See More Post

আমার ছোট থেকেই ইচ্ছে মাকে সুখ টা একদিন এনে দিব।


 নারী দিবস নিয়ে কিছু লিখতে গেলেই মায়ের মুখটা ভেসে ওঠে। আমার মা আমার ১৪ বছরের বড়। তার মানে হলো মায়ের বয়স যখন ১৪ তখন আমি আমার মায়ের কোলে। 

আমি দেখেছি এই উদ্যোমি সাহসী নারীকে। মাত্র চতুর্থ শ্রেণি  পযর্ন্ত পড়াশুনা তার। কিন্তু 22 বছর বয়সে অন্যায়কে প্রশ্চয় না দিয়ে 3 ছেলে মেয়েকে নিয়ে সংসার  থেকে বেড়িয়ে কত সংগ্রাম করে আমাদের মানুষ করেছে। জ্বব করেছে বিজনেস করেছে। আমি আমার মাকে খুব খুব খুব ভালোবাসি। আমার মা আমাদের কে কখনও অভাব বুঝতে দেয়নি। অনেক কস্ট করেছে সে,এখনো করছে। আমার ছোট থেকেই ইচ্ছে মাকে সুখ টা একদিন এনে দিব। আমি দখেছি সারাদিন ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরে আমাদের ঘুমিয়ে দিয়ে মা গভীর রাতে শুয়ে কেঁদেছে।কিন্তু মা কখনও বুঝেনি আমি সেটা দেখেছি। তখন থেকেই মনের মধ্যে একটা স্বপ্ন মাকে সুখে রাখা।  আমাকে বড় হতে হবে মায়ের চোখের পানি মুছে মুখে হাসি এনে দিতে হবে। কিন্তু মা আমাকে ভরসা করতে পারল না। 


মা একা একটা মহিলা বিজনেস করে এই নিয়ে সমাজে মানুষের কথার শেষ নাই।  এমন কি আমার শশুর বাড়ির লোক ও বাদ দিলনা। একদিন তো আমার শশুর বলেই বসল তোমার মা ওই কসমেটিকের দোকান করে এটা ভালো দেখায় না। অথচ আমার বিয়ের আগে তারা দেখে শুনেই আমাকে এনেছে তখন তাদের প্রবলেম ছিলনা। আমার মা মাথায় কাপড় ঠিক করে দেয়না। দোকানে কত পুরুষের সাথে কথা বলে আমার মা। আরও কত কত কত কথা।   আমার এত সুন্দর মা তার সব কিছু ত্যাগ করেছে আমাদের জন্য।সুখ, সখ  জিবনে কিছুই পাইনি সে। মানুষের কটু কথা ছাড়া।

তাই আমার মাকে একদিন বলি মা তুমি তোমার পছন্দ মতো জিবন সঙ্গীনি খুজে নাও।। মা আমার দিকে তাকিয়ে বলে তুই কি পাগলি?

জিবন টাতো শেষ আর কি দরকার  । তোরা সুখে থাকলেই আমি ভালো থাকব। 

আমি জিদ ধরে বললাম না মা অনেক হয়েছে এখন নিজের জন্য ভাবো।মা কিছুতেই রাজিনা। সাথে আমার ভাই বোন রাও। আমাকে বলতে লাগল আমার বিয়ে হয়েছে তাই আমি এমন সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছি। স্বার্থপর আমি 

। কিন্তু আমি কারো কথাই শুনিনি। মায়ের সাথে চাকরি করেছে এক আংকেলকে আমার সিদ্ধান্ত জানালাম। তিনি শুনে অনেক খুশি হলেন। 

আর তিনিই আমাকে সাহায্য করেছেন। ভাগ্য ক্রমে আমি একটা সুন্দর পরিবার পেয়ে গেলাম। যেখানে আমারি মতো এক মেয়ে তার বাবার জন্য সঙ্গীনি খুজছিল।


মায়ের বিদায় বেলা আমি কাছে ছিলাম না। মাকে কি করে বিদায় দেয়? আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছিল। 

আমার ভাই বোন রা অসহায় হয়ে পরেছিল। 

 আমি অনিশ্চয়তায় মাকে বিদায় দিয়েছিলাম। এটা জেনেও মাকে হয়তো আর আগের মতো পাবোনা। 

কিন্তু বিধাতা আমার মাকে পর করে দেয়নি। সব সময় আমার মাকে আমরা কাছে পেয়েছি। যখনই ডেকেছি সে ছুটে এসেছে আমাদের কাছে। 

 মায়ের বিয়ের পর অনেকেই অনেক কথা বলেছে। একদিন আমার কলেজের প্রিন্সিপাল আমাকে ডেকে বলেছে... তোমার মা শেষ বয়সে এসে এটা না করলেও পারত। ছোট মেয়েটার এখন বিয়ে হবে কি করে?

আমি শির দার সোজা করে খুব শক্ত করে বলেছিলাম স্যার আমার মাকে আমরা একজন জিবন সঙ্গীনি খুজে দিয়েছি। আমার মনে হয়না আমি ভুল করেছি। আমি যদি ভুল না করে থাকি তবে আল্লাহ আমাদের পাশে থাকবে। স্যার তখন মাথা নিচু করেছিল।


এভাবে অনেকের প্রশ্নের জবাব দিতে হয়েছে। কিন্তু তাতে কি আমি আমার মাকে একটা ঠিক ঠাক ঠিকানা দিতে পেরেছি। আর বোনের সুন্দর একটা বিয়েও হয়েছে। ভাই ও ডিপ্লোমা শেষ করে লেখা পড়ার পাশা পাশি মাল্টিন্যাশন্যাল কম্পানিতে জ্বব হয়েছে। 


এখন ভাই বোন সমাজ   সবাই বলে তখন যা হয়েছিল  ভালোই হয়েছিল।


স্যার নিজেদের নিয়ে কিছু লিখতে বলেছিলেন। কিন্তু যত বার লিখতে গিয়েছি ততবার মায়ের মুখটি ভেসে উঠেছে তাই মাকে নিয়ে লিখলাম। আমার কাছে মনে হয়েছে মায়ের মতো আমি এতো সাহসি না। 

আমার এমন মাকে পেয়ে আমরা গর্বিত।


সকলে আমার মায়ের জন্য অনেক দোয়া করবেন।


SOD No: 158

Date: 08.03.2020

হামিদা আক্তার মুন্নি

৭ম ব্যাচ 

জেলা: দিনাজপুর 

রেজিঃ16603

ফরিদপুর জেলা টিম কর্তৃক আয়োজিত বৃক্ষরোপন কর্মসূচি -২০২৪

ইনশাআল্লাহ ফরিদপুর জেলার বাকি ৮টি উপজেলায় এই কর্মসূচি চলমান থাকবে। অনেক বেশি ধন্যবাদ Iqbal Bahar Zahid স্যার কে ॥

পর্দাশীল ঘরোয়া নারী- সফল উদ্যোক্তা

আমি রান্নাটা ভালো পারি, রান্নাটা নিয়েই পেজ খুলি অনলাইনে কাজ করি। প্রথম অর্ডার আসছিল পিৎজা ডেলিভারির। আলহামদুলিল্লাহ তারপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ।