🌼পরম করুণাময় আল্লাহর নামে শুরু করছি ★★
★প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা মোবারক এ আমার সশ্রদ্ধ সালাম ★
★🌼প্রিয় ভাই ও বোনেরা আসসালামু আলাইকুম ★
★★ 🌼কৃতজ্ঞতা জানাই আমার বাবা-মায়ের প্রতি যাদের কারণে আজ আমি এই পৃথিবীর আলো দেখতে পেরেছি।
★★🌼প্রতিটি মানুষের জীবনের গল্প থাকে তেমনি যা পরবর্তী প্রজন্মকে উৎসাহ প্রদান করবে।
★🌼জন্মঃ ঢাকার হলি ফ্যামিলিতে অক্টোবর ১১কোল আলো করে এলাম আমি। আমি আমার বাবা-মায়ের প্রথম সন্তান।
★🌼প্রথম ভালোবাসাঃ
আমার জীবনে প্রথম ভালোবাসা আমার বাবা। জীবনে প্রথম কোন পুরুষের ছোঁয়া আমার বাবার কাছ থেকে পাই।
★আমার জান্নাত আমার মা আমার মা আমার জান্নাত। আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া পৃথিবীতে এখনো আমার জান্নাত রেখেছেন। মায়ের স্নেহ ভালোবাসা আজ আমি শাহানুর সুমা। যতটুকু গুণে গুণান্বিত, তা আমি আমার মায়ের কাছ থেকে পাওয়া। ❝মা অনেক ভালোবাসি তোমায় ❞
★🌼আমার শৈশবঃ
বাবা-মায়ের প্রথম সন্তান হিসেবে আমার শৈশব ছিল খুবই আদরের ও আহ্লাদের। পরিবারের সকলের ছিলাম। বিশেষ করে শান্ত প্রকৃতির হওয়াতে সকলেরই খুব আদরের ছিলাম। আমি আমার পরিবারের সকল সদস্য দের খুবি প্রিয় একজন মানুষ।। কারন খুব শান্ত স্বভাবের থাকার জন্য সবার খুব প্রিয় ছিলাম। আর আমার বাবা একজন সংগীত প্রেমি।আমি যখন ক্লাস টু তে পরি তখন থেকে আমার বাবা,মা আমাকে গানের শিল্পী বানানোর জন্য বাসায় ২ টা স্যার রাখেন। এবং গানের কোচিং সেন্টার এ ও ক্লাস করান।আমার ক্লাস টু থেকে ক্লাস ৯ পযন্ত চলে গানের জগত নিয়ে।সকাল এবং বিকাল হলেই বাবা তবলা বাজাতো আর আমি গানের রেওয়াজ করতাম।এই ছিলো আমার ছোটো বেলাটা।
★🌼কৈশরঃ
কৈশোরে যখন পা রাখি তখন এলো সব বিপত্তি। আমার বয়স যখন ১৪ বছর। তখন আমার জীবনের বিশাল এক পরিবর্তন আসে। বাবা-মায়ের পছন্দে বলি হতে হয় বাল্য বিবাহের কাছে।আমার বয়সের দ্বিগুন বয়সী ব্যক্তির সাথে বিয়ে দেয়া হয়।শুরু হয় জীবন যুদ্ধ
বিয়ের কিছুদিন পরেই বুঝতে পারলাম স্বামী নামক ভদ্রলোকটি বেকার। ইতিমধ্যে আমার বড় সন্তান গর্ভে আসে। আমার বাবা-মায়ের উপরেই সবকিছু চলে। যেহেতু আমাদের ৫ তলা বাড়ি। আমার একটা ফ্ল্যাট ছিলো। তাই বিয়ের পর থেকে হাসবেন্ড নিয়ে আমার বাড়ি তেই থাকা পরতো বেশি।শ্বশুর বাড়ি তেও থাকা পরেছে তবে স্বামী বেকার হলে পৃথিবীর কাছে ভালো মানুষ হলেও একটি জায়গাতে স্বামীর অপারগতার জন্য আমাকেই বলি হতে হতো।তাই বেশি সময় আমার বাড়ি তেই থাকা পরতো।তুলোতে বড়ো হওয়া বাবা,মায়ের কাছে যেই মেয়েটা।আজপ্রতিটি মুহূর্তে বাবা,মায়ের কাছে কিছু নিয়ে চলতে নিজের বিবেগের কাছে বাদতো।তখন থেকেই আমি বিভিন্ন রকমের হস্ত শিল্পের কাজ শুরু করি।আমার আত্মীয় স্বজনরা আমাকে খুব উতসাহ দিতো।আমার প্রতিটি কাজ নিখুঁত হওয়াতে সব সময় সকলের প্রশংসা পেতাম।এতে আমি আরো উতসাহ পেতাম এবং নতুন নতুন ডিজাইন দিয়ে বহু কিছু তৈরি করতাম।যেহেতু হাসবেন্ড এর তেমন কোনে ইনকাম ছিলো না। তিনি প্রতিটি পদে পদে আমাকে মনে করিয়ে দিতেন আমার এবং আমার সন্তানের ও সংসারের সমস্ত দায়িত্ব আমাকেই নিতে হবে। পুতুল খেলার বয়সে শুরু হলো আমার জীবন নামক যুদ্ধ। এভাবেই কেটে যায় ২৬টি বছর। এর মাঝে কলজুড়ে আসে দ্বিতীয় সন্তান।
আমি ক্লান্ত আমি পরিশ্রান্ত।
★🌼বৈবাহিক জীবনঃ
ছাব্বিশ টি বছর বৈবাহিক জীবনে নানা ভাবে নির্যাতনে জর্জরিত। কখনো স্বামী প্রহার, কখনো না খেয়ে, কখনো বা অর্থের যোগানে ব্যর্থ হয়ে।তাই সব সময় আমি চেষ্টা করতাম আমাকে কিছু করতে হবে।তবে এতো টা বছর সন্তান দের দিকে তাকিয়ে ভেবেছি একটা সময়ে হয়তো সব ঠিক হয়ে যাবে। ভাগ্যের কি পরিহাস তা কি আর হয়। দিনে দিনে নির্যাতন চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায়। অবশেষে বাধ্য হয়ে বাবা মায়ের কাছে মুখ খুলতে হয়।
এরপরই ২৬ বছরের সংসারের সমাপ্তি ঘটে ২০২১সালে। এবার শুরু হল জীবনের আরেক নতুন অধ্যায়।
দুই সন্তান নিয়ে এখনো যুদ্ধ করে যাচ্ছি।
★★🌼উদ্যোক্তা আমিঃ
সংসার জীবনে আমার উদ্যোক্তা জীবন ছিল ঘর কেন্দ্রিক।ঘরে বসে টেইলারিং, হাতে বোনা ব্যাগ কুশি কাটার গহনা তৈরি হস্তশিল্পের কাজ করে সংসার চালাতাম।
২০১৮ সালে প্রথম দোকান নেই। যুদ্ধ এবার ঘরের চৌকাঠ পেরিয়ে বাহিরে এলো। এক বছর পর স্বামী তাও বন্ধ করে দিতে বাধ্য করে। এরপর ছয় সাত মাস পর নতুন করে আবার দোকান দেই। অর্নামেন্টস এবং কসমেটিক্সের। যুদ্ধ হয়ে যায় আরো কঠিন। ঘরে থাকা মেয়েটি জীবন যুদ্ধ শুরু করে একা একা এই বিশাল বাহিরের জগতে। লাভের কোন মুখ দেখি না শুধু লস প্রজেক্ট। দিশেহারা আমি কিছুই বুঝিনা। কি করব কিভাবে এগোবো দিশেহারা তারপরও হাল ছাড়িনি। মনোবল এগিয়ে যাই। এ সময় বন্ধু-বান্ধবরা হাত বাড়ায়। সাহস জোগায়। পাশে পাই প্রিয় কিছু মানুষ দের।আমাকে প্রতিটি মুহুর্তে সাহস দিয়ে জাচ্ছেন আমার প্রিয় ভাবি Fouji Ara Begum Sumi
ভাবি সব সময় বড়ো বোন,বান্ধবী র মতো ছায়া দিয়ে আমাকে সাহস দিয়েই যাচ্ছেন। তাই আমি ভাবির কাছে কৃতজ্ঞ।আমাকে এতোটা ভালোবাসার জন্য।
পরিবারের সহযোগিতা নিজের চেষ্টায় এখন আমার পথ চলাটা অনেকটাই শুগম। আমি আবার নতুন করে দোকানে বসে টেইলারিং ও হস্তশিল্পের কাজগুলো
শুরু করেছি।
★★🌼যখন খুব হতাশায় ডুবে ছিলাম তখন নরসিংদীর জেলার Anis Uzzaman ভাইয়া আমাকে নিজের বলার মতন একটি গল্প ফাউন্ডেশন এর খোঁজ দেন।যুক্ত হই প্রিয় প্লাটফর্মে। উজ্জীবিত হই নতুন করে পথ চলায়। এখান থেকে অনেক স্রধেয় ভাই ও বোন দের দেখা পাই যারা প্রতি নিয়ত আমাকে সাহস দিয়ে এগিয়ে যেতে সাহস দিচ্ছে। তাই কৃতজ্ঞ আমি এই সুন্দর ভালেবাসার প্লাটফর্ম কে।
★★🌼কৃতজ্ঞতা জানাই প্রিয় মেন্টর Iqbal Bahar Zahid স্যারকে। স্যারের প্রতিটি সেশন, সারের উপদেশগুলো আমার অন্তর্দৃষ্টি গুলো খুলে দেয়। নতুন করে শক্তি সঞ্চার করি। প্রিয় স্যার এর সাথে দেখা হয় ছবি তুলি। স্যার এর সুন্দর ব্যাবহার সত্যি আমাকে এই প্লাটফর্ম মুগ্ধ করে। অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় স্যার কে এতো সুন্দর এবং ভালোবাসার ও ভালো মানুষ এর একটি পরিবার আমাদের কে উপহার দেওয়ার জন্য।
🌼সকলের ভালোবাসায় সিক্ত আমি
🌼শাহানূর সুমা
ব্যাচ নং ১৭
রেজিস্ট্রেশন নং ৮৯০৪৩
জোন মতিঝিল
জেলা ঢাকা দক্ষিণ
থানা খিলগাঁও
🌼কাজ করছি টেইলারিং ও হস্তশিল্প নিয়ে। পাশাপাশি কসমেটিক ও অরনামেন্টস নিয়ে।
**এছাড়াও বেকারত্ব দূরীকরণে ও নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে টেইলারিং ও হস্তশিল্পের উপর প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি।
🌼আমার একটি শপ আছে। ঢাকা খিলগাঁও বাসাবো নন্দি পারাতে।
এবং আমার একটি পেইজ আছে।
স্বত্বাধিকারী🌼 Shahanur's
স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে -৯৫৪
তারিখ -৩০-০৭-২০২৩
ইনশাআল্লাহ ফরিদপুর জেলার বাকি ৮টি উপজেলায় এই কর্মসূচি চলমান থাকবে। অনেক বেশি ধন্যবাদ Iqbal Bahar Zahid স্যার কে ॥
আমি রান্নাটা ভালো পারি, রান্নাটা নিয়েই পেজ খুলি অনলাইনে কাজ করি। প্রথম অর্ডার আসছিল পিৎজা ডেলিভারির। আলহামদুলিল্লাহ তারপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ।