাজটি সঠিকভাবে করে ফেলা, আর দক্ষতা হলো নিপুণভাবে কাজ করা। মোট কথা, সফল হতে চাইলে দুটোর’ই প্রয়োজন আছে। অর্থাৎ সফল হতে আপনাকে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজে তৎপর হতে হবে।
সময় হচ্ছে পৃথীবির সব থেকে মূল্যবান জিনিস। কেননা সময় একবার চলে গেলে কোন কিছুর বিনিময়ে আমরা সেই সময়কে ফিরিয়ে আনতে পারি না। তাই আমাদের সাফল্য লাভ করতে হলে সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। কোন ক্রমেই সময়ের অপব্যবহার করা যাবে না। সফল মানুষের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই তারা কখনোই সময়ের অপব্যবহার করে না। কিন্তু আমরা অনেক ক্ষেত্রে আজকের কাজ কালকের জন্য ফেলে রাখি। আমাদের টনক না নড়া পর্যন্ত এই কাজটি আমরা ফেলে রাখি। কিন্তু সময় তো আর আমাদের জন্য বসে থাকে না। সে বয়ে চলে তার আপন গতিতে। যার ফলে আমরা প্রতিনিয়ত পিছিয়ে পড়ি তাই সাফল্য নামক সুখ থেকে বঞ্চিত হই। তাই আমাদের সময়ের মূল্যায়ন করা শিখতে হবে। তাহলেই সফল মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া সম্ভব।
ইতিবাচক চিন্তা আমাদের ভালো কাজ করার উৎসাহ প্রদান করে। কোন কাজ ইতিবাচক মনভাব নিয়ে শুরু করলে কাজের শেষটাও ভালোভাবে সম্পন্ন হয়। তাই আপনার লক্ষ্যের প্রতি থাকা চাই আপনার ইতিবাচক মনোভাব। এই মনোভাব আপনাকে সাফল্যের দিকে টানবে। কেননা খেয়াল করে দেখবেন আপনি যদি কোন কাজকে ইতিবাচক চিন্তা আর আত্মবিশ্বাসের সহিত করেন তাহলে কাজের ফলাফল সব সময়ই আশানুরূপ হয়।
আপর দিকে যাদের কোন কাজে মন নেই বা নেতিবাচক মনোভাব আছে, তারা সফলতার সুখ দেখতে পান না। ইতিবাচক মনোভাব হচ্ছে আশা, সৃষ্টিশীলতা আর প্রাপ্তির সীমাহীন সম্ভাবনা। তাই যারা নেতিবাচক চিন্তা করেন, তারা তাদের মনোভাব পরিবর্তন করা আবশ্যক। সাফল্যের ক্ষেত্রে ইতিবাচক চিন্তা আপনাকে অনুপ্রেরণা জোগাবে। তাই কোন কাজকে পজেটিভ ভাবুন। একান্ত নিজের করে নিন, যদি দ্রুত পজেটিভ হ উনি।
সঠিক মানুষের সাথে মিশুন
বাংলায় একটি প্রবাদ বাক্য রয়েছে-
“সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস
অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ ”
সঠিক মানুষের সাথে চলাফেরা করলে অনেক জ্ঞান অর্জন করা যায়। এবং প্রত্যক্ষ ভাবে আমাদের সফল হতে প্রভাবিত করে। এখন প্রশ্ন হতে পারে সঠিক মানুষ কারা? যারা আপনার ভালো কামনা করে, আপনার সমন্ধে ইতিবাচক চিন্তা করে এবং যারা নিজ নিজ কর্ম ক্ষেত্রে সফল। তারাই আসলে সঠিক মানুষ।
এমন মানুষের সাথে মেলামেশা করুন যারা অযথা সময় নষ্ট করে না। যাদের নিজস্ব লক্ষ এবং উদ্দেশ্য আছে। যাদের ইতিবাচক মানষিকতা রয়েছে। সফল হতে গেলে আসলে সফল মানুষদের সাথেই থাকা শ্রেয়। কেননা নেতিবাচক মানুষ কখনই আপনার ভালো চাইবে না। বরং আপনাকে টেনে নিচে নামাবে।বেলা শেষে আপনার ক্ষতির কারন হয়ে দাঁড়াবে। তাই এদের থেকে দূরে থাকাই ভালো।
যদি সফল হতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই ধৈর্যশীল হতে হবে এবং কাজে মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখতে হবে। ধৈর্যশীলতা অবলম্বন করলে সাফল্য পরিশেষে আপনার দরজায় কড়া নাড়বেই। কারন এটি আপনাকে নতুন কাজের আগ্রহ জন্ম দিবে এবং তার সাথে প্রশান্তি বজায় থাকলে আপনি কাজটিকে আপনার এক ঘেঁয়ে মনে হবে না।
কাজ কররে গেলে অনেক ক্ষেত্রে ব্যর্থতা আসতেই পারে, তবে হাল ছাড়বেন না। ধৈর্য্য নিয়ে চেষ্টা করে যান সাথে মনোবল হারাবেন না। আমরা যদি মহাজ্ঞানীদের কথা ভাবি, নিউটনের কথাই ধরুন, যার গবেষনার সব কাগজ পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। নিউটন হাল ছাড়েনি। এডিসন অসংখ্য চেস্টার পর ইলেকট্রিক বাল্ব আবিস্কার করতে পেরেছিলেন।
ধৈর্য্যরে বলেই তা সম্ভব হয়েছে। তারা যদি অধৈর্য হয়ে হাল ছেড়ে দিত তাহলে কি আমরা এই মহান আবিষ্কার গুলো পেতাম? অবশ্যই না। তাই সাফল্যের দ্বার প্রান্তে পৌঁছানোর জন্য ধৈর্য ধরা আবশ্যক।
আবার মানসিক প্রশান্তি শুধু সাফল্য লাভের জন্যই নয় বরং সবক্ষেত্রেই প্রয়োজন। মানুষের মনে লুকিয়ে থাকা সুপ্ত শক্তিকে প্রকাশ করার জন্য প্রয়োজন হয় এ প্রশান্তির। মোট কথা, এটি হচ্ছে সাফল্যের অন্যতম পূর্বশর্ত। কাজেই মনকে প্রশান্ত রাখুন। মানসিক প্রশান্তি অর্জনের একটি অন্যতম উপায় হলো মেডিটেশন। তাই মেডিটেশন করুন দেখবেন মনকে কিছুটা হলেও শান্তি দিতে পারছেন।
মেধার সঠিক চর্চা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাময়িক সাফল্য অর্জন করে অনেকেই নিজেকে বড় মনে করে এবং মেধার সঠিক চর্চা করে না। ধরুন আপনি লক্ষ্যে পৌঁছে গেছেন। তাই বলে কি আপনি থেমে থাকবেন? আপনাকে মনে রাখতে হবে সাফল্যের কোন শেষ নেই। সাফল্যের অনেক সিঁড়ি রয়েছে। কেননা মানুষের মেধার কমতি নেই। মাত্র তো আপনি একটা সিঁড়ি পার করলেন আরো তো কত পথ চলা বাকি। তাই অহংকারকে প্রশ্রয় দিবেন না। নিজেত মেধায় শান দিন। তাহলেই তো পরিপূর্ন ভাবে সফল মানুষ হিসাবে গড়ে উঠতে পারবেন।
পরিশেষে একটা কথাই বলব। আপনার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যকে, আপনার স্বপ্নকে আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করে সুনিশ্চিত পরিকল্পনা, কর্মতৎপরতা ও দক্ষতা রেখে সময়ের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে নিজের মেধাকে মূল্যায়ন করে একজন সফল ও স্বার্থক হোন। কাজের মাঝে ধৈর্য রাখুন, মানসিক প্রশান্তি রাখুন, দেখবেন সাফল্য সুনিশ্চিত।
স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৪৭০
Date:- ২৪/০২/২০২১
শুভেচ্ছান্তে
মোহাম্মদ দুলাল
কান্ট্রি অ্যাম্বাসেডর সৌদি আরব মক্কা
সদস্য সাপ্তাহিক হাট মনিটরিং টিম
সদস্য ব্লাড ডোনার ম্যানেজমেন্ট
সদস্য রেজিস্ট্রেশন
নবম ব্যাচ
রেজিস্ট্রেশন---১১২৫৫
জেলা--শরীয়তপুর/টঙ্গী গাজীপুর
সৌদি আরব প্রবাসী
ফোন+৯৬৬-০৫৫৯৩৬৯৯২৪
https://www.facebook.com/uniquecoloursbd/
ইনশাআল্লাহ ফরিদপুর জেলার বাকি ৮টি উপজেলায় এই কর্মসূচি চলমান থাকবে। অনেক বেশি ধন্যবাদ Iqbal Bahar Zahid স্যার কে ॥
আমি রান্নাটা ভালো পারি, রান্নাটা নিয়েই পেজ খুলি অনলাইনে কাজ করি। প্রথম অর্ডার আসছিল পিৎজা ডেলিভারির। আলহামদুলিল্লাহ তারপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ।