See More Post

তখন যদি নিজের বলার মতো গল্প ফাউন্ডেশনের প্লাটফর্ম থাকতো হয়তো তখনই সাহস পেতাম আমি কিছু করতে ।

সালাম - আদব - নমস্কার  - শ্রদ্ধা ।

শুরু করিতেছি মহান সৃষ্টিকর্তা পরম করুণাময়ের নামে।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এই শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার, লাখো  তরুণ তরুণীর আইডল প্রিয় মেন্টর,প্রিয় শিক্ষক  জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স‍্যারের প্রতি, যার অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে উঠেছে "নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের  মতো একটা সুবিশাল প্লাটফর্ম ।

একটি বিশেষ কথা যা এখানে না বললেই নয় আসলে  স্মৃতির ব্যাংকে জমা কতো কথা  জীবনের  ভালোলাগা মন্দ  লাগা  কখনো কারো সাথে শেয়ার করতে পারব।সেটা এক সময় আমার কাছে কল্পনা ছিল।যা আজ বাস্তবে রূপ নিতে চলেছে।আসলে কত কথাই তো আছে   কোনটা বলবো?  মনে দাগ কাটা  কয়েকটি  কথা বলবো। 

আজ আমি আপনাদের মাঝে আমার জীবনের ঘটে যাওয়া একটি গল্প শোনাবো।

সকলের কাছে অনুরোধ আমার এই গল্পটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।

                ❤️❤️বাবা ❤️❤️

গল্পের শুরুটা এমন  " বাবা "
বাবা নামের  শব্দ  আমার  পৃথিবী  ও সব------ সবকিছু।  ভাল মন্দ সব কিছু   বাবার কাছেই  বলি।  বাবা ও আমার   সাথে সব কিছু  আলোচনা করে সংসারের   বিষয়ে।এখনো এই ধারাবাহিকতা  রয়েছে ।
আমি  গ্রামের  মধ্যবিও পরিবারের  মেয়ে।  পড়া শোনা , গান করা  এটা নিয়ে  ভালোই  চলছে। ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা   বাজারে বাবার  কাপড় + গার্মেন্টেস + সোনার দোকানের ব্যাবসা  করেন।  পাইকারি  কাপড়  থ্রিপিস  সাপ্লাই  দেন আলফাডাঙ্গা  বাজারেই।    অভাব  কি তখনো বুঝিনি কি যিনিস।  চাওয়া মাএ পেয়েছি ।

হঠাৎ  একটা ঝড়ে সব  তছনছ হয়ে  গেলো । বাবার দোকানের ২ টা দোকান আগে স্বর্নের দোকান থেকে আগুন লাগে ।  সেদিন বাজারে আগুন লেগে যায়। তার মধ্যে  পুড়ে যায় আমাদের  দোকানের  সব।

আসলে ওই দিন  বাজার কমিটির  পক্ষে  ফুটবল খেলা থাকে  স্কুল  মাঠে।  তাই    বাজার  কমিটি  বলে  দোকান  সব বন্ধ  থাকবে।   তাই  বাইরে  থেকে তালা মারা ছিল ।  আর বাবা গিয়েছিল কি কাজে বোয়ালমারীতে। দোকান বাইরে  থেকে তালামারা।  একটা দোকানে আলকাতরার  ড্রাম পুড়ে ছড়িয়ে  পড়ে  আগুন। ৪০/৪৫ দোকান পুড়ে যায়। বাইরে  থেকে তালা মারা কিছু  বের করতে পারে নাই ।  আর বাবা সেদিন  এলাকায়  ছিল না।    সব পুড়ে  ছাই হয়ে যায়।  সারা বাজারে জল আর জল  তাও আগুন  নেভে না ।  অনেক  সময় লাগে আগুন  নেভাতে।    কাদা জলে মধ্যে  সেদিন    শুয়ে বাবার যে বুক ফাটা  কান্না  ------দেখেছি  আজও চোখে  ভাসে।  ব্যাংক লোন  নিয়ে  দোকানে সব মাল তোলা।  ১০/১২ দিনের মধ্যে  পুজো  ও ঈদ  তাই বাবা অনেক  কাপড় বিভিন্ন  আইটেম  তোলে। সব শেষ হয়ে যায়। সব পড়ে ছাই। সেশাই মেশিন  গুলো ছাই হয়ে যায়। কিছু থাকে না সব ছাই।  থানার পাশেই  দোকান তাই  দোকানের  কেস বক্সে টাকা থাকতো।  সব পুড়ে যায়।
অভাব নেমে আসে।
আসলে অনেকের দোকান  পুড়ে  যায় তাই  কেউ কাউকে  পরের দিন  সকালে বাকি দিতে অনিচ্ছা  প্রকাশ  করে।
আমাদের  সংসারে  অভাব  আর অভার । সমসার শেষ নাই ।
ঢাকা থেকে মালামাল  আনতো।  তারা আগের  টাকা পাবে।  টাকা না দিলে মালামাল  আর দেবে না।  বাড়ির  জমির কিছু বিক্রি করে  মাঠের জমি বিক্রি  করে তাও দেনা শোধ হয় না ব্যাংক  লোন । দেনা আর দেনা হয়ে যায়।  বিভিন্ন  সমিতি  এনজিও  থেকে লোন নেই ।  অল্প  কিছু  দিয়ে  দোকান শুরু করে  বাবা।

তখন  ভাবতাম  আমি  যদি  কিছু  করতে  পারতাম  বাবাকে  সাহায্য  করতাম।  কি করবো সেভেনে পড়ি কি করবো।  তখন  থেকেই  ভাবতাম আমি কোন  কাজ করবো।।

ক্লাস সেভেনে  পড়ি  বাড়িতে  এতো সমস্যা  চলে। টিফিনের  কথা আর বলতাম না।  বাড়ি থেকে কোনো খাবার নিতাম না।   টাকা ও থাকতো না ২ এমন হয়েছে । বাবা বাড়িতে  এসে শুনে বলে দোকান থেকে টাকা নিয়ে  যাবি প্রতি দিন ।  দোকানে  গিয়ে  দাঁড়ালে  দেখতাম সবাই  শুধু  টাকা নিতে আসে। অনেক  কষ্ট  হতো কিছু  বলতে পারতাম না।  আগে ১০ টাকা দিত। বাবা এখন ৫ টাকা দেয় টিফিনে।  স্কুলে যেতে যেতে  ভাবতাম। টাকা  না থাকলে কত কষ্ট  পেতে হয়।  টিফিন  খাবনা দুপুরে    ৫ টাকা জমাবো।   টিফিনের  সময় ২ গ্লাস জল খেতাম। মনে মনে  ভাবতাম জল খাই ছুটি  হলে তো বাড়ি গিয়ে  ভাত খাব।   এভাবে চলে ২ মাস। টিফিনের  টাকা দিয়ে  খাতা কলম   কিনতাম।   ৫০/৬০ টাকা জমতো কখনো।  বাড়িতে  কখনো বলি নি আমি  টিফিন   খাই না।   টিফিনের  সময়  গোল্লাছুট  খেলতাম ।   খিদে না লাগে।
কোনোদিন  বেশি   খিদে  লাগতো। ১/২ টাকা খেতাম ২ টা ছোট কলা ---১ টাকা।   ১ টাকার টোস্ট।  এমন হতো বাবার কাছে ১০ টাকাও থাকতো না। বার বার মনে হতো আমি  কাজ করবো বা চাকরি করে বাবার  পাশে থাকবো।

অনেক  সমস্যা  মধ্যে  পার হয় ২ বছর । ভাই  ষষ্ঠ  শ্রেনী তে পড়ে  ইংরেজি স্যারের কাছে  পড়তো তার বাড়িতে  গিয়ে ।  ১৫০ নিতো  সেই স্যার  মাসে।  মাস পার হয়ে ৭/৮ পার হয়েছে   ভাই  কে পড়ানোর মধ্যে  বলে  টাকা দিস না কেন ৭/৮ দিন পার হয়ে  গেছে ।  ভাই  বলে  স্যার  ২ দিন পরে দিয়ে দেবো। কিন্তু  স্যার  নাছড় বান্দা বলে   মাসের টাকা মাসে না দিতে পারলে  পড়তে আসবি না। সবার মধ্যে  বলে মানে সব ছেলে মেয়েদের মধ্যে  বলে।  ভাই  কাঁনতে কাঁনতে বাড়িতে  চলে  এসে বলে।   টাকা  ১৫০  সেই  সময় গিয়ে  দিয়ে  আসে।  তখন ভাবি আমি  শিক্ষক  হবো।  ফ্রী  পড়াবো।    সব সময়  মনে হতো কিছু  করতে হবে। আসলে কিছুই তখন করতে পারি  না
একটু একটু  সচ্ছলতা  আসতে থাকে আমাদের  সংসারে ।  বেশ ভালোই  চলতে থাকে আমাদের  সংসার । সব সময়  মাথায় থাকে আমার  কিছু  করতে হবে।
ভাই  আমার বুয়েটে  চান্স পাই।

তখন যদি  নিজের  বলার মতো গল্প ফাউন্ডেশনের প্লাটফর্ম  থাকতো হয়তো তখনই  সাহস পেতাম আমি  কিছু  করতে ।  

আমাদের দোকানে সব সময়  সেল বেশি  হতো  কারন। বাবার একটা সুনাম ছিল  এবং  সুনাম আছে । যে আমাদের  দোকানের  কাপড়  কিনলে কেউ  ঠকবে না। ভালো পন্য দেয়  সিমিত লাভ করে। এই কারনে সব সময় দোকানে  ঈশ্বরের  কৃপায়  ভালো সেল হয়।

এস এস সি পাশ করি কলেজে   পড়ি। এমন সময় বিয়ের প্রস্তাব আসে।  ছেলে সরকারি  ভালো চাকরি করে ঘর বর  সব ভালো তাই  পাএ হাত ছাড়া  করা যাবে না।   সবার মতামত বিয়ে  দাও পরে পড়াশোনা  করবে। বিয়ে  হয়ে যায় ।  বাবা আবার লোন করে বিয়ে দেয়।  কারন  বাবার একটা নাম ডাক আছে তাই  অনেক  লোক আয়োজন  করে   দাওয়াত  দিয়ে  খাওয়ানো বিয়ের  সব খরচ । বাবার চাপ হয়ে যায়। বিয়ে  দেওয়ার  কারন ছিল  ছেলে পক্ষ দেনা পাওনা  চাই  না।  আর ছেলে  ভালো চাকরি  করি।  তাই  বিয়ে দিয়ে দেয়। সংসার জীবন শুরু  হয়  বিয়ের পড়ে লেখা পড়া  কমপ্লিট করি।  সংসার  করে পড়াশোনা  করা অনেক  কঠিন  হয়ে যায়।  সে গল্প  আরেক দিন করবো।

  আমি  কিছু  হবো আমি কিছু করবো সব সময়  মাথায় ছিল ।  বিয়ে  হলো সংসার  জীবন পার হলো ২৩ বছর। 
মধ্যো বয়সে  এসে উদ্যক্তা  হতে চাই  সার্চ  দিলে   নিজের বলার মতো গল্প ফাউন্ডেশন  কিছু  ভিডিও  আসে। দেখে  ভলো লাগে সাহস পাই । ২০১৯ সাল থেকে ফলো করি স্যারের ভিডিও।  কয়েক বার  নিজে  চেষ্টা  করি  রেজিষ্ট্রেশন  করতে পারিনা।  হাল ছেড়ে  দেই রেজিষ্ট্রেশন করার।  ভিডিও  দেখতে থাকি। ১৪ ব্যাচে এসে রেজিষ্ট্রেশন  করতে পারি।   বাবাকে  দেখেছি সততার সাথে  কাজ করতে। আমি  ও সততা নিয়ে  কাজ করতে চাই ।আমি বিশ্বাস করি আমার পন্য শেরা পন্য। সততা আমার অলংকার।

"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৫৮৮
Date:- ০৪/০৮/২০২১

নিবেদিতা মল্লিক
ব্যাচ- ১৪
রেজিষ্ট্রেশন -  ৬৬০৯১
জেলা - যশোহর।

আমার  পরিবারের জন্য  সবাই দোয়া করবেন । ভালবেসে সবাই  আমার পাশে থাকবেন ।

ফরিদপুর জেলা টিম কর্তৃক আয়োজিত বৃক্ষরোপন কর্মসূচি -২০২৪

ইনশাআল্লাহ ফরিদপুর জেলার বাকি ৮টি উপজেলায় এই কর্মসূচি চলমান থাকবে। অনেক বেশি ধন্যবাদ Iqbal Bahar Zahid স্যার কে ॥

পর্দাশীল ঘরোয়া নারী- সফল উদ্যোক্তা

আমি রান্নাটা ভালো পারি, রান্নাটা নিয়েই পেজ খুলি অনলাইনে কাজ করি। প্রথম অর্ডার আসছিল পিৎজা ডেলিভারির। আলহামদুলিল্লাহ তারপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ।